খোলাবাজারে ডলারের রেকর্ড দাম ১১২ টাকা

আগের সংবাদ

তিন কারণে চড়ছে ডলার : বৈশ্বিক অস্থিরতা, মজুতদারি, অর্থ পাচার, ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের ফারাক অস্বাভাবিক

পরের সংবাদ

নির্বাসিত রাজন্যরা আজ কে কোথায়!

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গণবিক্ষোভের পর নতুন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে অদূর-প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা। কিন্তু আগের জন- ক্ষমতাচ্যুত গোটাবায়া রাজাপাকসে, তার কী হবে? গত ১৩ জুলাই তিনি পালিয়ে যান মালদ্বীপ; সেখান থেকে সিঙ্গাপুর। সেখান থেকেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন। কেউ জানে না, তিনি সেখানেই থাকবেন কিনা। লঙ্কান মন্ত্রিসভার মুখপাত্র বলেছেন, শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন। এমন ঘটনা আদৌ বিরল নয়, এক দেশের ক্ষমতাচ্যুত নেতা পালিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিচ্ছেন। মার্কিন অধ্যাপক আবেল এসক্রিবা এক হিসেব তুলে ধরে বলছেন, ১৯৪৬ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত ১৮০ জনেরও বেশি রাষ্ট্রপ্রধান আন্দোলন কিংবা অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন।
দালাই লামা (১৯৫৯ থেকে এখন পর্যন্ত) : তিব্বতি ধর্মগুরু ও নেতা দালাই লামা ১৯৫৯ সালে চীন থেকে নির্বাসিত হয়ে ভারতে ঠাঁই নেন। এখনো তিনি সেখানেই আছেন। চীনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই ভারতকে সতর্ক করেছিলেন দালাই লামাকে আশ্রয় না দেয়ার জন্য। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহেরলাল নেহেরু তা উপেক্ষা করেন।
আয়াতোল্লাহ খোমেনি (১৯৬৪-১৯৭৯) এবং ইরানের শাহ (১৯৭৯-১৯৮০) : ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের সময় একজনের নির্বাসনে যাওয়া আর আরেকজনের নির্বাসন থেকে ফেরার ঘটনা একই সঙ্গে ঘটে। শাহের শাসনের তীব্র বিরোধিতার জন্য ১৯৬৪ সালে খোমেনিকে নির্বাসনে যেতে হয়। তিনি প্রথম যান তুরস্কে, তারপর ইরাকে এবং শেষে ফ্রান্সে। দেশব্যাপী দাঙ্গা, ধর্মঘট, আর বিক্ষোভের মধ্যে ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি মাসে শাহের সরকার ভেঙে পড়ে। দেশ ছেড়ে পালান তিনি ও তার পরিবার। ফেব্রুয়ারি মাসের পহেলা দিনে বিজয়ীর বেশে ইরানে ফেরেন খোমেনি।
অন্যদিকে শাহ এবং তার স্ত্রী স¤্রাজ্ঞী ফারাহ- প্রথমে যান মিসরের আসওয়ানে। এরপর তিনি মরক্কো, বাহামা, মেক্সিকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পানামায় সংক্ষিপ্ত অবস্থান করেন। শেষ পর্যন্ত ১৯৮০ সালে কায়রোতে মারা যান তিনি।
ইদি আমিন (১৯৭৯-১৯৯৩) : অনেক সময় সবচেয়ে কঠোর স্বৈরশাসকও নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে যান। উগান্ডার ইদি আমিন হচ্ছেন তাদের একজন। এই সামরিক নেতা ১৯৭৯ সালে উগান্ডার ক্ষমতা দখল করেন। পরের এক দশক ধরে তিনি দেশটিতে তার বর্বর স্বৈরশাসন চালান। কিন্তু ইদি আমিন যখন ১৯৭৯ সালে তানজানিয়ার সৈন্য এবং উগান্ডার নির্বাসিতদের হাতে উৎখাত হন- তখন পালাবার পথ খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এই সাবেক আফ্রিকান মুসলিম নেতাকে আশ্রয় দেয় সৌদি আরব। তিনি মারা যান ২০০৩ সালে। সৌদি আরবে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছিলেন তিনি।
বেনজির ভুট্টো (১৯৮৪-১৯৮৬, ১৯৯৯-২০০৭), নওয়াজ শরিফ (১৯৯৯-২০০৭) : পাকিস্তানে বেনজির ভুট্টোকে নির্বাসনে যেতে হয় দুবার- যুক্তরাজ্য এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দুবারই তিনি নির্বাসন থেকে পাকিস্তান ফিরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি কোনো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। এ পদে প্রথম আসীন হন ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত আর দ্বিতীয়বার ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত। দুবারই তাকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। ২০১৩ সালে দৃশ্যত এক আত্মঘাতী আক্রমণে তিনি নিহত হন। বেনজির ভুট্টো ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দুবার প্রধানমন্ত্রী হন নওয়াজ শরিফ। কিন্তু ১৯৯৯ সালে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন সামরিক বাহিনীর হাতে। তিনি কিছুদিন বন্দি থাকার পর নির্বাসিত জীবন কাটান সৌদি আরবে। এর ১৪ বছর পরে তিনি দেশে ফেরেন এবং তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন।
ফার্দিনান্দ মার্কোস (১৯৮৬-১৯৮৯) : অনেক নির্বাসিত নেতা দেশ ছাড়লেও তাদের নামের প্রভাব রাজনীতিতে রয়েই যায়; ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মার্কোস তাদের একজন। ১৯৮৬ সালে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান তাকে পদত্যাগ করে হাওয়াই দ্বীপে নির্বাসিত জীবন বেছে নেয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে মারা যান মার্কোস, ১৯৮৯ সালে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়