ছাত্র অধিকার পরিষদ : গুমের শিকার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে

আগের সংবাদ

রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট

পরের সংবাদ

চা বাগানে কর্মবিরতির মধ্যে দুর্ঘটনা : মাটি সংগ্রহে গিয়ে টিলা ধসে প্রাণ গেল চার নারী শ্রমিকের

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২০, ২০২২ , ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, শ্রীমঙ্গল : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের লাখাইছড়া চা বাগানে টিলা ধসে চার চা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এক কিশোরী আহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জীবনমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মজুরির দাবিতে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতির মধ্যেই গতকাল এ ঘটনা ঘটল।
নিহত চার চা শ্রমিক হলেন রীনা ভৌমিজ (২০)। রীনার দুই জা পূনীমা ভৌমিজ (২৫), হীরা ভৌমিজ (৩০) ও পাশের বাড়ির রাধা মাহালী (৪৫)।
স্থানীয় কালিঘাট ইউপি চেয়ারম্যান প্রাণেশ গোয়ালা জানান, দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে চা বাগানের নারীরা লাল, সাদা বিভিন্ন রকমের মাটি সংগ্রহ করে ঘর ও উঠান লেপন করেন। চা বাগানে ধর্মঘট থাকায় বাগানে ছিল না কোনো কাজ। এই সুযোগে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে শ্রীমঙ্গলের লাখাইছড়া চা বাগানের জঙ্গী টিলার এই নারী চা শ্রমিকরা পার্শ্ববর্তী উড়িষা টিলার নিচ থেকে মাটি সংগ্রহে যান। মাটি কেটে নিতে নিতে ওই টিলার নিচের দিকে কিছু অংশ ভিতরের দিকে ঢুকে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই অংশ থেকে তারা মাটি সংগ্রহের সময় হঠাৎ উপর থেকে মাটি ধসে পড়ে। এতে চারজন মাটির নিচে পুরোপুরি চাপা পড়েন আর কোমর পর্যন্ত মাটি চাপা থাকে কিশোরী অঞ্জনা ভৌমিজ। এ সময় অঞ্জনা চিৎকার দিলে বাগানের লোকজন এগিয়ে যায় এবং মাটি চাপা থেকে সবাইকে উদ্ধার করে ৪ জনকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তবে অঞ্জনা এখন সুস্থ আছে।
বেঁচে যাওয়া কিশোরী অঞ্জনা ভৌমিজ জানায়, উঠান লেপার জন্য তারা ৫ জন মিলে সেখানে মাটি আনতে যায়। কিছু মাটি সংগ্রহ করার পর হঠাৎ টিলার উপর থেকে বড় এক চাকা মাটি ধসে পড়ে। তার সঙ্গে থাকা বাকি চারজন মাটির নিচে চাপা পড়ে যান। আর তার কোমর পর্যন্ত মাটির নিচে চাপা পড়ে।
এদিকে ঘটনার পর পরই স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, চা বাগান কর্তৃপক্ষ, শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে যান। এ ঘটনায় চা বাগানের পক্ষ থেকে চারটি পরিবারকে নগদ ১০ হাজার করে ৪০ হাজার টাকা দেয়া হয়। এছাড়া স্থানীয় সদস্য সদস্য উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ তাদের আরো ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির জানান, আইনি কার্যক্রম সম্পাদন করে তাদের পরিবারের কাছে মৃত দেহ পৌঁছে দেয়া হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, লাখাইছড়া চা বাগানে শতাধিক পরিবার টিলার উপরে বসবাস করছেন এর মধ্যে কিছু পরিবার অধিক ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। যে টিলা ধস হয়েছে সেই টিলায়ও বেশ কয়েকটি পরিবার বসবাস করে।
এ বিষয়ে সচেতনতার প্রয়োজন জানিয়ে সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ চা বাগান কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন টিলার উপর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসত গৃহ সরিয়ে এনে নিরাপদ স্থানে গৃহ নির্মাণ করে দিতে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়