দৈনিক ওঠানামার মধ্যেই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

আগের সংবাদ

জনগণের সাহসেই পদ্মা সেতু : বন্যার দুর্ভোগ ও ক্ষতি কমাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার > বিএনপির নেতা কে? সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

চাপ কমবে বঙ্গবন্ধু, লালনশাহ ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজে : পদ্মা সেতু বদলে দেবে উত্তরাঞ্চলের চিত্রও

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোস্তাক আহমেদ কিরণ, ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে : পদ্মা সেতুকে ঘিরে মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। ২৫ জুন রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি সড়কপথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হবে। গাড়ির চাকার সঙ্গে ঘুরবে অর্থনীতিরও চাকা। কাক্সিক্ষত এ সেতুর মাধ্যমে একদিকে যেমন দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি যোগসূত্র তৈরি হবে, ঠিক তেমনি এই সেতু ঘিরে ওই অঞ্চলে নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। রাজধানীতে যাতায়াতে সময় লাগবে আগের তুলনায় অর্ধেক।
পদ্মা সেতুর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে বদলে যাবে উত্তরাঞ্চলের চিত্র। একদিকে উত্তর-দক্ষিণে ব্যবসা-বাণিজ্য বিকেন্দ্রীকরণের সুবিধা বাড়বে বহু গুণ, অন্যদিকে পদ্মা সেতুর কারণে মোংলা পোর্ট সচল হয়ে উত্তরাঞ্চলে শিল্প বিপ্লব ঘটবে বলে জানিয়েছেন এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। পদ্মা সেতু চালু হলে উত্তরাঞ্চলের সড়ক ও রেলপথের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবেন গোটা উত্তরাঞ্চলবাসী। বিশেষ করে ঈদ বা বিভিন্ন উৎসবের আগে ও পরে সিরাজগঞ্জ থেকে টাঙ্গাইল হয়ে ঢাকার পথে যে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হয় তা থেকে পরিত্রাণ আসবে। পাকশীর লালনশাহ সেতু ও সিরাজগঞ্জের যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে বাস-ট্রাকের চাপ কমবে।
পাকশী বিভাগীয় বাণ্যিজিক কর্মকর্তা (ডিসিও) মো. নাসের উদ্দিন বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ চাইবেন পদ্মা সেতু দিয়ে সড়কপথে কম সময়ে যাতায়াত করতে। ফলে পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঈশ্বরদী হয়ে রেলপথে ঢাকাগামী ট্রেনযাত্রীর চাপ কিছুটা কমবে।
পদ্মা সেতু কেবল একটি নাম নয়, এটি একটি স্বপ্ন। যে স্বপ্ন এখন বাস্তব। পদ্মা সেতু বাঙালির আত্মমর্যাদার বলেছেন পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নুরুজ্জামান বিশ্বাস।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময় সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তারই উত্তরসূরি শেখ হাসিনা এখন স্বপ্ন দেখছেন, স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। যার অনন্য বহিঃপ্রকাশ পদ্মা সেতু। একসময় পদ্মা সেতু বাংলাদেশের স্বপ্ন ভাবা হতো এখন পদ্মা সেতু দৃশ্যমান।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের পথ মোটেই মসৃণ ছিল না। একদিকে প্রমত্তা পদ্মার বুকে সেতু নির্মাণের জটিল প্রকৌশলগত চ্যালেঞ্জ, অপরদিকে দেশের একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র, বিশ্বব্যাংকের তথ্য-উপাত্তবিহীন ও অনুমাননির্ভর ভ্রান্ত অভিযোগ ও তার ফলে অর্থায়নের অনিশ্চয়তা পদ্মা সেতু নির্মাণের পদক্ষেপে জগদ্দল পাথরের মতো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল।
পদ্মা নদীর উপর বহুমুখী আর্থসামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুর’ নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১১ সালে এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকার ৪ জুলাই ২০০১ সালে মাওয়া প্রান্তে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১২ সালের জুলাইয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব তহবিল দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে। বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রত্যাখ্যান করে সম্পন্ন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। সেতুটির ফলে যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে সেই সঙ্গে বদলে দেবে উত্তরাঞ্চলের চিত্রও।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়