বন্যায় উদ্ধার ও ত্রাণ : সরকারের উদাসীনতার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ বাম জোটের

আগের সংবাদ

ত্রাণ পৌঁছেনি প্রত্যন্ত জনপদে : এখনো পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ, সিলেট বিভাগে বন্যায় ২২ জনের মৃত্যু

পরের সংবাদ

বাংলাদেশ ব্যাংক : কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জনে আসছে নতুন মুদ্রানীতি

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে ক্রমেই বাড়ছে মূল্যস্ফীতির হার। এ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। কিন্তু গত মে মাসে একটু বেশিই বেড়েছে। এক লাফে বেড়ে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এক মাসের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতির এত বড় উল্লম্ফন গত কয়েক বছরে দেখা যায়নি। ২০০৯ সালের পর মূল্যস্ফীতি কখনই এতটা বেশি হয়নি। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ হার ১০ শতাংশের আশপাশে ছিল। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানো, কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জন ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ৩০ জুন এটি ঘোষণা করা হতে পারে। এবারের মুদ্রানীতি অনলাইনের পরিবর্তে সরাসরি ঘোষণা করবেন বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবির।
সূত্রে জানা গেছে, সরকার সুদের হার নির্ধারণ করে রেখেছে। পাশাপাশি ডলারের দামও পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হচ্ছে না। আবার সরকার ব্যাংক খাত থেকে এক লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। ফলে মুদ্রানীতিতে বৈচিত্র্য দেখানোর কিছু নেই। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতির বিষয়টি ভুলে গিয়ে জিডিপি অর্জনের জন্য যা করা প্রয়োজন, মুদ্রানীতিতে তাই থাকবে। তবে বিগত বছরগুলোতে ঘোষিত মুদ্রানীতির আলোকে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতির তেমন কোনো কার্যকারিতা নেই। ঘোষণা দেয়ার মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ। কারণ, নীতিনির্ধারণী সুদ হারে শিগগিরই তেমন পরিবর্তন হয় না।
দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য, বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে উৎপাদনক্ষমতা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। এতে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অস্ত্র হলো মুদ্রানীতি। মুদ্রানীতির দুটি বাহক হচ্ছে সুদ আর বিনিময় হার। এর দুটোই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে নেই। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্য কোনো উদ্যোগও কাজে আসছে না। আবার এখন যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে, তা সরবরাহজনিত। ফলে দেশি উদ্যোগেও কাজে আসবে না। জানা গেছে, চলতি জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত এপ্রিল পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সরকারি–বেসরকারি মিলে জুন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ১৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ, এপ্রিল পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ফলে ব্রড মানির প্রবৃদ্ধি গত এপ্রিল পর্যন্ত বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ৮৮ শতাংশ, যদিও জুন পর্যন্ত লক্ষ্য ১৫ শতাংশ।
এদিকে ডলারের দাম ৮৪ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৯৩ ছুঁই ছুঁই। তবে আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের দাম এখন ৯৫ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আর মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে মেয়াদি আমানতের সুদও বাড়াতে হবে। ফলে ব্যাংক পড়েছে বিপাকে। কারণ, ঋণের সুদ ৯ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। এমন সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সময়োপযোগী নীতি আশা করছেন ব্যাংকাররা। তারা বলছেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়াতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ রয়েছে, যার বড় অংশ বিতরণ হয়েছে। এসব টাকা ব্যাংকে ফেরত আনা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এর পরিবর্তে আরো ঋণ দেয়ার লক্ষ্য ঠিক করলে তা অর্থনীতির জন্য বুমেরাং হতে পারে। পাশাপাশি ব্যাংক থেকে বেনামি ঋণ বন্ধ করে এ খাত নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ প্রয়োজন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়