সিলেট অফিস : সিলেট সিটি করপোরেশন, সেনাবাহিনী আর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দুদিনের প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এতে নগরীর বশির ভাগ এলাকাতেই ফিরেছে বিদ্যুৎ।
সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যার শুরুতেই সিলেটের শাহজালাল উপশহর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানিতে ডুবে যায়। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিলে নগরীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত শাহজালাল উপশহর ও এর আশপাশের এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। এর একদিন পর গত শনিবার পানি ঢুকে সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এতে উপশহরের মতো সারা সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে সেনাবাহিনী ও সিলেট সিটি করপোরেশন অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চালায়। তবে সেই বাঁধ উপচে পানি ঢুকতে থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে আবারো বিঘœ ঘটে। তবে দুদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর সিলেট শহরের একাংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়।
তবে রবিবার রাত থেকে বৃষ্টি না থাকায় গতকাল সোমবার দুপুরের দিকেই কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পানি নেমে গেছে। ফলে সোমবার বিকাল পর্যন্ত সিলেটের বেশির ভাগ স্থানে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে। এ ছাড়া রবিবার শাহজালাল উপশহরের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে সঞ্চালন উপযোগী করা হয়েছে। গতকাল সোমবার উপশহরের আশপাশের কয়েকটি এলাকাতেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসে।
সোমবার কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বন্যার এই বিপদে যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেত তবে আমরা নগরবাসী আরেকটি মহাসংকটের মধ্যে পড়ে যেতাম। আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ত। কেউ কারো কোনো খোঁজ নিতে পারতাম না। পানিবন্দি মানুষসহ নগরবাসীর দুর্ভোগ বেড়ে যেত অনেকাংশে। তাই অতি জরুরি বিবেচনায় সিলেট সিটি করপোরেশন কুমারগাঁও কেন্দ্রটি সচল রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়।
তিনি বলেন, এই চেষ্টায় সিলেটের সব প্রশাসন, দপ্তর-সংস্থাসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে। সেনা সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্লাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঞ্চালন অব্যাহত রাখার উপযোগী অবস্থায় রাখতে সক্ষম হয়। এজন্য আমি সিলেট নগরবাসীর পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই। এ ছাড়া মেয়র তার বক্তব্যে সিলেট জেলা প্রশাসন, বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সিসিকের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতি ধন্যবাদ জানান।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে সিলেট সেনানিবাসের মেজর খন্দকার মো. মুক্তাদির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সচল করতে সহযোগিতা করায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র, বিদ্যুৎবিভাগসহ সব সরকারি দপ্তর ও সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।
এদিকে সোমবার সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেন সিসিক মেয়র এবং সেনাবাহিনীর একটি দল। বন্যায় তলিয়ে থাকা বরইকান্দি কেন্দ্রটিও বাঁধ দিয়ে সেচের মাধ্যমে সঞ্চালন উপযোগী করতে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।