বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন : এমপি হারুনের নোটিস নাকচ করলেন স্পিকার

আগের সংবাদ

ঢাকার তৃণমূলে আ.লীগের পদ পেলেন ৫৪ হাজার কর্মী : থানা-ওয়ার্ডে পদ পাচ্ছেন আরো সাড়ে ১২ হাজার > সংগঠন গোছাতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন নগর নেতারা

পরের সংবাদ

ইভটিজিংয়ে বাধা দেয়ায় শিক্ষক খুন : এই সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে (৩৫) জীবন দিতে হয়েছে একই স্কুলের বখাটে ছাত্রের হাতে। এ ঘটনা ঘটেছে আশুলিয়া এলাকায়। ঘটনাটি শুধু মর্মান্তিক নয়, উদ্বেগজনকও। জানা গেছে, নিহত উৎপল কুমার সরকার আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজি ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানটির দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতুর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। গত শনিবার দুপুরে স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে ওই শিক্ষককে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে জিতু। গত সোমবার ভোরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। শিক্ষক উৎপল স্কুলের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। এ সুবাদে তিনি ছাত্রদের বিভিন্ন সময় আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করতেন। মেয়েদের ইভটিজিংসহ নানা উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে শিক্ষার্থীদের শাসন করতেন উৎপল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব ক্ষোভ থেকেই এ ঘটনা ঘটতে পারে। ইদানীং বখাটে ছেলেদের বেপরোয়াপনা লক্ষ করা যাচ্ছে সর্বত্র। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোয় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে কিশোর অপরাধী-সন্ত্রাসীর সংখ্যা। এসব অপরাধী মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, যৌন হয়রানি, ধর্ষণসহ ভয়ংকর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ইভটিজিং নামের সামাজিক ব্যাধিতে সমাজে অন্ধকারের বিস্তার ঘটছে। এ মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্তরা কতটা নির্মমতার শিকার ও বখাটেরা কতটা নিষ্ঠুর ও নৃশংস হতে পারে, আশুলিয়ার ঘটনাটি সেটাই পুনর্বার স্পষ্ট করে দিয়েছে। অতীতে বখাটেদের উৎপাত থেকে পরিত্রাণ পেতে সিমি, তিথি, রুমা, তৃষা, পিংকিসহ আরো অনেকে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। বখাটেদের উৎপাতে ইতোমধ্যে অনেক পরিবারই হারিয়েছে তাদের স্বজনকে। বখাটেরা শুধু মেয়েদের উত্ত্যক্তই করছে না, এরা তাদের মা-বাবা-ভাই, এমনকি শিক্ষককে পর্যন্ত হত্যা করে পৈশাচিক উল্লাস করার নজিরও আমাদের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। ইতোমধ্যে দ্রুত বিচার আইনে ইভটিজিংয়ের অপরাধে কিছু অপরাধী দণ্ডিতও হয়েছে। কিন্তু তারপরও বখাটেদের দৌরাত্ম্য থামছে না। বখাটেপনার এই দৌরাত্ম্য দূর করতে হলে আইনের যথাযথ প্রয়োগের বিকল্প নেই। ঢাকা মহানগর পুলিশ আইনের ৭৬ ধারা অনুযায়ী বখাটেপনার শাস্তি এক বছরের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ নম্বর ধারায় যৌন নিপীড়ন ও শ্লীলতাহানির শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড। কিন্তু এসব আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বখাটেরা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সন্তান। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সাহস অনেকে পান না। আবার অভিযোগ করলেও হুমকি কিংবা প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে অভিভাবকরা অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে যান। এই সামাজিক অপরাধ ও অনাচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কোনো বিকল্প নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়