শিনজো আবের প্রতি বিএনপির শ্রদ্ধা

আগের সংবাদ

ভোট ঘিরে তৎপর কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

দম্পতিকে মারপিট করে বাড়ি দখলচেষ্টা : মহাদেবপুরে জামিনে এসে বাদীকে হত্যার হুমকি

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : মহাদেবপুরে এক সংখ্যালঘু পরিবারের স্বামী-স্ত্রীকে গাছে বেঁধে মারপিট ও বসতবাড়ি ভাঙচুরসহ জমিজমা দখল নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পরদিন আসামিরা আদালত থেকে জামিনে এসে মামলা তুলে নিতে বাদীসহ সাক্ষীদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। পরিবারটি তার পরিবার ও পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করছে।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কৃষকলীগের ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুল ইসলাম মাস্টারের ছোট ভাইসহ কয়েকজন হাইব্রিড নেতার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহযোগিতায় ওই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি দখল নিতে এ নারকীয় তাণ্ডব চালানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের ফরমানপুর (হরেকৃষ্ণপুর) গ্রামের দেবেন্দ্রনাথ তার ছেলে নারায়ণ চন্দ্রসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত এ বসতবাড়িতে অর্ধশত বছরেরও অধিক সময় ধরে সেখানে বসবাস করে আসছেন। হঠাৎ করেই গত ৬ জুলাই সকাল ১০টার দিকে একই গ্রামের মৃত রফি উদ্দিনের ছেলে নূর ইসলাম (৫৫) ও আনোয়ার হোসেন (৪৫) গংয়ের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রসহ লাঠিসোটা হাতে নিয়ে ১৮-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল সন্ত্রাসী কায়দায় দেবেন্দ্রনাথের দখলে থাকা ওই বসতবাড়ির জমি দখল নিতে হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা এ সময় ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও দেবেন্দ্রনাথ এবং তার স্ত্রী সরলা রানীকে একটি আম গাছে বেঁধে রেখে বেধড়ক মারপিট করাসহ দেবেন্দ্রনাথের পুত্রবধূ তাপসী রানীকে (২৬) বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় তাদের চিৎকারে প্রতিবেশী লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও মারপিটে গুরুতর জখম করে।
এ ঘটনায় ওই গৃহকর্তা ও তার স্ত্রী, পুত্রবধূ, প্রতিবেশী হাতেম আলীসহ অন্তত ৬-৭ জন নারী ও পুরুষ আহত হন। আহতদের দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে হাতেম আলীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ওইদিনই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অনুকূল চন্দ্র সাহা বুদু বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন হাইব্রিড নেতা পরোক্ষভাবে ওইসব ভূমিদস্যুকে মদদ দেয়ায় প্রকাশ্যে এমন নারকীয় তাণ্ডব চালানোর সাহস দেখিয়েছে তারা। এ ঘটনার পর এলাকার সংখ্যালঘু পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। এদিকে ওই নারকীয় তাণ্ডবের ঘটনায় দেবেন্দ্রনাথের ছেলে নারায়ণ চন্দ্র বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দেন। থানা পুলিশ ঘটনার পরদিন ৭ জুলাই মামলার প্রধান আসামি নূর ইসলামসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। ওই দিনই আদালত থেকে তারা জামিনে এসে এ মামলার বাদীসহ সাক্ষীদের মামলা তুলে নেয়ার জন্য বলা হয়। অন্যথায় তাদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে বাদী অভিযোগ করেন।
এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হাতুড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিমান চন্দ্র বর্মন বলেন, আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত কোনো নেতাকর্মী এমন ঘৃণিত অপরাধ করতে পারে না। কারা এ রকম অপরাধমূলক কাজ করছে এ প্রশ্নের উত্তর নেই তার কাছে। থানার অফিসার ইনচার্জ আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়