যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি

আগের সংবাদ

সংঘর্ষে চার জেলা রণক্ষেত্র : নারায়ণগঞ্জ মানিকগঞ্জ সিরাজগঞ্জ নেত্রকোনায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত দুই শতাধিক

পরের সংবাদ

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ জরুরি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশের বিশাল দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে থামাতে হবে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির নাম দিয়ে দেশের সব ধরনের পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাগলা ঘোড়াকে। জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের সঙ্গে সঙ্গে বাজারে বিভিন্ন দ্রব্যের মূল্যে বেড়েছে অধিক হারে। অস্বাভাবিকভাবে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার সমন্বয়ের অভাব এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই বাজারে দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতি বলে অনেকই মনে করছেন। তা না হলে সরকার ডিমের এবং মুরগির এমন লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি এত দ্রুত কমাতে পারলেও বাকি দ্রব্যগুলোর মূল্যবৃদ্ধি কেন থামাতে পারছে না- অনেকেই প্রশ্ন করেছেন।
সম্প্রতি সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়েছে, এতে করে দেশের পরিবহনগুলো আরো একটু কম দামে তাদের জ্বালানিগুলো কিনতে পারলেও জনগণ কিন্তু লাভবান হয়নি, কারণ নিয়ম অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য কমানোর সঙ্গে সঙ্গে গাড়িগুলোতে ভাড়া কমার কথা কিন্তু পরিবহন মালিকপক্ষ তা এখনো কমায়নি। তেলের মূল্য যৎসামান্য কমেছে বলে তা আদৌ কমাবে কিনা তা আমাদের বোধগম্য নয়, যায় ফলে মাঝখান থেকে সাধারণ জনগণকে আগের মতো বাড়তি গাড়ি ভাড়া দিতেই হচ্ছে, অথচ গাড়ির জ্বালানি কেনা হচ্ছে আগের চেয়ে আরো কম মূল্যে। সরকারের উচিত ছিল জ্বালানি তেলের মূল্য কমানোর সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া, তাহলে জনগণ লাভবান হতো। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিয়ে দেশের ব্যবসায়ীরা যে হারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রীর দাম বাড়িয়েছে তা কতটুকু যৌক্তিক সরকারকে অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে, তা না হলে এই ফাঁকে অসাধু ব্যবসায়ীরা জনগণের কাছ থেকে পণ্যের গলাকাটা দাম নিয়ে ফায়দা হাসিল করতে থাকবে।
বর্তমানে বাজারে চাল, ডাল, চিনি, ভোজ্যতেল, বিস্কুট, আটাসহ অনেক দ্রব্যের দাম দরিদ্র এবং খেটে খাওয়া মানুষের নাগালের বাইরে। এমনকি উক্ত দামে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও বাজার থেকে দ্রব্যগুলো ক্রয় করে খেতে হিমশিম খাচ্ছে, ফলে অনেকেই মনে করছে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিতে ডিম এবং মুরগির মাংসের মতো কোনো সিন্ডিকেট হয়তো কাজ করছে, যা সরকার তদারকি করছে না কিংবা সরকারের নজরে আসছে না। প্রকৃতপক্ষে হঠাৎ করে একটা ৫০ টাকার বিস্কুটের প্যাকেট যখন ৮০ টাকা হয়ে যায় তখন সন্দেহ হয় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে একটা পণ্যের ওপর এত টাকা বাড়ে কী করে। সে হিসাবে ৬০ টাকার চিনি ৮৫ টাকা, ৩৫ টাকার আটা ৫০ টাকা, চাল প্রতি বস্তার ওপর ৩০০-৪০০ টাকা বেশি। এভাবেই সব জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি জনসাধারণকে নিয়তই আর্থিকভাবে জর্জরিত করে তুলছে। মূলত দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য কমাতে বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সরকারকেই একটি যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করে দেয়া উচিত এবং এই দামে ব্যবসায়ীরা জনগণের কাছে পণ্যগুলো বিক্রি করছে কিনা তা সবসময় তদারকি করার মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থায় একটি সুফল আসতে পারে। এর বাইরে অযৌক্তিকভাবে মূল্যবৃদ্ধি দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। মূল কথা হচ্ছে, বর্তমানে বাজারে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে সরকারকে একটি কঠোর সিদ্ধান্তে আসতে হবে। যে কোনো ঠুনকো কারণ দেখিয়ে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ঘটনো অনেক সময় ব্যবসায়ীদের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন মনমানসিকতা থেকে ব্যবসায়ীদের ফেরাতে হবে। মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারলে কিংবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে দ্রব্য সামগ্রী বিক্রি না করলে অসাধু ব্যবসায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করব যথাযথ কর্তৃপক্ষ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির দোহাই দিয়ে দেশে বিভিন্ন দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন এবং জনগণের কল্যাণে অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

রতন কুমার তুরী
লেখক ও শিক্ষক, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়