বুয়েটে ছাত্রলীগের ব্যানারে সভা, বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের

আগের সংবাদ

উত্তরায় গার্ডার চাপায় নিহত ৫

পরের সংবাদ

শোকাবহ আগস্ট : টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে মানুষের ঢল

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : শোকের মাস আগস্টে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে মানুষের ঢল নেমেছে। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোয় বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে আসছেন সবাই। তারা সমাধিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করছেন দর্শনার্থীরা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হচ্ছে এবার। পদ্মা সেতু চালুর কারণে যাতায়াত সহজ হওয়ায় প্রতিদিনই ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগের মানুষ টুঙ্গিপাড়ায় আসছেন। এছাড়া বরিশাল, খুলনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
গোপালগঞ্জের কবি রবীন্দ্রনাথ অধিকারী এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার যত দূর মনে পড়ে ১৯৫৪ সালে বঙ্গবন্ধু আমাদের এলাকা থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠনের পর তিনি হয়েছিলেন মন্ত্রী। মন্ত্রী হওয়ার পর তার লক্ষ্য ছিল এলাকার জনগণের উন্নতি সাধন করা। তিনি আমাদের কোটালীপাড়া এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। বিভিন্ন এলাকার খাল খনন করেছেন। বিশেষ করে রামশিলের খাল, বাবুর খাল খননসহ রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেছিলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মূল লক্ষ্য ছিল সোনার বাংলা গড়া। অর্থনীতির মুক্তি সাধন করা। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বলেছিলেন এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। তারপরে বলেছিলেন, আমরা ’৭১-এ স্বাধীনতা পেয়েছি, কিন্তু অর্থনৈতিক মুক্তিটা পাইনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, জাতির পিতাকে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা নওয়াব আলী বলেন, শোকের মাসের প্রথম দিন থেকেই মন্ত্রী, এমপি, সচিব, পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী সংগঠন এবং বিভিন্ন ব্যক্তি টুঙ্গিপাড়া আসছেন। প্রতিদিন গড়ে ১০০ সংগঠন এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসছে। ফুলে ফুলে ছেয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালুর কারণে এ বছর শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে মানুষের সমাগম বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শোকার্ত মানুষের অশ্রæসিক্ত শ্রদ্ধায় এখানে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা শেখ সায়েরা খাতুন। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের প্রিয় খোকা। ছোটবেলা থেকেই তিনি শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তিনি নিজেকে নিয়ে কখনো চিন্তা করেননি।
মানুষের অধিকার আদায়ে সারা জীবন লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। এজন্য তাকে জেল, জুলুম, হুলিয়া ও শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আপসহীন খোকা সবার প্রিয় মুজিব ভাই থেকে বঙ্গবন্ধু হয়েছেন; বঙ্গবন্ধু থেকে হয়েছেন জাতির পিতা।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে প্রত্যন্ত গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায় তাকে কবর দিয়েছিল। তারা ভেবেছিল, এ নিভৃতপল্লীতে কেউ বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করতে আসবে না। তাদের সেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছেন। এ সমাধিসৌধ টুঙ্গিপাড়াকে নব আলোকে উদ্ভাসিত করেছে। বঙ্গবন্ধুর মহিমায় টুঙ্গিপাড়া জেগেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়