সেন্ট লুসিয়ায় ধীরে এগুগোচ্ছে উইন্ডিজ

আগের সংবাদ

বিধ্বস্ত শহরে ভূতুড়ে নিস্তব্ধতা : আদালতের নিয়মিত বিচারকাজ বন্ধ > অফিসপাড়া নিথর > বন্ধ হাসন রাজা মিউজিয়াম > পথে পথে ক্ষতচিহ্ন

পরের সংবাদ

জাল দলিলে সরকারি জমি আত্মসাতের চেষ্টা : জালিয়াতের বিরুদ্ধে বিচারকের মামলা

প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : জাল দলিল তৈরি করে আদালতে মামলা দায়ের করে শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী মৌজার সরকারের দখলে থাকা ১৬ শতক সম্পত্তি আত্মসাতের অপচেষ্টার ঘটনা ফাঁস হয়েছে। এ ব্যাপারে শাহজাদপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক মো. সোহেল রানা বাদী হয়ে জাল দলিল সৃষ্টিকারী মো. আফছার আলী শেখকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। শাহজাদপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম রব্বানীর আদালতে এ মামলা দায়ের হয়।
আসামি মো. আফছার আলী শেখ উপজেলার খুকনী সাকিনের মৃত শামসাদ আলীর পুত্র।
আদালত এ মামলার অভিযোগ সরাসরি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। গতকাল রবিবার শাহজাদপুর আমলী আদালতের পেশকার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন আসামি মো. আফছার আলী শেখ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি ইউনিয়নের খুকনী গ্রামের মৃত শামসাদ আলীর ছেলে মো. আফছার আলী শেখ খুকনী মৌজার এসএ ৮৯৯ নম্বর খতিয়ানের ৩২২৮ দাগ ও আরএস ১২৭৫ খতিয়ানের ৩৬৪৮ দাগে ১৬ শতক সম্পত্তি একটি জাল দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে মালিকানা দাবি করে শাহজাদপুর যুগ্ম জজ আদালতে মামলা দায়ের করলে মামলাটি বিচার নিষ্পত্তির জন্য শাহজাদপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে স্থানান্তর হয়। নালিশি সম্পত্তি সরকারের মালিকানায় হওয়ায় এ মামলায় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়। মামলার আরজিতে আফছার আলী শেখ দাবি করেন, জনৈক যতীন্দ্র নাথ দাস ১১/১১/৬৯ তারিখে ১৩১২০ নম্বর দলিলমূলে ১৬ শতক সম্পত্তি তার বরাবর হস্তান্তর করেন।
নালিশি সম্পত্তি শাহজাদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এখতিয়ারে হলেও মো. আফছার আলী শেখ দলিলটি আত্রাই সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি দেখিয়ে আদালতে দাখিল করেন। দলিলটি কেন আত্রাই সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে সে মর্মে আরজিতে বা সাক্ষীর জবানবন্দিতে মো. আফছার আলী শেখ সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ করেননি।
যতীন্দ্র স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় কিংবা পূর্ববর্তী কোনো এক সময় ভারতে চলে যান, যার ফলে এ সম্পত্তি সরকারের নামে রেকর্ড হয়েছে বলে আদালতে প্রতীয়মান হয়। দাখিলকৃত দলিলটি পর্যালোচনায়ও জাল বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়। যে সময়ে দলিল রেজিস্ট্রির কথা বলা হয়, ওই সময়ে পাক হানাদার বাহিনী রেজিস্ট্রি অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল, যার ফলে ওই অফিসে পুরাতন কোন দলিলের ভলিয়ম বা মূল দলিল পাওয়া যায় না। যার সুযোগ নিয়েছেন মো. আফছার আলী শেখ- এমনটাও আদালতের বিবেচনায় ছিল। মামলার বাদীপক্ষে একজনের সাক্ষ্য শেষে একতরফা সূত্রে বিনা খরচায় ডিসমিস করেন শাহজাদপুর সিনিয়র সহকারী জজ মো. সোহেল রানা। জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল তৈরি করে সরকারের দখলে থাকা সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে দলিলটি আদালতে দাখিল করেছে বলে প্রমাণিত হওয়ায় মো. আফছার আলী শেখের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালতের সেরেস্তাদার আমিরুল মোমেন খান। আদালতে জাল দলিল দাখিলকারীর বিরুদ্ধে বিচারকের মামলা ইতিবাচক হিসেবে দেখছে সচেতন মহল।
আদালতের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, জাল দলিল সৃষ্টি করে আদালতে দাখিল করা নিন্দনীয় কাজ। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।
এডভোকেট আব্দুল আজিজ জেলহক আদালতের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বলেন, বিচার ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। জাল দলিল সৃষ্টিকারী মো. আফছার আলী শেখের বিরুদ্ধে আদালতের ওই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ হ্রাসে নিঃসন্দেহে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। সেসঙ্গে ভূমিদস্যুরাও জাল দলিল সৃষ্টি করে সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করতে ভয় পাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়