যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি

আগের সংবাদ

সংঘর্ষে চার জেলা রণক্ষেত্র : নারায়ণগঞ্জ মানিকগঞ্জ সিরাজগঞ্জ নেত্রকোনায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত দুই শতাধিক

পরের সংবাদ

বিশ্ব মানচিত্র বদলে দেয়া রুশ নেতা গর্বাচেভের মৃত্যু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : রক্ত না ঝরিয়েই ঠাণ্ডা যুদ্ধকে ‘ঠাণ্ডা’ করার নায়ক, ঘর বাঁচাতে ‘ব্যর্থ’ ও ‘কলঙ্কিত’ সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ নেতা মিখাইল গর্বাচেভ ৯১ বছর বয়সে মস্কোর একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গর্বাচেভ মারা যান। মস্কোর নোভোদেভিচি সমাধিক্ষেত্রে স্ত্রী রাইসার পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।
এদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন গর্বাচেভের মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। আগামীকাল (আজ) তিনি তার পরিবার ও বন্ধুদের কাছে সমবেদনার একটি টেলিগ্রাম পাঠাবেন।
মিখাইল গর্বাচেভের মৃত্যুতে তার প্রতি সারা বিশ্ব থেকে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্ত্যোনিও গুতেরেস বলেছেন, তিনি ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছিলেন।
অনেকে বিংশ শতাব্দীতে মানব ইতিহাসে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙে টুকরো হওয়াকে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে থাকেন। আর গর্বাচেভ ছিলেন সেই ঘটনার মূল কারিগর। তিন দশক আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মাধ্যমে স্নায়ুযুদ্ধের অবসান আর যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিশ্বের একক কর্তৃত্ব চলে যাওয়াতে যে চরিত্রটি আলোচিত সেই চরিত্রের নাম মিখাইল গর্বাচেভ। এ জন্য তিনি পশ্চিমা বিশ্বের কাছে ব্যাপক সমাদৃত ছিলেন। পেয়েছেন নোবেল পুরস্কারও। মিখাইল গর্বাচেভ ১৯৩১ সালের ২ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। রাশিয়ার এক কৃষক পরিবারের সন্তান গর্বাচেভ সমাজতন্ত্রীদের কাছে ‘সোভিয়েতের গোরখোদক’ হিসেবে পরিচিত। দলের ভেতর এবং সরকারে তিনি ক্রমশই একা হতে থাকেন। এক পর্যায়ে ১৯৯১ সালে ক্ষণস্থায়ী এক অভ্যুত্থানে গৃহবন্দি হয় গর্বাচেভ ও তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন ও অন্য সংস্কারবাদীদের বাধার মুখে ওই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যায় এবং গর্বাচেভ ফের সোভিয়েটের প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৯১ সালের ২৫ ডিসেম্বর গর্বাচেভ সোভিয়েট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দেন। সেদিন একই সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নও আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়ে যায়। এরপর ১৯৯৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়িয়ে একবার রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন এ নেতা। কিন্তু ওই নির্বাচনে মাত্র ০.৫ শতাংশ ভোট পান তিনি।
গত দুই দশকের বেশির ভাগ সময় রাজনৈতিক ছায়াতলেই কাটিয়েছেন গর্বাচেভ। ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করলে এবং এ বছর ইউক্রেন আক্রমণের পরে উত্তেজনা আবারো স্নায়ুযুদ্ধের পর্যায়ে পৌঁছালে ক্রেমলিন- হোয়াইট হাউসের সম্পর্ক সংশোধনে বারবার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে জীবদ্দশাতেই নিজের বহু গুরুত্বপূর্ণ অর্জন ভøাদিমির পুতিনের হাতে বদলে যেতে দেখেছেন গর্বাচেভ।
গর্বাচেভের কেতাদুরস্ত পোশাক, খোলামেলা মনোভাব তাঁর পূর্বসূরিদের চেয়ে আলাদা ছিল। আর তাঁর স্ত্রী হিসেবে রাইসার আচরণ ছিল অনেকটা মার্কিন ফার্স্ট লেডির মতো।
গর্বাচেভের সময়ে দুটি রুশ শব্দ জনপ্রিয় হয়। তিনি বলতেন দেশের পেরেস্ত্রোয়িকা বা পুনর্গঠন প্রয়োজন। শাসনব্যবস্থার এই শিথিলতা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন মতবাদে বিশ্বাসীদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করেছিল। ১৯৮৬ সালের ডিসেম্বরে কাজাখস্তানে দাঙ্গা হয়। সেখান থেকেই সোভিয়েত ইউনিয়নের অস্থিতিশীলতা শুরু হয়।
অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) চুক্তি হয়। গর্বাচেভ সোভিয়েত বাহিনীতে একতরফা কাটছাঁটের ঘোষণা দেন। আফগানিস্তান থেকে সেনাও সরিয়ে নেওয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়