গুলিস্তান : ভবনের ক্রেন থেকে রড পড়ে আহত ৫ পথচারী

আগের সংবাদ

আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সমাবেশে নেতাদের ঘোষণা : খেলা হবে রাজপথে

পরের সংবাদ

প্রাইভেট কারে গার্ডার : দায়ীদের কোনোভাবেই ছাড় নয়

প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গত সোমবার রাজধানীর উত্তরায় একটি ব্যক্তিগত গাড়ির ওপর হঠাৎ আছড়ে পড়ল কংক্রিটের বিশাল এক গার্ডার। নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন নিহত হন। বেঁচে যান এক নবদম্পতি। ঘটনাটি মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক। পুলিশ বলছে, বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলার সময় ক্রেন দিয়ে একটি গার্ডার ওপরে ওঠানো হচ্ছিল। ক্রেন উল্টে সেটি প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে। গার্ডার পড়ে প্রাইভেট কারটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। ওই সময় রাস্তার আশপাশে স্বাভাবিক চলাফেরা হচ্ছে। যানবাহন চলছে। সড়ক রক্ষিত না করে এত বড় গার্ডার ওঠানামা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে প্রমাণ করে দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলার কারণেই এমন নির্মম মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এ প্রাণগুলোর কে নেবে দায়ভার? ১০ বছর আগে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ঘটেছিল প্রথম গার্ডার দুর্ঘটনা। ২০২১ সালের ১৪ মার্চ ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের একটি গার্ডার লঞ্চার ভেঙে তিন চীনা কর্মীসহ ৬ জন আহত হন। ১৫ জুলাই গাজীপুরে একই কোম্পানি বিআরটি প্রকল্পের ‘লঞ্চিং গার্ডার’ চাপায় এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। ওই দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক ও একজন পথচারী আহত হয়েছিলেন। ২০১৭ সালের ১২ মার্চ রাতে ঢাকার মালিবাগ রেলগেট এলাকায় নির্মাণাধীন মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের ৩৬ মিটার দীর্ঘ গার্ডার ভেঙে পড়ে। রেললাইনের ওপর ওই ঘটনায় একজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এরপরও তারা সচেতন হয়নি। এ ঘটনাগুলোকে দুর্ঘটনা বলা যায় না। এটা হত্যাকাণ্ড। কোম্পানি একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে আসছে। জবাবদিহিতা এবং দায়বদ্ধতার অভাবই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। উত্তরায় পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনায় চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশনের (সিজিজিসি) বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মামলা হয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্না আক্তারের ভাই আফরান মণ্ডল বাবু। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্রেন চালকও রয়েছেন। ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে যেতেই পারে, এটা একটা দুর্ঘটনা। কিন্তু এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানি যেন না ঘটে, সেই প্রস্তুতি গ্রহণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে নজরদারির যথেষ্ট অবহেলা ছিল বিধায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ক্রেনটি একদিকে হেলে গিয়েছিল, এক্ষেত্রে যিনি এই ক্রেনটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন, তার অভিজ্ঞতা কতটুকু এবং তার যথাযথ লাইসেন্স আছে কিনা, সেই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা উচিত। বাস র?্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের কাজ চলছে রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত একটি সড়কের ওপর। সড়ক রক্ষিত না করে কীভাবে তারা কাজ করছে, সেটাই প্রশ্ন উঠছে। উপরোক্ত ঘটনাগুলো থেকে বোঝা যায় প্রকল্পে অব্যবস্থাপনা চিত্র। এখনই সরকার উদ্যোগী না হলে সামনে আরো এমন মর্মান্তিক দৃশ্য দেখতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়