সেন্ট লুসিয়ায় ধীরে এগুগোচ্ছে উইন্ডিজ

আগের সংবাদ

বিধ্বস্ত শহরে ভূতুড়ে নিস্তব্ধতা : আদালতের নিয়মিত বিচারকাজ বন্ধ > অফিসপাড়া নিথর > বন্ধ হাসন রাজা মিউজিয়াম > পথে পথে ক্ষতচিহ্ন

পরের সংবাদ

মার্কিন আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ : ‘গর্ভপাতের অধিকার বাতিলে’ এশিয়া-ইউরোপে তীব্র ক্ষোভ

প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কানাডা সাধারণত তার প্রতিবেশী দেশটির অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলায় না। কিন্তু গত শুক্রবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ‘রো বনাম ওয়েড’ মামলার রায় পাল্টে দেয়ার পর জাস্টিন ট্রুডো আর চুপ থাকতে পারেননি। তিনি মার্কিন সর্বোচ্চ আদালতের গর্ভপাতের অধিকার সংক্রান্ত রায়কে প্রগতির ওপর ‘ভয়াবহ ধাক্কা’ ও ‘নারীর জন্য ভয়ানক’ বলে অভিহিত করেছেন। রুয়ান্ডায় কমনওয়েলথ সম্মেলনের এক ফাঁকে এ বিষয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, সত্যি কথা বলতে, এটি প্রত্যেকের স্বাধীনতা ও অধিকারের ওপর আঘাত। তবে এ রায়ের পর কানাডার একটি গর্ভপাতবিরোধী সংগঠন টুইটারে তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের বন্ধুদের জন্য এটি সত্যিকার অর্থেই একটি ঐতিহাসিক দিন। সূত্রে প্রকাশ, মার্কিন আদালতের আদেশের পর মার্কিন নারীদের গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার উল্টে যাওয়ার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনেকেই একে নারী-অধিকারের ওপর বড় ধরনের আঘাত হিসেবে দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অনেক দেশের কাছে ‘মডেল’ হওয়ায় এখন অন্যান্য দেশেও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।
ভারতের নারী অধিকারকর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে ‘মধ্যযুগীয় মূল্যবোধ’ তাড়িত সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এই রায় বিশ্বজুড়ে নারীর অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে ফেলল। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭১ সাল থেকে গর্ভপাত বৈধ; তবে দেশটিতে কন্যাসন্তান জন্ম দিতে অনাগ্রহ থেকে অনেকে ভ্রæণ হত্যায় ব্রতী হওয়ায় গর্ভপাতের ক্ষেত্রে কিছু শর্তও আরোপ করা আছে। ভারতের নারী অধিকারকর্মী বীণা এ ব্যাপারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত বিশ্বের মডেল, অনেকেই তাকে অনুসরণ করে। আমার আশঙ্কা, একপর্যায়ে ভারতও লাইনে দাঁড়াবে এবং কাছাকাছি একটি আইন নিয়ে আসবে। আর আমরা বাধ্য হব সেই সন্তানদের বড় করতে, যাদের চাইনি আমরা। বীণা বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, যে নারীরা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাধ্য হয়ে সন্তান জন্ম দেন, তাদের প্রসব পরবর্তী মানসিক জটিলতা ও হতাশা বেড়ে যায়। ওই ‘অবাঞ্ছিত’ শিশুদের জীবনের মানও খারাপ হয়।
প্রায় ৫০ বছর আগে রো বনাম ওয়েড মামলার রায়ের কারণে এতদিন মার্কিন নারীরা গর্ভধারণের ৬ মাস পর্যন্ত তুলনামূলক সহজেই গর্ভপাত করতে পারতেন। গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট ওই রায় পাল্টে দেয়ায় শিগগিরই দেশটির

অনেক রাজ্যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বেশ কিছু রাজ্য বলছে, সর্বোচ্চ আদালত কেড়ে নিলেও তারা নারীর গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষেই থাকবে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ‘স্তম্ভিত’ হওয়ার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি এ রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য মানুষকে রাস্তায় নেমে আসারও আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের আদেশ আয়ারল্যান্ডকেও তীব্র ঝাঁকুনি দিয়েছে। দেশটিতে গর্ভপাত বৈধতা পেয়েছে মাত্র কয়েক বছর হলো, এর মধ্যে মার্কিন আদালতের এমন রায়! এর প্রতিক্রিয়ায় অনেকে ২০১৮ সালে গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে আইরিশ জনগণের দেয়া গণরায়ের স্মৃতি শেয়ার করছেন, অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন ভারতীয় দন্ত চিকিৎসক নারী সবিতা হলপ্পনবারের করুণ মৃত্যুর কথাও। তার ওই মৃত্যুর পর আয়ারল্যান্ডে গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হয় গণভোট- যা দ্বীপদেশটিতে গর্ভপাতকে বৈধতা দেয়। ওই আন্দোলনে অংশ নেয়া অনেকে এখন আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, দেশটিকে এখন হয়তো নতুন করে সবিতার মতো অসংখ্য ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়