দৈনিক ওঠানামার মধ্যেই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

আগের সংবাদ

জনগণের সাহসেই পদ্মা সেতু : বন্যার দুর্ভোগ ও ক্ষতি কমাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার > বিএনপির নেতা কে? সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন সেই ইউএনও

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নোটিস জারি করতে যাওয়া আদালতের দুই কর্মচারী কামাল হোসেন ও মেহেদী হাসানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিচারের হুমকি দেয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজাউল করিম। গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে তার ক্ষমা প্রার্থনার আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
নোটিস জারি করতে যাওয়া আদালতের দুই কর্মচারীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ বিষয়ে তার ভূমিকা কী ছিল সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ইউএনও ও তার নাজির উকিল মিয়াকে গত ৭ জুন তলব করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুলে তাদের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার কার্যক্রম নেয়া হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট। এ সময় আদালতে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। সেই প্রেক্ষিতে তারা গতকাল আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা চান।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় জানান, ফরিদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে ওই ঘটনা লিখিতভাবে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জানানো হয়। এরপর প্রধান বিচারপতি বিষয়টি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান। পরে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অবমাননার রুলসহ ওই আদেশ দেন।
বোয়ালমারীর আদালত থেকে পাঠানো এ সংক্রান্ত অবহিতকরণপত্র থেকে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল বোয়ালমারী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের দেওয়ানি মামলার (৫৩/২০২২) নোটিস জারি করতে জারিকারক কামাল হোসেন ও মেহেদী হাসান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। সেদিন দুপুর আড়াইটার দিকে নাজির উকিল মিয়ার কাছে নোটিস গ্রহণের অনুরোধ জানালে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে তাদের অপেক্ষায় রাখেন।
বিকাল ৪টার দিকে তারা আবারো নাজিরের কাছে গেলে তিনি উত্তেজিত হয়ে তাদের উপরের তলায় গিয়ে বসতে বলেন।
অন্য জায়গায় সমন জারির কাজ আছে জানালে উকিল মিয়া বলেন, তাতে তার কী, জজকোর্টের নোটিস না রাখলে তার কী হবে? তিনি এর চেয়ে বড় কাজে ব্যস্ত আছেন। তিনি নোটিস পাশের টেবিলে দিতে বললে সেখানে দায়িত্বরত কর্মচারী নোটিস বুঝে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
জারিকারক বিষয়টি আদালতকে অবহিত করবেন বললে উকিল মিয়া বলেন, জজের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, আমরা নির্বাহী বিভাগের লোক। নোটিস না রাখলে আমাদের কিছুই হবে না। একপর্যায়ে নোটিস বুঝে নেন উকিল মিয়া। এরই মধ্যে ওই অফিসের একজন কর্মচারী বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করলে তিনি জারিকারক দুজনকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে দরজা আটকিয়ে জেরা করতে থাকেন।
স্টাফদের সঙ্গে বাজে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জারিকারকদের সাজা দেয়ার হুমকি দেন ইউএনও। একপর্যায়ে ইউএনও রেজাউল করিম এ সময়ে তাদের মোবাইল কেড়ে নেন ও মুচলেকা দিয়ে চলে যেতে বলেন। একপর্যায়ে পা ধরে মাফ চাইতে বাধ্য করেন ইউএনও। এরপর জোর করে নির্দেশনামতে মুচলেকা লিখিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
অবহিতকরণপত্রে আরো বলা হয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মুক্ত হয়ে ওই দুজন জারিকারক বিষয়টি প্রথমে জেলা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত নাজির রফিকুল ইসলামকে জানান। পরে নাজির বিষয়টি নেজারত শাখার ভারপ্রাপ্ত জজকে জানান। জারিকারকদের লিখিত অভিযোগ পরে নেজারত শাখার ভারপ্রাপ্ত জজ সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়