সেন্ট লুসিয়ায় ধীরে এগুগোচ্ছে উইন্ডিজ

আগের সংবাদ

বিধ্বস্ত শহরে ভূতুড়ে নিস্তব্ধতা : আদালতের নিয়মিত বিচারকাজ বন্ধ > অফিসপাড়া নিথর > বন্ধ হাসন রাজা মিউজিয়াম > পথে পথে ক্ষতচিহ্ন

পরের সংবাদ

ইছামতির ভাঙনের মুখে দুই শতাধিক পরিবারের বসতঘর

প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তাজুল ইসলাম রাকিব, লৌহজং (মুন্সিগঞ্জ) থেকে : লৌহজং উপজেলার ইছামতি নদী (ডহরি তালতলা খাল) তীরবর্তী খলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও কৃষিজমিসহ দুই শতাধিক পরিবারের বসতভিটা, ঘরবাড়ি ভাঙনের মুখে রয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকার স্কুলের ছাত্র-শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় স্কুলটি নদীতে বিলীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের খলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
নিচ দিয়ে মাটি সরে গিয়ে এই গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়রা। স্কুলের পাশে ফসলসহ আবাদি জমি ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে নদীর গর্ভে। এছাড়া ভাঙনের দুই মিটার দূরে রয়েছে একটি মসজিদ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত বছর ভাঙন দেখা দিলে নদীর ভাঙনরোধে ৪ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। স্কুলের সামনে একটি ছোট গর্ত ছিল, যেটা ভরাট করে দেয়ার কথা ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে সেই গর্তটি ভরাট না করায় এখন বড় আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীর ভাঙনে মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। বর্ষার পানির স্রোতের সঙ্গে যোগ হয়েছে বালু বহনকারী বাল্কহেডের ঢেউ। এবার নদীভাঙন স্কুলটির একেবারেই কাছে চলে এসেছে।
এ অবস্থায় যদি জিওব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে যে কোনো সময় স্কুলটি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। স্কুল, মসজিদ, ফসলি জমি ও বসতভিটা রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা চায় এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক বলেন, এই এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ২০০ পরিবারের বসতভিটা, ঘরবাড়ি ও স্কুল-মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। যে কোনো সময় নদীতে বিলীন হতে পারে।
খলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাহমুদা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টি ১৯৩৫ সালে স্থাপিত।
এরপর নতুন ভবনটি নির্মাণ হয় ১৯৮৯ সালে। আইডিবি ও জিওবির অর্থায়নে বিদ্যালয় ভবনের পাশে আরেকটি টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয় ২০০৪-০৫ অর্থবছরে। বিদ্যালয়ের ভবন থেকে নদী এখন ৪ গজ দূরে অবস্থান করছে। যে কোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে স্কুলটি। স্কুলে ২৮৯ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। প্রায় শত বছরের পুরনো এই স্কুলটি রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই জরুরি।
নদীতে স্বাভাবিকভাবে তেমন ঢেউ না থাকলেও বালু বহনকারী বাল্কহেড চলাচলের ফলে পানিতে বড় বড় ঢেউয়ের সৃষ্টি করে, ফলে ভাঙনের মাত্রা বেড়ে যায়। তিনি আরো বলেন, গত বছর ভাঙনের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় ৪ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, গত বছর স্কুলের সামনে বাঁধ দেয়া হয়েছিল। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, এখানে গত বছর নদীভাঙন রক্ষার্থে আমরা ৪ হাজার জিওব্যাগ ফেলেছি। স্কুল মাঠে একটি গর্ত ছিল যেটা ভরাট করার কথা ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের। সরজমিন দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়