যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি

আগের সংবাদ

সংঘর্ষে চার জেলা রণক্ষেত্র : নারায়ণগঞ্জ মানিকগঞ্জ সিরাজগঞ্জ নেত্রকোনায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত দুই শতাধিক

পরের সংবাদ

ব্র্যাক শিক্ষার্থী সানজানার আত্মহত্যায় বাবা গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর দক্ষিণখানে ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সানজানা মোসাদ্দিকার (২১) আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা শাহীন আলমকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গতকাল বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত শনিবার দুপুরে দক্ষিণখান মোল্লারটেক এলাকার একটি ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই শিক্ষার্থী।
ওই রাতেই সানজানার মা উম্মে সালমা বাদী হয়ে শাহীন আলমের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সানজানার বাবাই তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছেন এমন অভিযোগ ছিল। এরপর থেকেই আমরা তাকে খুঁজছিলাম। কিন্তু তিনি ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে যান। আমরা গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে যাই। গতকাল দুপুরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে, সানজানার আত্মহত্যার পর উদ্ধার হওয়া সুইসাইডাল নোটের মাধ্যমে জানা গিয়েছিল বাবার হাতে তার নিয়মিত নির্যাতিত হওয়ার কথা। সেখানে ফারজানা লেখেন- ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবা দায়ী। একটা ঘরে পশুর সঙ্গে থাকা যায়। কিন্তু অমানুষের সঙ্গে না। একজন অত্যাচারী রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা।’
ঘটনার পর দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক মিয়া জানিয়েছিলেন, মেয়েটির বাবার গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা (রেন্ট এ কার) আছে। শ্বশুরবাড়ির সূত্রে দক্ষিণখানের ভবনটিতে পাওয়া ফ্ল্যাটেই তারা থাকতেন। কিছুদিন আগে তার দ্বিতীয় বিয়ের কথা প্রকাশ পেলে ফারজানার মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়। এরপরও তিনি মাঝে মাঝে ওই বাড়িতে যেতেন। মেয়ের লেখাপড়ার খরচও তিনি দিতেন না বলে অভিযোগ মায়ের। এ নিয়ে পরিবারে অশান্তি, ঝগড়াঝাটি লেগেই ছিল। দক্ষিণখান থানা পুলিশ

আরো জানিয়েছিল, ওই বাড়ি থেকে ছাত্রীর মনোরোগের চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্রও তারা উদ্ধার করেছেন। মার্চ মাসের প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসক মেয়েটিকে একা না রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রতিবেশী সুরাইয়া লতাও জানিয়েছেন নির্যাতনের ভয়ংকর তথ্য। মাসখানেক আগে সানজানা তার প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করার পর তারা গিয়ে দেখতে পান, তার গলায় বঁটি ধরে আছেন বাবা। আরেক প্রতিবেশী নাজমুন নাহার বলেন, শাহীন আলম আশপাশে প্রচার করেছেন, সানজানা তার সন্তান না। তার স্ত্রীর আগের ঘরের সন্তানসহ তাকে বিয়ে করেছেন, তবে ঘটনা যাই হোক, জেনেশুনেই উনি সব করেছেন। এভাবে মারামারি তো করতে পারেন না।
সানজানার মা উম্মে সালমা জানান, মাস কয়েক আগে শাহীনের আরো একটি বিয়ে করার তথ্য জানতে পারি। শাহীনের সেই স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। একদিকে বাবার অত্যাচার এবং দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনায় সানজানা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। কতদিন ধরে অত্যাচার চলেছে জানতে চাইলে সালমা বলেন, সানজানার বাবা আগে ড্রাইভার ছিল। ৫ বছর ধরে অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে। সালমার অভিযোগ, বাসার কাজের মেয়ের সঙ্গে জোরপূর্বক শাহীনের শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি জানার পর সেই মেয়েটিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়