র‌্যাব মহাপরিচালক : নাশকতার তথ্য নেই তবুও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছি

আগের সংবাদ

বাংলাদেশের গর্ব, বিশ্বের বিস্ময় : জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে যেভাবে ডানা মেলল স্বপ্নের পদ্মা

পরের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : আ. লীগ মানেই দেশের সকল অর্জন

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানেই দেশের স্বাধীনতা, মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন। কেননা দেশের সকল অর্জনের সঙ্গেই দলটি জড়িত। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশের স্বাধীনতা, আওয়ামী লীগ অর্থ মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন, আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ, আওয়ামী লীগ অর্থই উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ।
তিনি গতকাল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সেবা করার সুযোগ পেলে তিনি অবশ্যই আগামীতে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। তিনি বলেন, আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি এবং ইনশাআল্লাহ, এই আওয়ামী লীগ যদি জনগণকে সেবা করার সুযোগ পায় অবশ্যই বাংলাদেশ আগামীতে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।
১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হবার পর, একরকম জোর করে নির্বাসন থেকে দেশে ফিরে আসার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাবা-মা সব হারিয়ে ফিরে এসেছিলাম এবং একদিকে যেমন আওয়ামী লীগ আমাকে তাদের সভাপতি নির্বাচন করেছিল, পাশাপাশি এদেশের জনগণ, তাদের আশ্রয়েই আমি এসেছিলাম। তাদের মাঝেই আমি খুঁজে পেয়েছিলাম আমার হারানো বাবা, মা এবং ভাইদের ¯েœহ। তাই এদেশের মানুষের জন্য যে কোনো আত্মত্যাগেই আমি সবসময় প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি। আর সব থেকে বড় কথা হলো, গণমানুষের সমর্থন নিয়েই আমরা সেটা করেছি। এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হবে না। কারো কাছে হাত পেতে চলবে না। আত্মমর্যাদা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু এবং তোফায়েল আহমেদও পয়েন্ট অব অর্ডারে এদিন বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণেরই সংগঠন এবং সবসময়ই এদেশের শোষিত-বঞ্চিত নিপীড়িত মানুষের জন্যই সংগ্রাম করে গেছে। আর এই সংগ্রাম করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, কত পরিবার কষ্ট পেয়েছে, কত মানুষ জীবন দিয়েছে তাদের সেই আত্মত্যাগকে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। মৃত্যুবরণকারীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে ৩ বছর দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিলেন এবং সেই সময়ের মধ্যে তিনি একটি প্রদেশকে রাষ্ট্রে উন্নীত করেন এবং আমাদের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করে যান। অতি অল্প সময়ের মধ্যে ১৯৭৫ সালে দেশটি জাতিসংঘ কর্তৃক স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা লাভ করে। দুর্ভাগ্য আমাদের ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জীবনে অমানিশার আঁধার নেমে আসে। তিনি বলেন, সেদিন আমরা শুধু জাতির পিতাকেই হারাইনি, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সব সম্ভাবনাকেও হারিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত হয় এবং যে সেøাগান দিয়ে এদেশের মানুষ বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছিল সেই ‘জয় বাংলা’ সেøাগানও নির্বাসিত হয়। সেইসঙ্গে ইতিহাস থেকেও জাতির পিতার নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর পর, আওয়ামী লীগ এবং পরবর্তীতে ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার সরকারে আসার পর আজকে বাংলাদেশ সমগ্র বিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে।
আগামীতে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সেই পরিকল্পনাও তার সরকার তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে, সরকারপ্রধান বলেন, ২১০০ সালের জন্য শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ যাতে উন্নত, সমৃদ্ধ হয় সে পরিকল্পনাও তৈরি করে দিয়েছি। এই ধারাবাহিকতা নিয়ে এদেশ চলতে থাকলে, এদেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ থামাতে পারবে না, এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আওয়ামী লীগের অগনিত নেতাকর্মী সবসময় ঝড়-বৃষ্টি, বন্যা, ক্ষরাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবসময় দেশের মানুষের পাশে আছে উল্লেখ করে দলটির সভাপতি বলেন, সরকারে থাকি আর বিরোধি দলে থাকি, যখনই বাংলার মানুষ কোনো সমস্যায় পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবসময় ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এবারের চলমান সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতি যদি দেখেন তাহলেও দেখবেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই সেখানে আগে গেছে এবং তাদের সাহায্য করেছে। পয়েন্ট অব অর্ডারে তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিভিন্ন স্মৃতির কথা তুলে ধরে বলেন, আজ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দলটির প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শ্রদ্ধা জানাই।
বঙ্গবন্ধু একটি লক্ষ্যে যাওয়ার জন্য রাজনীতি করেছেন। দেশকে স্বাধীন করেছেন। আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ এক অনন্য নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাদের মাঝে ফিরে না আসতেন তাহলে আজ পদ্মা সেতু পেতাম না। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ আমরা শেখ হাসিনার মাধ্যমেই করতে পারব। এরপর আমির হোসেন আমু দলের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিকে এদেশে পুনর্বাসিত করেছে বিএনপি। তারা এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে দেশের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের অর্থায়নে আজ পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে। এই সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন। এতে বোঝা যায় বাংলাদেশ আজ কারও মুখাপেক্ষী নয়। আর এটাই প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়