বন্যায় উদ্ধার ও ত্রাণ : সরকারের উদাসীনতার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ বাম জোটের

আগের সংবাদ

ত্রাণ পৌঁছেনি প্রত্যন্ত জনপদে : এখনো পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ, সিলেট বিভাগে বন্যায় ২২ জনের মৃত্যু

পরের সংবাদ

ফেনীতে বাঁধ ভেঙে ১৫ গ্রাম প্লাবিত

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শুকদেব নাথ তপন, ফুলগাজী (ফেনী) থেকে : টানা দুুদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় নদী রক্ষা বাঁধের চার স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ১৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল পর্যন্ত কহুয়া ও মহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার ভোরের দিকে ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়া এলাকার রতন মেম্বারের বাড়িসংলগ্ন স্থানে ও সকাল ৭টার দিকে সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর এলাকার সেকান্তর মাস্টার বাড়িসংলগ্ন স্থানে বাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হয়। বেলা ১১টার দিকে একই ইউনিয়নের দেড়পাড়ায় আরেকটি বাঁধ পানিতে ভেসে যায়। ফলে দেড়পাড়া, নিলক্ষী, পশ্চিম বসন্তপুর, উত্তর নিলখী, গাবতলা, মনতলা, গোসাইপুর, নোয়াপুর, উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর ও বৈরাগপুর ও দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়া এলাকা প্লাবিত হয়। পরশুরাম উপজেলার পশ্চিম অলকা গ্রামের একটি স্থান ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে।
ঘনিয়ামোড়া এলাকার বাসিন্দা জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাজি জামাল উদ্দিন বলেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নদীর ভাঙন দেখা দিতে পারে। তাই সতর্কতামূলক পূর্ব প্রস্তুতি নেয়া অনেক জরুরি।
ফুলগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান ফুলগাজী বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মো. সেলিম বলেন, ফুলগাজীতে নিলামের মাধ্যমে নদীর বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে নদীর পলি মাটি সরে গিয়ে যে কোনো স্থানে ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া নদীর সরু পথ প্রস্তুতি না করা ও বাঁশঝাড় না কাটলে নদী

গতিপথ পরিবর্তন করলে ভাঙন রোধ অসম্ভব হয়ে পড়বে।
পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় আরো নতুন নতুন এলাকায় ভাঙন সৃষ্টি হতে পারে বলেন স্থানীয়রা। ভাঙন মেরামতে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বিপুল পরিমাণ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে বানভাসিদের জন্য শুকনা খাবারের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পুলিশ বিভাগ থেকে জরুরি সেবার জন্য একটি মোবাইল নম্বর চালু করে প্রয়োজনীয় ফোর্স প্রস্তুত করা হয়েছে। মো. সেলিম নদীভাঙনের স্থান পরিদর্শন করে বলেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এবং পানির চাপ না কমলে দেড়পাড়া, উত্তর নিলক্ষী, দক্ষিণ নিলক্ষী ও গোসাইপুর এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার আবদুল্যা আল মামুনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফুলগাজী সদর এবং দরবারপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর ও উত্তর বরইয়া এলাকায় নদীর বাঁধ ভেঙে জনপদে পানি প্রবেশ করছে। আপনাদের যে কোনো প্রয়োজনে জেলা পুলিশ আপনাদের পাশেই আছে। এ বিষয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটা হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে ফুলগাজী থানা ডিউটি অফিসারের নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুন্নাহার বলেন, বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য আপাতত ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আকতার হোসেন জানান, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদী রক্ষা বাঁধের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১২২ কিলোমিটার এলাকায় পানির চাপ এখনো বাড়ছে। সকালে পানির প্রবাহ ১০৩ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়। দুপুরে তা বেড়ে বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়