বন্যায় উদ্ধার ও ত্রাণ : সরকারের উদাসীনতার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ বাম জোটের

আগের সংবাদ

ত্রাণ পৌঁছেনি প্রত্যন্ত জনপদে : এখনো পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ, সিলেট বিভাগে বন্যায় ২২ জনের মৃত্যু

পরের সংবাদ

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাওছার : ৩১ বছর ছদ্মবেশে আত্মগোপনে ছিলেন

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানী গুলশান থানার বারিধারা থেকে হত্যা মামলার আসামি মো. কাওছারকে (৬৩) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় তাকে।
র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার মো. কাওছার মানিকগঞ্জ সদর এলাকার আজহার হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। নিহতের বোনের সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরেই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়। সেই মামলায় গ্রেপ্তার হন কাওছার। পরে জামিনে বের হয়ে পালিয়ে যান তিনি। এরপর ৩১ বছর ধরে নানা ছদ্মবেশে পালিয়ে থাকেন কাওছার। ধান ক্ষেতে সেচের কাজ করলেও পালানোর পর প্রথমদিকে তিনি রাজমিস্ত্রি, ইলেক্ট্রিক ও স্যানিটারি মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন। পরে ড্রাইভিং শিখে সিএনজি চালান। বর্তমানে প্রাইভেটকারের চালক হয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।
কাওছারকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে র‌্যাব-৪ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, নিহত আজাহার ও কাওছার মানিকগঞ্জের চর হিজুলো গ্রামের বাসিন্দা।
তারা স্থানীয় এলাকায় একসঙ্গে ইরি ধানের ক্ষেতে পানি সেচের কাজ করত। কাজ করার সুবাদে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। একে অপরের বাড়িতে অবাধে যাতায়াত ছিল। এরই মধ্যে আজাহারের বিবাহিত বোন অবলার সঙ্গে কাওছারের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভিকটিম ও কাওছারের মধ্যে ঝগড়া হয়। এই ঝগড়ার জের ধরেই ১৯৯১ সালের ১৪ জুন আজাহারকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে কাওছার ও তার সহযোগীরা। ওই দিনই নিহতের ভাই কাওছারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন মানিকগঞ্জ থানায়।
মামলার পর কাওছারসহ আরো কয়েকজন এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুমাস হাজতবাসের পর ১৯৯১ সালে জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান কাওছার। এর মধ্যে ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. কাওছার, ওমর, রুহুল আমিন, আসমান ও রফিজকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ১৯৯২ সালে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ এই মামলায় কাওছারকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দেন। বাকি আসামি ওমর, রুহুল আমিন, আসমান ও রফিজ প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সাজা দেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা পাঁচ বছর সাজাভোগের পরে উচ্চ আদালতে আপিল করে বর্তমান আদালতের নির্দেশে জামিনে আছেন।
কাওছার মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দুই মাস হাজতে থেকে জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই গত ৩১ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। ১৯৯১ সালের পর থেকে কাওছার আর কোনোদিন মানিকগঞ্জে যাননি। তিনি আরো বলেন, ৩১ বছর ধরে আসামি কাওছার তার নাম পরিবর্তন করে ইমরান মাহামুদ নাম ব্যবহার করে ছদ্মবেশ ধারণ করেন। প্রথমে গাজীপুর, কালিয়াকৈর, পুবাইল, উত্তরা, টঙ্গীসহ ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। ওই সময় নিজের পরিচয় গোপন করার জন্য ক্রমাগতভাবে পেশা পরিবর্তন করতেন। র‌্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, কাওছার পালিয়ে ঢাকায় চলে আসার পর নিজেকে আড়াল করার জন্য মো. ইমরান মাহামুদ নাম ধারণ করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতা- শাহিন মাহামুদ, গ্রাম-নান্দুয়াইন, থানা-গাজীপুর, জেলা- গাজীপুরকে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়