ঢাবি সাংস্কৃতিক : সংসদের আয়োজন চিঠি লেখা যাবে ‘প্রিয় বঙ্গবন্ধু’কে

আগের সংবাদ

নান্দনিক বঙ্গবন্ধু

পরের সংবাদ

স্বাধীনতা-উত্তর প্রাথমিক শিক্ষায় বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়া। তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার জন্য প্রয়োজন সোনার মানুষ। তাই সোনার মানুষ গড়ার জন্য, নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করার জন্য তিনি শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছিলেন অনেক বেশি। তিনি অনুভব করতে পেরেছিলেন দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ‘শিক্ষা’- বিশেষ করে ‘প্রাথমিক শিক্ষা’। প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় শিক্ষার ভিত মজবুত করা সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বক্তৃতা, চিঠিপত্র আর তাঁর লেখা বই অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা থেকেই প্রমাণ মেলে শিক্ষার প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগের বিষয়টি।
শিক্ষার প্রতি বঙ্গবন্ধুর দরদ শৈশব থেকে। অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থে আমরা শিক্ষার প্রতি বঙ্গবন্ধুর অনুরাগের অসংখ্য দৃষ্টান্ত খুঁজে পাই। গোপালগঞ্জ শহরের স্কুলজীবন থেকেই তিনি নিজের পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষা-সহায়ক হিসেবে কাজ করেছেন। গরিব সহপাঠীদের নিজের পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষাসামগ্রী বিলিয়ে দিতেন। তাঁর গৃহশিক্ষক বঞ্চিত ও অভাবগ্রস্ত শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য একটি স্কুল স্থাপন করেছিলেন, যা চালাতেন চাঁদা আদায় করে। মুসলমানদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল তুলে চাঁদা আদায় করতে হতো। ছোট্ট খোকা দলবল নিয়ে নিজেকে সেই কাজে বিলিয়ে দিতেন। গোপালগঞ্জের মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুলে পড়ার সময় স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। সে সময় স্কুলের মেরামত কাজ ও ছাদ-সংস্কার, খেলার মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সোহরাওয়ার্দীর কাছে স্কুলের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হিসেবে জরুরিভাবে অর্থ বরাদ্দ করার দাবি করেন। এক কথায় সেই ছাত্রাবস্থা থেকেই শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য তার দরদ সৃষ্টি হয়েছিল।
১৯৪৭ সালের পর এ দেশে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা হ্রাস পায়। জাতির অর্ধেকেরও বেশি শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। শতকরা মাত্র ১৮ জন বালক ও ৬ জন বালিকা প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করত। আমাদের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ অক্ষরজ্ঞানহীন ছিল। প্রতি বছর ১০ লাখেরও অধিক নিরক্ষর লোক বাড়ছিল। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ৬টি প্রধান শিক্ষা কমিশনসহ মোট ৮টি শিক্ষা প্রতিবেদন পেশ করে। কিন্তু কোনোটিতেই অখণ্ড পাকিস্তানের জাতীয় মুক্তি ও আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন হয়নি। সব কমিশনই ছিল পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মৌলচেতনা, সমাজ-সংস্কৃতি ও কৃষ্টিবিরোধী। ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায় ১৯৭০-এর নির্বাচনের সময় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে। সেই ভাষণে তিনি সুস্পষ্ট কিছু প্রস্তাব রেখেছিলেন। যথা- প্রথমত, ‘সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা খাতে পুঁজি বিনিয়োগের চেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না।’ দ্বিতীয়ত, ‘নিরক্ষতা অবশ্যই দূর করতে হবে। পাঁচ বছর বয়স্ক শিশুদের বাধ্যতামূলক অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষাদানের জন্য একটি ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালু করতে হবে।’ তৃতীয়ত, ‘দারিদ্র্য যেন উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মেধাবীদের জন্য বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে প্রাথমিক শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। ৯ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছিল তা দ্রুত পুষিয়ে দিতে তিনি নানা কার্যক্রম হাতে নেন। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ১৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেই ওই বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বকেয়া বেতন মওকুফ করেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতনভাতা প্রদান করে শিক্ষাব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। তখন শিক্ষার্থীদের মাঝে বই, খাতা, পেনসিলসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি বিদেশি বিস্কুট, ছাতু, দুধসহ নানা খাদ্যসামগ্রীও শিক্ষার্থীদের মাঝে সরবরাহ করা হয়। শিক্ষকদের অবস্থা বিবেচনা করে অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিল থেকে সাধারণ শিক্ষকদের ন্যায্যমূল্যে কাপড় সরবরাহের ব্যবস্থা করেন তিনি। ধ্বংসপ্রাপ্ত, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলো মেরামত এবং অনেক নতুন বিদ্যালয় স্থাপন শুরু করা হয়। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ২০ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলী বঙ্গবন্ধুর সম্মতিক্রমে শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠনে ৫১ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন, যা সদ্য স্বাধীন দেশের শিক্ষার ভিত গঠনে বীজের ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয়, ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ অংশে ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা-ভাবনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বঙ্গবন্ধু সরকার স্বাধীন দেশে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে প্রথম যে বাজেট ঘোষণা করেছিলেন তাতে প্রতিরক্ষা খাতের চেয়ে শিক্ষা খাতে ৭ শতাংশ বরাদ্দ বেশি রেখেছিলেন। কারণ বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন শুধু শিক্ষা দিয়েই দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করে জাতিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। শিক্ষাব্যবস্থার দিকনির্দেশনা প্রদান করার জন্য বিখ্যাত শিক্ষাবিদ বিজ্ঞানী ড. কুদরত-ই-খুদাকে সভাপতি করে ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে ১৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর একান্ত ইচ্ছায় ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে একটি সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। কমিশনে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে আট বছর করার সুপারিশ করা হয়। উচ্চশিক্ষা গ্রহণেচ্ছুদের জন্য স্বাক্ষরতা অভিযান নামে বিশেষ একটি পদক্ষেপের কথা শিক্ষা কমিশনে উল্লেখ করা হয়। পাঁচ বছরের মধ্যে ১১-৪৫ বছর বয়সি সাড়ে ৩ কোটি নিরক্ষর মানুষকে অক্ষরজ্ঞান দেয়ার প্রস্তাব ছিল এই শিক্ষা কমিশনে।
বঙ্গবন্ধু টোল, মক্তব, মাদ্রাসা, পাঠশালা তথা ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ, ১১ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, ৪৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ ও চাকরি সরকারিকরণ, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই ও গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পোশাক প্রদানের ব্যবস্থা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা বিস্তার ও নিরক্ষরমুক্ত দেশ গড়ার প্রথম পদক্ষেপ ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের একটি আইন প্রণয়ন করেন। এই আইন প্রণয়নের পর প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক করে শিক্ষাকে সহজলভ্য করে দিয়েছিলেন। তাছাড়া তাঁর আমল থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে বই বিতরণ শুরু হয়। এছাড়া নারীর উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ১৯৭৩ সালের জানুয়ারি মাসে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নারীদের অবৈতনিক শিক্ষা চালু করার যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। শিক্ষকদের উদ্দেশে এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আগামী প্রজন্মের ভাগ্য শিক্ষকদের ওপর নির্ভর করছে। শিশুদের যথাযথ শিক্ষার ব্যত্যয় ঘটলে কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন হবে।’
বঙ্গবন্ধু বলতেন ‘আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এ পর্যন্ত শুধু আমলাই সৃষ্টি করেছে, মানুষ সৃষ্টি করেনি’। তিনি মানুষ সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেন। শিক্ষা কমিশনে মেধাবীদের জন্য বিশেষ ধরনের মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, অসচ্ছল বালক-বালিকাদের সরকারি বৃত্তি, ক্যাডেট ও রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে কারিগরি, সাধারণ ও বিজ্ঞান বিষয় অন্তর্ভুক্তির জন্য সুপারিশ করা হয়। বাংলা ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম করে ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পঞ্চম শ্রেণি ও ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণির শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। আইনের মাধ্যমে শিশুদের নাম ও জাতীয়তার অধিকারের স্বীকৃতি, সব ধরনের অবহেলা, শোষণ, নিষ্ঠুরতা, নির্যাতন, খারাপ কাজে ব্যবহারসহ সব অপকর্ম থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁর আগ্রহে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ২২ জুন ‘জাতীয় শিশু আইন’ জারি করা হয়।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। শিক্ষা ছাড়া জাতির উন্নতি যে সম্ভব নয়, তা স্বাধীনতার পর পরই অনুধাবন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাই তিনি শোষণমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গড়ে তুলেছিলেন বৈষম্যহীন ও যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা। স্বাধীনতার পর ভঙ্গুর শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। প্রাথমিক শিক্ষা সরকারিকরণ, সংবিধানে শিক্ষা বাধ্যতামূলক, শিক্ষা কমিশন গঠন, বাজেটে শিক্ষা খাতে উল্লেখযোগ্য অর্থ বরাদ্দ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়িত করেছেন। বঙ্গবন্ধু এদেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। পরিশেষে বলতে পারি বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন ও প্রাথমিক শিক্ষা একই সুতায় গাঁথা। তাই বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়ন করে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আলোকিত মানুষ তথা বঙ্গবন্ধুর সোনার মানুষ তৈরির আঁতুড়ঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

শুভাশিস ঘোষ : উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়