কাগজ প্রতিবেদক : রাজস্ব ঘাটতির কারণে সরকারের বাজেট ব্যয় খুব বেশি বাড়ছে না। সেজন্য দরকার এনবিআরকে আরো শক্তিশালী করা, করের আওতা বাড়ানো। কিন্তু এনবিআরের সংস্কার ঠিকমতো হচ্ছে না। ফলে রাজস্ব আয়ও বাড়ে না। এজন্য এনবিআরে সংস্কারের মাধ্যমে অটোমেশনের আওতায় আনার কথা বলেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, দেশে বেসরকারি বিনিয়োগের হারও তেমন একটা বাড়ছে না। বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে অথরিটি নয়, আমাদের দরকার এজেন্সি, যারা বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজতর করবে।
গতকাল রবিবার মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত বাজেট পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এমসিসিআই সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার, পিআরআই নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইর গবেষণা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক।
মূলত বিডা বা বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির প্রতি ইঙ্গিত করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এ সংস্থার নাম অথরিটি হওয়া উচিত নয়। বরং ইনভেস্টমেন্ট এজেন্সি জাতীয় কিছু হতে পারে। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম সরকার বলেন, দেশের মোট ঋণ জিডিপির ৩২ শতাংশের মতো, অন্যদিকে পাকিস্তানের মোট ঋণ ৮০ শতাংশের উপরে। শ্রীলঙ্কার ঋণ আরো বেশি। ফলে বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হবে এমন ধারণা অমূলক।
পিআরআইর গবেষণা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের সরকারি ব্যয় অনেক কম। এমনকি নিম্ন আয়ের দেশের তুলনায়ও কম। এরপরও বাজেটে যে বরাদ্দ দেয়া হয় তাও পুরোপুরি ব্যয় করা হয় না। মূলত রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি না পাওয়ার কারণে সরকার বাজেটে ব্যয় বাড়াতে পারছে না। আবার বাজেটে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে তার জন্য অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে বেশি পরিমাণে ঋণ নেয়া হচ্ছে, যা বিদেশি ঋণের চেয়েও অনেক ব্যয়বহুল। এ পরিস্থিতিতে এনবিআরের সংস্কার জরুরি।
পিআরআই নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এনবিআরের সংস্কার জরুরি। কিন্তু এবারের বাজেটে সেরকম কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। সরকারের আয় বাড়ানো না গেলে ব্যয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। বেসরকারি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বেসরকারি বিনিয়োগের হার এক জায়গায় স্থির রয়েছে। আর সরকার যে হারে ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে তাতে বেসরকারি খাতের পক্ষে ঋণ নেয়া আরো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ব্যাংকের সুদহার যৌক্তিকীকরণ করার পরামর্শ দেন। তা না হলে ব্যাংকের পক্ষে ঋণ দেয়া কঠিন হবে।