মুম্বাইয়ে ভবনধসে নিহত ১৯

আগের সংবাদ

বানভাসিদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই

পরের সংবাদ

শিবালয়ে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ!

প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুরেশ চন্দ্র রায়, শিবালয় (মানিকগঞ্জ) থেকে : শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়নের কোনাবাড়ী শাকরাইল (আয়নালের বাড়ি থেকে ঈদগাহ মাঠ পর্যন্ত) ১ কোটি ৪৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে রাস্তাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন জে এম কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মাসুদ রানা। কাদা মাটি দিয়ে কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করায় মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই প্রতিষ্ঠানের সাব-কন্ট্রাকটর হিসেবে কাজ করছেন মহাদেবপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আতোয়ার রহমান কাঙ্গাল। এই রাস্তা নির্মাণের সিডিউলে ড্রেজার ব্যবহারের কথা উল্লেখ না থাকলেও প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে ড্রেজিং করা মাটি। নিয়মবহির্ভূতভাবে বীরদর্পে রাস্তার কাজ করে যাচ্ছেন ঠিকাদার মাসুদ রানা, আতোয়ার রহমান কাঙ্গাল, মাটি ব্যবসায়ী আলমাস মোল্লা এবং ড্রেজার ব্যবসায়ী নয়া মিয়া। বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা প্রকৌশলী অবগত থাকলেও এ নিয়ে তার যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।
সাব-ঠিকাদার আতোয়ার রহমান কাঙ্গালের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মূল ঠিকাদার মাসুদ রানা এবং শিবালয় উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার সাহেব আমাকে যেভাবে কাজ করতে বলেছেন আমি সেভাবেই করছি। এখানে আমার কোনো দায়ভার নেই। আমার একক সিদ্ধান্তে ড্রেজার দিয়ে মাটি ফেলার সাহস কী আমার আছে? ঠিকাদার মাসুদ রানা মোবাইলে জানান, এ রাস্তার কাজের শিডিউলে ড্রেজার ব্যবহারের কথা উল্লেখ নেই। আপনাদের লেখালেখির কারণে ড্রেজার বন্ধ করে দিয়েছি। এখনো রাস্তার কাজে ড্রেজার চলমান এমন যথেষ্ট প্রমাণাদি আমাদের কাছে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আপনি কী বলবেন প্রশ্নে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
আমরা জানি ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হলেও আপনি কীভাবে ড্রেজার চালাচ্ছেন এমন প্রশ্নে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে রাস্তার কাজের সঙ্গে জড়িত মাটি ব্যবসায়ী আলমাস মোল্লা মোবাইলে জানান, সেই কৈফিয়ত আমি আপনাকে দেব না। যাদের কাছে কৈফিয়ত দেয়ার তাদের কাছে দিয়েই ড্রেজার চালাচ্ছি। আপনি কী মনে করেন সবার সঙ্গে কথা না বলেই আমি ড্রেজার ব্যবসা করি। শিবালয় উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন জানান, আমরা রাস্তায় গিয়ে দেখেছি বালুর পরিবর্তে কাদা মাটি ফেলা হয়েছে। কাদা মাটি রাস্তা থেকে উঠিয়ে ফেলে বালু দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি এবং এ কাজের সাব-ঠিকাদার আতোয়ার রহমান কাঙ্গালকে বাদ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এ রাস্তার কাজের শিডিউলে ড্রেজারের ব্যবহার উল্লেখ না থাকলেও ড্রেজার দিয়ে রাস্তায় মাটি ফেলা হচ্ছে এ বিষয়ে আপনি কী পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়টি দেখবেন ইউএনও এবং এসিল্যান্ড। ড্রেজারের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার এখতিয়ার আমার নেই। শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, রাস্তার কাজে ড্রেজার ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই এবং এ মর্মে আমার দপ্তরে কোনো আবেদনও কেউ করেননি। আমি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। মানিকগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুল হক ভোরের কাগজকে জানান, আমরা কোনো অনিয়ম মানব না। ঠিকাদার যদি নিয়মবহির্ভূতভাবে কোনো কাজ করে থাকেন তাহলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়