গুলিস্তান : ভবনের ক্রেন থেকে রড পড়ে আহত ৫ পথচারী

আগের সংবাদ

আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সমাবেশে নেতাদের ঘোষণা : খেলা হবে রাজপথে

পরের সংবাদ

স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় জাহিদ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি : স্ত্রী-সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মেলান্দহের জাহিদ ইসলাম। তার বুকফাটা আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে উপজেলার আগপয়লা ও আশপাশের বাতাস। আত্মীয়স্বজন ও সহকর্মীদের কোনো সান্ত¡নাই থামাতে পারছে না তাকে।
‘কেমন করে মেনে নেব! দুই দিন আগেও স্ত্রী এবং দুই সন্তানসহ চার সদস্যের পরিবার ছিল আমার। অল্প সময়ের মধ্যেই কী হলো! বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বলছিলেন স্ত্রী ও সন্তান হারানো জাহিদ ইসলাম। কাঁদতে কাঁদতে বার বার অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। জ্ঞান ফিরলেই জাকারিয়া ও জান্নাতুলের নাম ধরে চিৎকার দিয়ে আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন।
গত বৃহস্পতিবার ভাগ্নির বিয়েতে স্ত্রী ঝরনা (২৮), ছেলে জাকারিয়া (৩) ও মেয়ে জান্নাতুলকে (৬) নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন জাহিদ ইসলাম। গত শনিবার রিয়া মনির বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে জাহিদ ইসলাম দুই সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে মেলান্দহে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। গত সোমবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় জাহিদের কাছে মোবাইলে ফোন আসে। জানতে পারেন রাজধানীর উত্তরায় বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন উড়াল সড়কের গার্ডারের চাপায় দুই সন্তান ও স্ত্রী মারা গেছেন। নির্মম ওই দুর্ঘটনা একসঙ্গে কেড়ে নিয়েছে জাহিদের স্ত্রী ও আদুরে দুই সন্তানকে। জাহিদ এখন কেবলই একা। কদিন আগেও স্ত্রী সন্তানদের প্রাণচাঞ্চলে মুখরিত ছিল যে বাড়ির আঙিনা, সেই ভিটেমাটিতে চলছে শোকের মাতম। নিহত ঝরনা, জাকারিয়া ও জান্নাতুলের বাড়ি মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে আগপয়লা এলাকায় এবং ফাহিমার বাড়ি ইসলামপুরের উপজেলার ঢেংগারগড় এলাকায়। ঝর্না বেগমের স্বজন হাসনা বেগম বলেন, গত সোমবার দুপুরে মারা গেছে, অথচ এখনও আমরা লাশ পাইনি।
আমরা দ্রুত লাশগুলো চাই। তাদের দ্রুত দাফন করতে চাই।
আরেক স্বজন কণিকা বেগম বলেন, কোনো দিন কল্পনা করিনি, আমাদের আদরের ধন এভাবে মারা যাবে। এখনও আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না।
ঘটনাটি তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন শোকাহত স্বজনরা।
ঝর্নার স্বজন আব্বাস মিয়া বলেন, আমরা ঘটনার তদন্ত চাই। সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার চাই। কয়েকজনের গাফিলতির জন্য এমন ঘটনা ঘটেছে।
গত সোমবার বিকালে রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ফ্লাইওভারের ভায়াডাক্ট ছিটকে প্রাইভেট কারে পড়ে দুই শিশুসহ পাঁচ আরোহী নিহত হন। দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
তারা হলেন ২৬ বছর বয়সী হৃদয় ও ২১ বছর বয়সী রিয়ামনি, যাদের বিয়ে হয়েছে গত শনিবার। সোমবার ছিল বউভাত। ছেলের বাড়ি রাজধানীর কাওলায়। বউভাত শেষে মেয়ের বাড়ি আশুলিয়ায় যাচ্ছিলেন তারা। ছেলের বাবা রুবেল গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় রুবেল ছাড়াও যারা মারা গেছেন তারা হলেন কনের মা ফাহিমা বেগম, তার বোন ঝর্না বেগম, ৬ বছর বয়সী জান্নাত ও দুই বছর বয়সী জাকারিয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়