কাগজ প্রতিবেদক : বাসায় মাদক রাখার অভিযোগে ইন্দোনেশিয়া থেকে ফিরিয়ে আনা বাংলাদেশি কূটনীতিক কাজী আনারকলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরই ম?েধ্য ওএসডি হওয়া এই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতির ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির চাহিদার প্রেক্ষাপটে মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
কমিটির সভাপতি ফারুক খানের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মো. হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক ও নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশ নেন। বৈঠক শেষে ফারুক খান জানান, ইন্দোনেশিয়া ফেরত কূটনীতিক আনারকলির বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের দেশের ভাবমূর্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ও কঠোর অবস্থানে। ইতোমধ্যে তাকে ওএসডি করা হয়েছে। এছাড়া একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। ওই কর্মকর্তার অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক শাস্তি হতে পারে। ইন্দোনেশিয়ায় কী ঘটেছিল সেটা জানার জন?্য দেশটির সরকারের কাছেও চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান ফারুখ খান।
উল্লেখ্য, বাসায় মারিজুয়ানা রাখার অভিযোগে নাইজেরীয় বন্ধুসহ স¤প্রতি ইন্দোনেশিয়ায় আটক হয়েছিলেন বাংলাদেশি কূটনীতিক কাজী আনারকলি। প্রায় ২৪ ঘণ্টা তিনি আটক ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ডিটেনশন সেন্টারে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় বিশেষত ইন্দোনেশিয়া সরকারের বদান্যতায় তিনি মুক্তি পান। পরে তাৎক্ষণিকভাবে ওই কর্মকর্তাকে ঢাকায় ফেরত আনা হয়।
বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ মিশনে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে ইতোপূর্বে কতজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব?্যবস্থা নেয়া হয়েছে, কমিটির পক্ষ থেকে তা জানতে চাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, গত ১০ বছরে বিভিন্ন মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কী ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব?্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তার তথ?্য চাওয়া হবে। আমরা ওই তথ?্য সব মিশনে পাঠানোর সুপারিশ করব।
রোহিঙ্গা ইস?্যুতে চীন ও আসিয়ান দেশগুলোর সর্বশেষ অবস্থানের কথা উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, রোহিঙ্গা ইস?্যুতে বাংলাদেশের দিকে সমর্থন বেড়েছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কূটনৈতিক মিশনগুলো এ বিষয়ে কাজ করে চলেছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সফরকালে গত ৭ আগস্ট বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে ৯৯ শতাংশ বাংলাদেশি পণ?্য বিনাশুল্কে চীনে প্রবেশাধিকারের সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কমিটি যে এক শতাংশ পণ?্য ও সেবা শুল্ক দিয়ে প্রবেশ করতে হবে, সেই তথ?্য জানতে চেয়েছে।
এ বিষয়ে ফারুক খান বলেন, ৯৯ শতাংশ পণ?্য বিনাশুল্কে যাবে এটা ভালো কথা। কিন্তু কোন কোন পণ্য শুল্ক দিয়ে রপ্তানি করতে হবে- সেই তালিকাটি আমরা জানতে চেয়েছি। কারণ, দেখা যাবে ওই এক শতাংশের মধ্যেই রয়েছে আমাদের রপ্তানিযোগ?্য গুরুত্বপূর্ণ পণ?্যগুলো।
বৈঠকে সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন দেশের ভিসা পাওয়া নিয়ে জটিলতার বিষয়ে আলোচনা হয় এবং দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া বৈঠকে প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি।