কাগজ প্রতিবেদক : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর পক্ষে আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন এ রিট করেন। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এসএম মুনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্যে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান আসাদ উদ্দিন। রিটে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটকারী অন্য আইনজীবীরা হলেন- মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন, মো. জোবায়দুর রহমান, আল রেজা মো. আমির, মো. রেজাউল ইসলাম, কে এম মামুনুর রশিদ, মো. আশরাফুল ইসলাম, শাহীনুর রহমান, মো. রেজাউল করিম এবং মো. আলাউদ্দিন।
গত ৩১ মে সুপ্রিম কোর্টের এই ১০ আইনজীবীর পক্ষে আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিস পাঠান। নোটিস পাঠানোর পরও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় এ রিট আবেদন করা হয়।

আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন জানান, কাজী নজরুল ইসলাম মৌখিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু লিখিতভাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই। বলা হয়ে থাকে, ১৯২৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর কলকাতার আলবার্ট হলে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সর্বভারতীয় বাঙালিদের পক্ষ থেকে কবিকে জাতীয় সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। ঐ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কাজী নজরুলকে ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে মুখে মুখে তিনি জাতীয় কবি হয়ে আছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারিভাবে তাকে জাতীয় কবি হিসাবে ঘোষণা করে কোনো প্রজ্ঞাপন বা গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবিকে বাংলাদেশে আনা হয়। বসবাসের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ধানমন্ডিতে তাকে একটি বাড়ি দেয়া হয়। বাংলাসাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়ে সরকারি আদেশ জারি করা হয়। ১৯৭৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তাকে ‘একুশে পদক’ দেয়া হয়। সবকিছুরই ছবি, তথ্যসহ লিখিত দলিল আছে। কিন্তু নির্মম সত্য এটিই যে, ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে সরকারি ঘোষণার কোনো লিখিত দলিল নেই।