ঢাবি সাংস্কৃতিক : সংসদের আয়োজন চিঠি লেখা যাবে ‘প্রিয় বঙ্গবন্ধু’কে

আগের সংবাদ

নান্দনিক বঙ্গবন্ধু

পরের সংবাদ

ট্রাম্পের বাসা থেকে গোপনীয় নথি জব্দ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গত ৮ আগস্ট ফৌজদারি অপরাধের তদন্তে ইতিহাসের প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কোনো প্রেসিডেন্টের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হলো। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়িতে গত সপ্তাহের অভিযানে এফবিআই কিছু ‘অতি গোপনীয়’ নথি জব্দ করেছে বলে তল্লাশি পরোয়ানায় বলা হয়েছে।
বিবিসি লিখেছে, এফবিআই কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে মার-আ-লগোতে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ১১ সেট নথি নিয়ে এসেছেন। যেগুলোতে ‘টিএস/এসসিআই’ (টপসেক্রেট/সেনসিটিভ কম্পার্টমেন্টেড ইনফরমেশন) হিসেবে চিহ্নিত ছিল। এ ধরনের চিহ্ন সাধারণত সেইসব নথিতে থাকে, যেসব নথির তথ্য বাইরে গেলে তা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার ‘ভয়াবহ ক্ষতির’ কারণ হতে পারে।
অবশ্য ট্রাম্প কোনো ধরনের অন্যায় করার কথা অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, যেসব নথি এফবিআই কর্মকর্তারা নিয়েছেন, সেগুলো ‘ডিক্লাসিফায়েড’ বা ‘গোপনীয় নয়’ জাতীয়।
গত ৫ আগস্ট বিচারক ওই পরোয়ানা অনুমোদন করেছিল। তারও তিন দিন পর ৮ আগস্ট পাম বিচের মার-আ-লগোতে অভিযান চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার পরোয়ানাটি জনসমক্ষে প্রকাশের আবেদন জানিয়েছিল, চলমান কোনো তদন্তের ক্ষেত্রে যা বিরল। ট্রাম্পের আইনজীবীরা বিরোধিতা না করায় বিচারক পরোয়ানাটি প্রকাশের অনুমতি দেন। এতে বলা হয়, সোমবার ট্রাম্পের বাড়ি থেকে ২০ বাক্সেরও বেশি জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে আছে ফটো-বাইন্ডার, হাতে লেখা নোট, ‘ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট’ বিষয়ক অনুল্লেখ্য তথ্য এবং ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের মিত্র রজার স্টোনের সাজা কমানোর আবেদন।
চার সেট ‘অতি গোপনীয়’ ফাইলের পাশাপাশি ট্রাম্পের ভাণ্ডার থেকে আরো মিলেছে তিন সেট ‘গোপন নথি’ ও তুলনামূলক কম ‘গোপনীয়’ তিন সেট উপাদান।
ট্রাম্পের ফ্লোরিডা বাসভবনের যেসব জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে তার মধ্যে ‘৪৫ অফিস’ ও স্টোরেজ রুমগুলো থাকলেও ট্রাম্প এবং কর্মীরা যেসব ঘর ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন, সেগুলো ছিল না বলেও পরোয়ানায় বোঝা গেছে।
গুপ্তচরবৃত্তি আইনের লঙ্ঘন হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতেই এফবিআই কর্মকর্তারা মার-আ-লগোতে ওই তল্লাশি চালিয়েছিলেন বলে প্রকাশিত পরোয়ানায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ আইন অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সম্ভাব্য বিপজ্জনক তথ্য নিজের কাছে রাখা বা হস্তান্তর করা অবৈধ।
আইনটির মাধ্যমে গোপনীয় নথিপত্র বা উপকরণ সরানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালেই এই আইনে সাজার পরিমাণ বাড়িয়েছিলেন। এ আইন লঙ্ঘনে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
ট্রাম্প মুখপাত্রের পাল্টা অভিযোগ :
গত শুক্রবার রাতে ট্রাম্পের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, যেসব নথি পাওয়া গেছে, প্রেসিডেন্ট থাকাকালে নিজের ক্ষমতাবলে সেগুলোতে ‘গোপনীয় নয়’ শ্রেণিভুক্ত করেছিলেন ট্রাম্প। যেসব নথি ওভাল অফিস থেকে সরিয়ে বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে সেগুলোকে ‘গোপনীয় নয়’ শ্রেণিভুক্ত করতে তার একটি স্থায়ী আদেশ ছিল। কোন নথি গোপনীয় থাকবে, কি থাকবে না তা নির্ধারণের সম্পূর্ণ এখতিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের থাকে বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
ট্রাম্পের মুখপাত্র টেইলর বুদোভিচ বলেছেন, তালগোল পাকানো তল্লাশি অভিযানের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এখন মুখ রক্ষায় নেমেছে। সাবেক প্রেসিডেন্টের রিপাবলিকান মিত্ররাও মার-আ-লগোতে এফবিআইয়ের অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন।
ট্রাম্প ২০২৪ সালে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর কথা চিন্তা করায় তাকে ‘রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল’ করতেই এই অভিযান চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
তবে এই যুক্তি আদালতে ধোপে টিকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন আইন মন্ত্রণালয়ে আগে কাজ করেছেন এমন একজন আইনজীবী টম ডুপ্রি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট যে কোনো গোপন তথ্যকেই ‘গোপন নয়’ করতে পারেন, তবে নিয়মনীতি অনুসরণের মাধ্যমে বলতে হবে। ফর্ম পূরণ করে সুনির্দিষ্ট অনুমোদন নিতে হয়। প্রেসিডেন্ট কেবল মুখে ‘গোপনীয় নয়’ বললেই হয় না, তাকে কিছু নিয়মনীতি অনুসরণ করতে হয়।
এফবিআইয়ের ওই তল্লাশির পর সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনলাইনে যেসব হুমকি দেয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সেসব পর্যবেক্ষণ করছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
ট্রাম্পের বাড়িতে তল্লাশির অনুমতি দেয়া মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড বৃহস্পতিবার এফবিআই কর্মকর্তাদের পক্ষ নিয়ে তাদের ‘ত্যাগী, দেশপ্রেমিক সরকারি চাকরিজীবী’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন। যখন তাদের সততাকে অন্যায়ভাবে আক্রমণ করা হয়, তখন আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়