যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ : সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

বিসিবির ধমকে পিছু হটলেন সাকিব : বিসিবি সভাপতি পাপনের আল্টিমেটামের পর বেটউইনার নিউজের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে চিঠি

পরের সংবাদ

সিলেট পাসপোর্ট অফিসে জনদুর্ভোগ চরমে : জনবল সংকটে মিলছে না কাক্সিক্ষত সেবা

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আছাদুজ্জামান, ঢাকা ও জাহিদুল ইসলাম, সিলেট : সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে সেবাপ্রত্যাশীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। জনবল সংকটে কাক্সিক্ষত সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আর সেবা নিতে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্ষুব্ধ পাসপোর্ট করতে আসা সাধরণ মানুষ।
গত সোমবার সরেজমিন সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ থেকে ছয়শ মানুষের দীর্ঘ লাইন। কড়া রোদের মধ্যে কয়েকশ মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন পাসপোর্টের আবেদন জমা দেবার জন্য। একই সময়ে বায়ো এনরোলমেন্ট, পাসপোর্ট ডেলিভারি ও অন্যান্য কাজের জন্য অপেক্ষা করছেন প্রায় একই সংখ্যক মানুষ। কিন্তু জনবল সংকটে এক রকম ধীর গতিতে চলছে কাজ। এতে অনেক আবেদনকারীকেই উত্তেজিত হতে দেখা যায়।
সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে পাসপোর্ট আবেদন জমা দিতে আসা হারুনুর রশিদ বলেন, সকাল ৯টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করে আছি কিন্তু এখনো জমা দিতে পারিনি। তিনি বলেন, মাত্র একজন লোক আবেদন জমা নিচ্ছে, পাঁচশর ওপরে আবেদনকারী। যেভাবে চলছে এতে করে সন্ধ্যার আগে শেষ হবে বলে মনে হয় না।
নিজের বোনের পাসপোর্ট আবেদন জমা দিতে সঙ্গে এসেছেন নগরীর আম্বরখানা এলাকার আবিদ মজুমদার। তিনি বলেন, একটি বিভাগীয় সরকারি অফিস অথচ এখানে বসবার কোনো জায়গা নেই। সরু করিডোরে গাদাগাদি করে দাঁড়াতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এতে করে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই। আমরা সরকারি নির্ধারিত রাজস্ব জমা দিয়েও নির্ধারিত সেবা পাচ্ছি না। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলেও কোনো সদুত্তর মিলছে না।
সরেজমিন পরিদর্শনেও এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। চারতলা ভবনের দোতলায় পরিচালকের কক্ষের সামনে একটি সোফায় গাদাগাদি করে বসে আছেন ১০ জন সেবা প্রত্যাশী। আর করিডোরে দাঁড়িয়ে আছেন নারী পুরুষ শিশুসহ অন্তত দুই শতাধিক মানুষ। প্রচণ্ড গরমে তাদের অধিকাংশই ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। তবে ধীর গতিতে কাজ হওয়ায় অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘই হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক এ কে এম মাজহারুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে সেবাপ্রত্যাশীদের কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আমাদের এখানে ৩৩টি পদের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ২৩ জন। এতে করে সেবা প্রত্যাশীদের কাক্সিক্ষত সেবাপ্রাপ্তি বিঘিœত হচ্ছে। জনবল চেয়ে আমরা একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি, আশা করছি অচিরেই তা দূর হবে। জনবল বাড়লে আমাদের কাজে গতি আসবে, তখন আর এই জনভোগান্তি থাকবে না আশা করি।
এদিকে তথ্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি বলে জানান কয়েকজন পাসপোর্ট আবেদনকারী। তাদের অনেকেই পাসপোর্ট আবেদনের পর কয়েক মাস ধরে ঘুরছেন বলে জানান। এদেরই একজন এডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নি। তিনি বলেন, আমি পাসপোর্টের আবেদন জমা দিয়েছি তিন মাস আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার পুলিশ ভেরিফিকেশনই আসেনি। তিনদিন ধরে ঘুরছি, কেউ কিছু বলতে পারে না। আবেদনে কোনো ভুল ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নাম হাদিয়া চৌধুরী মুন্নি। আমার জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের আগে এডভোকেট থাকায় পাসপোর্ট সফটওয়্যার সিস্টেমে আটকে গেছে বলে জানিয়েছে সিলেট পাসপোর্ট

অফিস।
এ ব্যাপারে পরিচালক জানান, সিলেট অঞ্চলে আবেদনে অপ্রত্যাশিত ভুলের পরিমাণ বেশি। এ কারণে তথ্য পরিবর্তেনের আবেদনের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। কিন্তু আমাদের সেবা পুরোপুরি সফটওয়্যার নির্ভর হওয়ায় তথ্য পরিবর্তনের অধিকাংশ আবেদনই আটকে যায়। যা সমাধানে দীর্ঘ সময় লাগে। কিন্তু আবেদনকারীরা সেসব মানতে নারাজ। তারা মনে করেন, দুর্নীতির কারণে এমন হচ্ছে।
এসব অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে সিলেটের স্থানীয় দৈনিক জাগ্রত সিলেট-এর বার্তা

সম্পাদক রাজীব রাসেল বলেন, আমাদের সিলেট অঞ্চলে এমন ভুলের পরিমাণ অসংখ্য। জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুলের জন্য অনেককেই নানা ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এর মধ্যে পাসপোর্ট সেবা অন্যতম। আমরা যদি একটু সচেতন হই তবে এমন ভোগান্তি এড়ানো সম্ভব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়