দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি : কুমিল্লার দাউদকান্দিতে নিখোঁজের আট দিন পর এক কিশোরের খণ্ডিত ও গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের কলাকোপা গ্রামের ডোবা থেকে খণ্ডিত মরদেহের বিচ্ছিন্ন মাথা এবং কোমর থেকে পায়ের অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার করা মরদেহটি সাগর রহমান (১৮) নামের এক কিশোরের। সে বিক্রমপুরের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার আব্দুর রহমানের ছেলে। কিশোরের পরিবার কলাকোপার পাশের গ্রাম ল²ীপুরের সাইজুদ্দিনের বাড়িতে ৬ বছর ধরে ভাড়া বাসায় থাকেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাগর মোবাইল কেনার জন্য তার মায়ের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়। সেই টাকায় মোবাইল কিনে দেবে বলে গত ২৩ আগস্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাশের বাড়ির কবির মিয়ার ছেলে মাসুম, মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে জামির হোসেন ও মৃত মনু মিয়ার ছেলে ছবির হোসেন বাড়ি থেকে ডেকে মোটরসাইকেল দিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে সাগর রহমান আর বাড়ি ফিরে আসেনি। তিন দিন পর ২৬ আগস্ট সাগরের মা হাসনা বেগম দাউদকান্দি মডেল থানায় তিন জনের নামে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
ছেলেকে হারিয়ে বারবার বুক চাপড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা হাসনা বেগম বলেন, আমার একমাত্র বুকের ধনকে ৫ হাজার টাকার জন্য মাসুম, জামিল ও ছবির বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুন করেছে। আমি মানুষের বাড়িতে কাজ করি আর আমার স্বামী রিকশা চালান। ছেলেও মাঝেমধ্যে রিকশা চালাত। পুরনো মোবাইল কিনবে বলে কয়েকদিন ধরে ছেলে টাকা চাচ্ছিল। পরে পাঁচ হাজার টাকা জোগার করে দেই, সেই টাকাই আমার ছেলের জন্য কাল হলো। মাত্র পাঁচ হাজার টাকার জন্য যারা আমার ছেলেকে খুন করেছে তাদের বিচার চেয়ে বলে বারবার মূর্ছা যান হাসনা বেগম।
গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, আজ সকালে গলিত মরদেহের মাথা এবং শরীরের নি¤œাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও নিহতের স্বজনরা পরনের প্যান্ট, জুতা ও বেল্ট দেখে তাকে শনাক্ত করেছেন। তারপরও ময়নাতদন্ত ও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ডিএনএ পরীক্ষা করানোর জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর যারা তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়েছে তাদের মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।