গ্রেপ্তার ৪ ডাকাত : বন্যার কারণে বেড়ে যেতে পারে ডাকাতি আশঙ্কা পুলিশের

আগের সংবাদ

আ.লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

পরের সংবাদ

যশোর মুসলিম একাডেমি : তথ্য জালিয়াতি করে বেতন ভাতা নিচ্ছেন ৫ শিক্ষক

প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

যশোর প্রতিনিধি : যশোর শহরের মুসলিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ ও তথ্য জালিয়াতি করে নিয়মিত বেতন-ভাতা টাইম স্কেলসহ যাবতীয় সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন পাঁচ শিক্ষক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে সব জাল-জালিয়াতির তথ্য প্রমাণিত হওয়ার পর দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
অভিযুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন- সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) প্রদীপ কুমার দত্ত, সহকারী শিক্ষক (বাংলা) সালমা আক্তার, সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) এইচ এম ইকবাল, সহকারী শিক্ষক (বাংলা) তৈয়্যবা খাতুন ও সহকারী শিক্ষক (কৃষি) লায়লা নাহার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর থেকে মুসলিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা পরিদর্শক আব্দুস সালামের নেতৃত্বে পরিদর্শন ও নিরীক্ষণ করা হয়। সেই পরিদর্শন ও নিরীক্ষণ প্রতিবেদনে পাঁচ শিক্ষকের জাল-জালিয়াতির তথ্য স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) প্রদীপ কুমার দত্ত ২০১০ সালের ২১ জুন বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। তার নিয়োগের জন্য ২০১০ সালের ৮ জুন একটি স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদনের জন্য ১৫ দিন সময় দিতে হবে। ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি। এতে যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। প্রজ্ঞাপন লঙ্ঘন করে প্রদীপ কুমার দত্ত নিয়োগ নিয়েছেন।
সালমা আক্তার ২০০৬ সালের ১ নভেম্বর সহকারী শিক্ষক (বাংলা) পদে যোগদান করেন। ওই শিক্ষকের সহকারী শিক্ষক বাংলার নিবন্ধন সনদ নেই। তিনি প্রভাষক (বাংলা) পদের নিবন্ধন ব্যবহার করে নিয়োগ নিয়েছেন। তাছাড়া তার নিয়োগের জন্য কোনো জাতীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি। সেই হিসেবে তার নিয়োগ পুরোপুরি অবৈধ।
এইচ এম ইকবাল ১৯৯৫ সালের ১ জুলাই সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) হিসেবে যোগদান করেন। সেই সময় ওই পদে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা চেয়ে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। কিন্তু তার অভিজ্ঞতার উপযুক্ত ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি। সেই হিসেবে তার নিয়োগও অবৈধ।
সহকারী শিক্ষক (বাংলা) তৈয়্যবা খাতুন ২০০০ সালের ১৩ নভেম্বর যোগদান করেন। তিনি চাকরিরত অবস্থায় ২০০৫ সালে বিএড সনদ অর্জন করেন। ২০০৬ সালের ১ জুলাই তিনি ৫ হাজার ১০০ টাকার টাইম স্কেল গ্রহণ করেন। বিধি মোতাবেক ২০১৪ সালের ১ জুলাই থেকে তিনি ১১ হাজার টাকার স্কেল প্রাপ্য হবেন। সেই হিসেবে ২০১১ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ হাজার টাকার স্কেল গ্রহণ করায় তাকে অতিরিক্ত টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে।
লায়লা নাহার সহকারী শিক্ষক (কৃষি) হিসেবে ২০১০ সালের ৬ জুন যোগদান করেন। তিনি তৃতীয় শ্রেণির বিএসসি ডিগ্রিধারী বিধায় ৬ হাজার ৪০০ টাকার স্কেল প্রাপ্য ছিলেন। কিন্তু তিনি ২০১০ সালের ১ জুলাই থেকে ৮ হাজার টাকার স্কেলে এমপিওভুক্ত হন। তিনি অবৈধভাবে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি নতুন এসেছি। সভাপতির নির্দেশনা ছাড়া আমি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারব না।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ কে এম গোলাম আযম বলেন, বিষয়টি সঠিক হলে শিক্ষা মন্ত্রণলায়ের প্রতিবেদনের পর ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল। কেন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি এটা আমার জানা নেই। আমি পুরো বিষয়টি জেনে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেব।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি রাজিবুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের অনুকূলে কোনো নির্দেশনাপত্র আসেনি। বিষয়টি সত্য হলে অবশ্যই বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়