যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ : সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

বিসিবির ধমকে পিছু হটলেন সাকিব : বিসিবি সভাপতি পাপনের আল্টিমেটামের পর বেটউইনার নিউজের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে চিঠি

পরের সংবাদ

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে হতে পারে ‘পানি চুক্তি’

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারত সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এটিই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শেষ ভারত সফর। তাই এ সফর নিয়ে দুই দেশের পর্যবেক্ষকদের মধ্যেই চলছে গুঞ্জন। কী হতে পারে বা কী হতে যাচ্ছে? জানা যায়, এ সফরের আগেই দিল্লির সঙ্গে অনেক বিষয় ফয়সালা করতে চায় ঢাকা। বিশেষ করে নদী নিয়ে দ্বিপক্ষীয় কিছু বিষয়ের সমঝোতায় আসতে চায় বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই এ মাসের শেষ দিকে বাংলাদেশ-ভারতের পানিসম্পদমন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। ভারতের দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বৈঠকেই দুই দেশের মধ্যে পানি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তি হতে পারে। কিন্তু ইস্যুটি খুবই স্পর্শকাতর হওয়ায় তথ্য প্রকাশের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছেন উভয় দেশের কর্মকর্তারা। খবরে জানানো হয়, শুধু চুক্তিই নয়, নদীগুলোর পানিবিষয়ক তথ্য এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণে আরো কিছু ভালো পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নিয়ে জেআরসি বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্র থেকে জানা গেছে, আসাম থেকে বাংলাদেশে আসা কুশিয়ারা নদী নিয়ে একটি সমঝোতা হওয়ার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া প্রমত্তা পদ্মা নিয়েও বড় একটি চুক্তি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে অন্য একটি কূটনৈতিক সূত্র। আওয়ামী লীগ সরকার বহুল আলোচিত তিস্তাচুক্তি নিয়েও ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
যদিও ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এবং ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় এ বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল। অবশ্য বাংলাদেশ সব পর্যায়ের যোগাযোগেই এই চুক্তির ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
এর আগে তিস্তা নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাই স্বামী বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাধার কারণেই তিস্তা চুক্তিতে দেরি হচ্ছে। তবে এখন ভারতীয় রাজনীতির বদলে যাওয়া পরিস্থিতি এবং পশ্চিমবঙ্গের পার্থকাণ্ডের পরে সময়টা বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান করছে বলে মনে করছে দ্য হিন্দু। তাই ভারত-বাংলাদেশের পানি বণ্টন চুক্তি হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মূলত দিল্লি ও কলকাতার মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের দূরত্ব থাকার কারণেই তিস্তা চুক্তি আটকে গেছে। গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে রাজ্যের বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশ-ভারত দরকষাকষির আগেই মমতার সঙ্গে বৈঠক করলেন মোদি। এর ফলে অনেকেই ধারণা করছেন, পানি বণ্টনের বিষয়টিই হয়তো ছিল আলোচনার মূল লক্ষ্য।
সর্বশেষ ২০১০ সালে জেআরসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশই এবার এই বৈঠকের আহ্বান জানায়। এই সময়ের মধ্যে যদিও দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু নদী সম্পর্কিত আলোচনা হয়েছে। তবে সেগুলোকে একটি সুসঙ্গত আকার দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। জেআরসি এজন্য উপযুক্ত একটি প্ল্যাটফর্ম। দ্য হিন্দুর রিপোর্টে জানানো হয়, সামনের বৈঠকে মূলত ইতিবাচক দিকেই ফোকাস দেয়া হবে এবং তিস্তা ছাড়াও অন্য আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর বিষয়েও আলোচনা হবে। এছাড়া মনু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমার নদে দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা জোরদার হবে।
এই আন্তঃসীমান্ত নদীগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সফলতার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসব নদীর উপরে নির্ভর করে কোটি মানুষের জীবিকা। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন ৫৪টি নদী রয়েছে। বাংলাদেশ এসব নদীর বিষয়ে ভারতের কাছ থেকে আরো তথ্য চায়। দুই দেশের মধ্যে মৎস্য পরিকল্পনা এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য এসব তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেআরসি বৈঠকে বন্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে এ নদীগুলোর জল আদান-প্রদানের সময়কাল বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানানো হয়েছে দ্য হিন্দুর রিপোর্টে। এতে করে বাংলাদেশ বন্যা নিয়ন্ত্রণে আরো ভালো প্রস্তুতি নিতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০২৬ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। দুই দেশ এখন এই চুক্তির মেয়াদ আরো বাড়াতে আগ্রহী। এ ইস্যুটিও আগামী বৈঠকগুলোয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এসব ছাড়াও জলযান পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং নদী দূষণ হ্রাস নিয়েও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়