দৈনিক ওঠানামার মধ্যেই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

আগের সংবাদ

জনগণের সাহসেই পদ্মা সেতু : বন্যার দুর্ভোগ ও ক্ষতি কমাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার > বিএনপির নেতা কে? সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

সুর পাল্টালেন চসিক মেয়র! : জলাবদ্ধতার কারণ খালের বাঁধ নয়, দোষ নগরবাসীর

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : বন্দরনগরীর সাম্প্রতিক জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগের জন্য এতদিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-চউকর ওপর দোষ চাপিয়ে আসলেও এবার সুর পাল্টালেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে মেয়রের বাড়িসহ নগরীর অধিকাংশ এলাকা কোমর থেকে হাঁটু পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণ হিসেবে চউক বাস্তবায়নাধীন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন খালে বাঁধ দেয়াকে চিহ্নিত করেন মেয়র। কিন্তু এবার সুর পাল্টে নগরবাসীর ওপর দোষ চাপালেন তিনি। মানবসৃষ্ট বর্জ্যরে কারণে খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় নগরীতে জলাবদ্ধতা তীব্র আকার ধারণ করেছে- এমন অভিযোগ করে মেয়র নালা, খাল ও রাস্তাসহ যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
নগরীর বিভিন্ন জলমগ্ন এলাকার পানি দ্রুত নামতে না পারার কারণ খুঁজতে বিভিন্ন এলাকা পরির্দশনে যান মেয়র এবং অনুসন্ধান চালান। নগরীর তক্তারপুল এলাকার অপসারণকৃত বাঁধ পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, চকবাজার, ফুলতলা, বাকলিয়া, বহরদ্দারহাট, খাজা রোড, পাঠানিয়াগোদা এলাকায় পানি না নামার মূল কারণ হচ্ছে মানবসৃষ্ট বর্জ্যরে কারণে খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়া। এসব এলাকায় খালগুলো চউক’র মেগা প্রকল্পের আওতাধীন হওয়া সত্ত্বেও জনদুর্ভোগ লাঘবে চসিক খালগুলো থেকে আবর্জনা ও মাটি উত্তোলন করে পানি চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। কিন্তু জনগণের অসচেতনতার কারণে বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই পরিষ্কার করা এসব খাল আবার বর্জ্য ফেলার কারণে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। সে কারণে কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি প্রকট আকার ধারণ করে।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সেবামূলক সংস্থাগুলোর নাগরিক সেবা নিশ্চিত করাই মুখ্য কাজ। তবে নগরীতে যেসব সেবা সংস্থা আছে তাদেরকেও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেষ্ট থাকতে হবে। চউক কর্তৃক জলাবদ্ধতার মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে খাল ও মাটি ভরাট করা হয়েছে। অনেকগুলো বাঁধ অপসারণ করা হলেও কিছু কিছু অংশে বাঁধ ও মাটির স্তূপ প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে রাখতে হয়েছে। এটাই বাস্তবতা। এখানে কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাউকে দোষারোপ করার কোনো সুযোগ নেই।
এ ধরনের কথাবার্তা সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার শামিল। দুর্যোগ-দুর্বিপাক যে কারণেই হোক না কেন আমাদের উচিত যার যার অবস্থান থেকে সমন্বয়ের মাধ্যমে তা মোকাবিলা করা। যারা নগরীর নালা, খাল ও রাস্তায়সহ যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে তাদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মেয়র বলেন, সরকার ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১’র মাধ্যমে এজন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুই বছরের জেল বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন প্রণয়ন করেছে। ভবিষ্যতে দায়ীদের বিরুদ্ধে এ আইন প্রয়োগ করতে আমরা বাধ্য হব। এখানে যে যত শক্তিধরই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি নগরবাসীর উদ্দেশে বলেন, মেয়রের দায়িত্ব নেয়ার পর বিনীতভাবে অনেক আবেদন-নিবেদন করেছি। এই বিনীত অনুরোধকে আমার দুর্বলতা ভাববেন না। যেখানে আমার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে সেক্ষেত্রে কোনো অবস্থাতে কাউকেই ছাড় দেয়ার অবকাশ নেই। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যাদের বাড়ির সামনে, দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে, ড্রেনে, খালে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ দৃশ্যমান হবে তাদের বিরুদ্ধে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন প্রয়োগ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়