গ্রেপ্তার ৪ ডাকাত : বন্যার কারণে বেড়ে যেতে পারে ডাকাতি আশঙ্কা পুলিশের

আগের সংবাদ

আ.লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

পরের সংবাদ

সিংগাইরের সাহরাইল উচ্চ বিদ্যালয় : আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ

প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) থেকে : সিংগাইর উপজেলার সাহরাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে শিক্ষা অফিসার সৈয়দা নার্গিস আক্তারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় ১ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থীর ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক এ কে এম নজরুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিকের জন্য ২৭৬ জনের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে ৮২ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার পাসের সনদ নিতে ১০০ টাকা করে নেয়া হয়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষার নামে নেয়া হয় ৩০০ টাকা করে। অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ৬৫ টাকার স্থলে ৩০০ টাকা করে আদায়ের নোটিস দেয়া হয়। পরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপের মুখে ১০০ টাকা করে নিতে বাধ্য হন। একইভাবে ২০২০ সালে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১২০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা করে হাতিয়ে নেয়া হয়। এসব অনিয়মের ঘটনা প্রকাশ পাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বাসা ভাড়া বাবদ বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে প্রতি মাসে বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা করে নিলেও তিনি রাত যাপন করেন বিদ্যালয় ভবনের ছাত্রীদের নামাজ পড়ার কক্ষে। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক। তারা জানান, এর আগে প্রধান শিক্ষক পার্শ্ববর্তী গোপালনগর গ্রামের জনৈক মাহামের বাড়িতে ভাড়া থাকার সময়ে নারীসহ এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েছিলেন। তখন মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে রক্ষা পান।
করোনাকালীন ১৯ মাসের বেতন ও বাড়ি ভাড়া উত্তোলন করলেও একদিনের জন্যও বিদ্যালয়ে আসেননি তিনি। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম শিরুকে জনৈক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ থেকে রেহাই দেন তিনি। এ নিয়ে মামলা, বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হলেও প্রধান শিক্ষক শিরুর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেন। ফলে অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম স্কুলে চাকরিতে পুনর্বহাল হন।
এদিকে স্কুল মার্কেটের অর্ধশতাধিক দোকান ভাড়ার টাকার সঠিক হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। প্রধান শিক্ষকের চাকরিকালীন সাত বছরেও হয়নি কোনো অভ্যন্তরীণ অডিট। এর আগে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে আবেদনকারী প্রত্যেকের কাছ থেকে পোস্টাল অর্ডার বাবদ ১ হাজার টাকা করে নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। স্কুল ভবন সংস্কার কাজ শেষে বিপুল পরিমাণ লাল বালু ও খোয়া হঠাৎ রাতের আঁধারে উধাও হয়ে যায়। প্রধান শিক্ষকের কোনো জবাবদিহিতা না থাকায় কাউকে কিছু না জানিয়ে স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন তিনি। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক এ কে এম নজরুল ইসলাম আর্থিক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ছাত্রীকে যৌন হয়রানির মামলা মীমাংসার সঙ্গে আমি জড়িত নই। উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দা নার্গিস আক্তার বলেন, তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। জুন ক্লোজিংয়ে ব্যস্ততার কারণে কাজ শুরু করতে পারিনি। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিনা পারভীন বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকে শুনলাম। আমি খতিয়ে দেখব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়