বন্যায় উদ্ধার ও ত্রাণ : সরকারের উদাসীনতার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ বাম জোটের

আগের সংবাদ

ত্রাণ পৌঁছেনি প্রত্যন্ত জনপদে : এখনো পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ, সিলেট বিভাগে বন্যায় ২২ জনের মৃত্যু

পরের সংবাদ

আসামে মৃত্যু ৭১ : বন্যায় বিপর্যস্ত উত্তরপূর্ব ভারত

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ভয়াবহ বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো। আসামে বন্যায় মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। রাস্তায় ধস নেমে বন্ধ অরুণাচলের একাধিক পাহাড়ি রাস্তা। ত্রিপুরার একাধিক অঞ্চলে রাস্তায় নৌকা চলছে। বন্যা এবং ধসে বিধ্বস্ত মেঘালয়। বন্যা পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের তিনটি জেলায়। দার্জিলিং-কালিম্পংয়ের রাস্তায় ধস। তবে এখনো পর্যন্ত বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে আসামে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন শিশুসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আসামের বন্যায় মোট মৃতের সংখ্যা ৭১ ছাড়াল। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ। ঘরছাড়া লাখ লাখ মানুষ। সূত্র পিটিআই।
আসামের কাছার, হায়লাকান্দি, বরপেটা, কামরুপ, করিমগঞ্জসহ মোট ৩৩টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। গত রবিবার কাছারে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধসের কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানায়। এখনো পর্যন্ত বন্যা এবং ধসে প্রায় ৪২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বহু মানুষ বাড়িছাড়া, তাদের ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। গত রবিবার ৪ জন নিখোঁজ হন বলে পুলিশ সূত্র জানায়। একদিকে বৃষ্টি আর অন্যদিকে পাহাড়ি ঢল। ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত সিলেটও। সূত্র জানায়, গত শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার বেশির ভাগ এলাকাই পানিতে তলিয়ে যায়। জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলারও বিস্তীর্ণ এলাকাও পানিবন্দি। পানি বাড়ছে সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, জকিগঞ্জ ও বিশ্বনাথ উপজেলায়।
আসামের ৫ হাজার ১৩৭টি গ্রাম আপাতত জলের তলায় বলে জানায় প্রশাসন। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বরপেটা জেলার। সেখানে ১২ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ বন্যার কারণে ঘরছাড়া। দারাং এবং নওগাঁওয়ের অবস্থাও ভয়াবহ। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বেশ কিছু গ্রাম কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে। চর এলাকাতেও পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। কাজিরাঙা অভয়ারণ্যের ভেতরে বন্যার জল ঢুকেছে বলে জানা গেছে। প্লাবিত জঙ্গলসংলগ্ন একাধিক গ্রাম। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে একের পর এক ধস নামছে। ধস নেমে সমতল থেকে পাহাড়ে যাওয়ার মূল সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে গেছে। উত্তরবঙ্গের ৩টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুর দুয়ারে নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। আলিপুর দুয়ারে কোনো কোনো অঞ্চলে জল ঢুকতে শুরু করেছে বলে স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন। বক্সা এবং জয়ন্তীতে বন্যা শুরু হওয়ায় কিছু পর্যটক আটকে পড়েছেন।
জলপাইগুড়ি এবং কুচবিহারেও বিপদ সংকেত জারি হয়েছে। গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজের জল ছাড়া হচ্ছে। জল ছাড়া না হলে ব্যারেজ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর ফলে জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারে বন্যার আশঙ্কা আরো বেড়েছে। তারই মধ্যে আবহাওয়া দপ্তর গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে বৃষ্টির কমলা সংকেত জারি করেছে। যার ফলে পরিস্থিতি আরো বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার ইতোমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে। কেন্দ্র রাজ্যগুলোকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়