সেন্ট লুসিয়ায় ধীরে এগুগোচ্ছে উইন্ডিজ

আগের সংবাদ

বিধ্বস্ত শহরে ভূতুড়ে নিস্তব্ধতা : আদালতের নিয়মিত বিচারকাজ বন্ধ > অফিসপাড়া নিথর > বন্ধ হাসন রাজা মিউজিয়াম > পথে পথে ক্ষতচিহ্ন

পরের সংবাদ

ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে চলছে ট্রাস সিলিংয়ের কাজ : সৈয়দপুর বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার আশঙ্কা

প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : যাত্রীদের বাড়তি সেবা দিতে সৈয়দপুর বিমানবন্দর টার্মিনালে ট্রাস সিলিং নির্মাণের কাজ চলছে। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে এ কাজটি করা হচ্ছে। ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন এক হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার যাত্রী ঢাকা-সৈয়দপুর ও চট্টগ্রাম যাতায়াত করেন।
এবিসি বোর্ড ব্যবহার করে হচ্ছে ট্রাস সিলিংয়ের কাজ। এতে করে বিমানবন্দরের তাপমাত্রা সব সময় স্থানীয় পর্যায়ে থাকবে। দেশি-বিদেশি উড়োজাহাজ যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে টার্মিনালে অবস্থান করতে পারবেন। ট্রাস সিলিংয়ের কাজটি করছে মুজিব এন্ড সন্স নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে এ কাজে। টার্মিনালের এক লাখ বর্গফুট আয়তনজুড়ে ট্রাস সিলিংয়ের কাজ করা হচ্ছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিডিউলের শর্ত মোটেই মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
৪২ ফুট উঁচুতে লাগানো হচ্ছে ট্রাস সিলিংয়ের বোর্ড। শ্রমিকদের কাজ করার সুবিধার্থে লোহার এমএস পাইপ এবং প্লেন সিট দিয়ে সাটার বেঁধে কাজ করার নিয়ম। অথচ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চিকন বাঁশ ও বাঁশের বাতা দিয়ে তৈরি করছে সাটার। এ প্রতিষ্ঠানটি অধিক মুনাফা করতেই এমএস লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করছে বলে রয়েছে অভিযোগ।
অনুসন্ধান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লোহার এমএস পাইপ ও স্টিল সিট ব্যবহার করলে যেখানে খরচ হবে ১০০ টাকা, সেই কাজ বাঁশ দিয়ে করলে মাত্র ১০ টাকায় করা যাবে। সে জন্যই বাড়তি মুনাফা লুটতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লোহার এমএস পাইপ এবং স্টিল সিটের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করছে। এতে করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শুধুমাত্র কাজ করার সাটার খাতেই অতিরিক্ত লাভ হবে কমপক্ষে এক কোটি টাকা।
বিমানবন্দর টার্মিনালে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ট্রাস সিলিং নির্মাণ প্রসঙ্গে অভিযোগ করেন দেশের বিশিষ্ট আয়কর দাতা ও উড়োজাহাজ যাত্রী মশিউর রহমান মণ্ডল।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে পরিবেশে ট্রাস সিলিং নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে করে যে কোনো মুহূর্তে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। উড়োজাহাজ যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে টার্মিনালে যাতায়াত করছেন। তার মতে, লোহার এমএস পাইপ ও প্লেন সিট দিয়ে সাটার বেঁধে কাজ করলে পরিবেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতো না।
একই অভিযোগ করেন উড়োজাহাজ যাত্রী ইমরান হোসেন, শফিয়ার রহমান, আনজুমান আরা, খলিলুর রহমান, এমদাদ হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি।
সরজমিন গিয়ে সেখানে কথা হয় লেবার সর্দার মহিন উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাঁশ বাঁধার সময় অনেক ঝুঁকিতেই কাজ করতে হয়। তারপরও আমাদের করার কিছু নেই। মালিক কাজ করতে যে নির্মাণসামগ্রী দেবেন তা দিয়েই কাজ করতে হবে।
বিমানবন্দরে সিভিল এভিয়েশন অথরিটির উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) জাহেদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে তার অফিস কক্ষে যাওয়া হয়। কিন্তু অফিস বন্ধ থাকায় তার মুঠোফোনে বার বার দেয়া হয় কল।
তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
কথা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মুজিব এন্ড সন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিপনের সঙ্গে। তিনি মুঠোফোনে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশেই কাজ করতে হয়। সেখানে ইক্যুইপমেন্ট বসানোর মতো জায়গা নেই। অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাঁশ দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এজন্য শ্রমিকদের বলা হয়েছে সাবধানে কাজ করতে।
সিভিল ডিভিশন-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুর হাসিবের মুঠোফোনে একাধিকার কল দেয়া হলেও সংযোগ না মেলায় মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়