সাংবাদিকদের মেরে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মামলা

আগের সংবাদ

সামাজিক অপরাধ বেড়েছে

পরের সংবাদ

পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল গুদাম : মেয়রের ঘোষণা বাস্তবায়িত হোক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে ৫০০ কেমিক্যাল কারখানা-গুদাম সরানো হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া রেস্টুরেন্ট ভবন পরিদর্শনে এলে তিনি এ ঘোষণা দেন। এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে মেয়রের ঘোষণা বাস্তবায়ন দেখতে চাই। বরিশাল হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট ভবনটি অবৈধ। এখানে কারখানা, গ্যাস, পানির লাইনের অনুমোদন ছিল না। গত ১৫ আগস্ট ওই ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ছয়জন প্রাণ হারিয়েছে। রাসায়নিক দাহ্য থেকে ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এ ঘটনার পর নতুন করে সংশ্লিষ্টরা নড়েচড়ে বসে। জানা যায়, এ এলাকায় অবৈধ ২ হাজার ৪০০-এর বেশি ভবন রয়েছে। অধিকাংশ ভবনে কেমিক্যাল কারখানা রয়েছে। এসব কারখানা থেকে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে যেসব সুপারিশ করেছিল, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ঢাকার রাসায়নিকের কারখানা আর গুদামগুলো সরিয়ে নেয়া। ২০১০ সালের ১৫ জুন ওই কমিটির প্রতিবেদনে যে ১৭টি সুপারিশ করা হয়েছিল কিছু কিছু বাস্তবায়ন হলেও আসল কাজটিই করা সম্ভব হয়নি গত ১১ বছরে। ঢাকাবাসীর এখন একটা প্রশ্ন, আর কত মানুষ মারা গেলে পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন সরবে? ২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ মানুষের প্রাণহানির জন্য কেমিক্যালের গুদামগুলোকে দায়ী করা হয়। এছাড়া ২০১৯ সালে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ৭০ জন নিহত হন। কেমিক্যালের গোডাউন, প্লাস্টিক দ্রব্যসহ দাহ্য পদার্থের বিশাল ভাণ্ডার হয়ে রয়েছে পুরান ঢাকা। বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরেই এলাকাটিকে বোমাসদৃশ হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছেন। আমরা জানি, রাসায়নিক পদার্থ অত্যন্ত দাহ্য। তা আগুনের সংস্পর্শে এলে কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, নিমতলী ও চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডে সে অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে। আমরা মনে করি, আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যাল কারখানা ও গোডাউনগুলো স্থানান্তরের কোনো বিকল্প নেই। ২০১০ সালের ১৫ জুন কমিটি সুপারিশে উঠে এসেছিল এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, এসিড নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালার যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার তথ্য। কীভাবে অনুমোদন ছাড়াই বিপজ্জনক দাহ্য পদার্থ আমদানি, উৎপাদন, মজুত, পরিবহন ও বিক্রি হচ্ছে সেই বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। এরপর ঝুঁকিপূর্ণ এসব গুদাম সরাতে তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় এ উদ্যোগ থেমে যায়। ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের (সংশোধিত ২০১০) ৬ ধারায় অবৈধভাবে গুদামজাত, বাজারজাতকরণের সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান আছে। অথচ আইনের তোয়াক্কা না করে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন গুদামে রাসায়নিকসহ দ্রব্য সংরক্ষণ করেন। এটা দেখভাল করার দায়িত্ব কার? স্থায়ী সমাধান একটাই- কেমিক্যালের কারখানা স্থানান্তর করা। কেরানীগঞ্জে কেমিক্যাল পল্লীর দ্রুত কাজ শেষ করে রাসায়নিক পদার্থের সব কারখানা স্থানান্তরের উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে এখনই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়