বুয়েটে ছাত্রলীগের ব্যানারে সভা, বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের

আগের সংবাদ

উত্তরায় গার্ডার চাপায় নিহত ৫

পরের সংবাদ

কলেজছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নাটোর ও গুরুদাসপুর প্রতিনিধি : নাটোরে কলেজছাত্রকে বিয়ে করে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়া শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪৫) মরদেহ তার শোয়ার ঘর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নাটোর থানার ওসি মো. নাছিম আহমেদ জানান, গতকাল রবিবার ভোরে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকার হাজী নান্নু মোল্লা ম্যানশন ভবনের চারতলার ভাড়া বাসা থেকে প্রতিবেশীরা খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তার কলেজছাত্র স্বামী ২৩ বছর বয়সী মামুন হোসেনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর ডিগ্রি কলেজে দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন খায়রুন নাহার। তিনি গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। ফেসবুকে প্রেম করে কলেজছাত্র মামুনকে বিয়ে করার পর ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন তারা।
নাটোর থানার ওসি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে খায়রুন নাহার বাসার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তার গলায় দাগ রয়েছে। তার স্বামী মামুন হোসেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রতিবেশী মো. রতন, সুজন আলীসহ বেশ কয়েকজন জানান, গতকাল রবিবার ভোরে মামুন ভবনের অন্য বাসিন্দাদের জানান যে তার স্ত্রী সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন। প্রতিবেশীরা তার বাসায় গিয়ে খায়রুন নাহারের মরদেহ মেঝেতে শোয়া অবস্থায় দেখতে পায়। তাদের সন্দেহ হওয়ায় তারা মামুনকে বাসার মধ্যে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে খায়রুনের লাশ উদ্ধার করে এবং মামুনকে থানায় নিয়ে যায়। স্বামী মামুন হোসেন একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

দুই ছেলে সন্তানের মা খায়রুন নাহারের ডিভোর্স হয়েছিল আগের স্বামীর সঙ্গে। পরে ছয় মাসের প্রেমের পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে মামুনকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের ৬ মাস পর গত জুলাই মাসে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে বেশ আলোচনা-সমালোচনার শিকার হন খায়রুন।
নিহত শিক্ষিকার পরিবার ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, খায়রুন নাহার ব্যাংক ও এনজিও থেকে প্রচুর টাকা ঋণ নিয়েছেন। কলেজছাত্র স্বামী মামুন মাঝে মধ্যেই টাকার জন্য তাকে চাপ দিতো। মামুন নিয়মিত মাদক সেবন করতো। চাঁচকৈড় সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান রাসেল জানান, শুধুমাত্র তার শাখাতেই খায়রুন নাহারের নামে ১৮ লাখ টাকা ঋণ নেয়া আছে। ঋণের মাত্র কয়েকটি কিস্তি তিনি পরিশোধ করেছেন।
খুবজীপুর মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সাইদ বলেন, খায়রুন নাহারের আত্মহত্যার খবর পেয়ে আমরা মর্মাহত। তাকে নিয়ে সমাজের মানুষ নানা মন্তব্য করেছেন। এটি হত্যা না আত্মহত্যা- এ প্রশ্ন নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহাকে করলে তিনি বলেন, ছাত্র-শিক্ষিকার অসম প্রেম ও বিয়ের ঘটনায় বিভিন্ন নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন, সামাজিক ও পারিবারিক ভর্ৎসনার কারণেই এই কলেজ শিক্ষিকা আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে হচ্ছে। এ ঘটনায় সিআইডির স্পেশাল টিম তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের ফলাফলের উপর নির্ভর করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওসি নাছিম বলেন, ওই শিক্ষিকার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এরই মধ্যে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়