মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪৪

আগের সংবাদ

উদ্ধারের অপেক্ষা আর ত্রাণের আকুতি : পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ > ভেসে উঠছে বানভাসি মানুষের লাশ > এখনই সচল হচ্ছে না ওসমানী বিমানবন্দর

পরের সংবাদ

পক্ষে নয় জাপা : ইসি কারো ওপর ইভিএম চাপিয়ে দিতে চায় না

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আমরা ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেয়ার পক্ষে নই। কারণ, দেশের মানুষ এখনো ইভিএমে ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখনো ইভিএম বিশ্বাস করে না। গতকাল রবিবার বিকালে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে ইভিএম নিয়ে আলোচনা এবং ইভিএম ব্যবহার দেখে জাতীয় পার্টি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
তবে গতকাল নির্বাচন ভবনে ইভিএম নিয়ে কয়েকটি দলের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত শেষে ইভিএম নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আমরা কারো ওপর কোনো মতামত চাপিয়ে দিতে পারি না, চাপিয়ে দেবও না। ইভিএম নিয়ে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়ে গতকাল নির্বাচন ভবনে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠক শেষে চুন্নু বলেন, গ্রামগঞ্জের মানুষ এখনো মনে করেন ইভিএম মানেই কারসাজি। কেউ কেউ মনে করেন, কোনো একটি দলের স্বার্থে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজ হচ্ছে, একটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে কাজ করা। আর কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা যারা নির্বাচন করে সেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা উচিত। আবার কোন কেন্দ্রে ব্যালট আর কোন কেন্দ্রে ইভিএম, এভাবে ভোটগ্রহণ হলে খুব খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হবে। ইভিএমের দোষ নয়, আসলে আমাদের দেশের মানুষ ইভিএমে ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুত নয় বলে জানান চুন্নু। এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, মোস্তফা আল মাহমুদ, আতিকুর রহমান আতিক।
সভা শেষে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন করেছি। তারপরও রাজনৈতিক মহলে এবং পত্রপত্রিকার মাধ্যমে যেটা জানতে পেরেছি, ইভিএম নিয়ে ঐকমত্য পাওয়ার অবস্থা নেই। যেহেতু আমরা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করেছি, সেহেতু আমাদের ধারণা নিতে হবে। আপনাদের মতামত, স্বাধীন মতামত হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।
রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, কারো ওপর কোনো মতামত চাপিয়ে দেয়ার কোনো ইচ্ছাও আমাদের নেই। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইভিএম সম্পর্কে আপনাদের ধারণা নেয়া। আপনাদের প্রশ্ন-উত্তর যদি থাকে সেগুলো উপস্থাপন করবেন। আমাদের যারা ইভিএম সম্পর্কে বোঝেন, তারা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে ইতোমধ্যে দেশসেরা প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করে মতামত নেয়া হয়েছে। তারা ইভিএম দেখার পর বলেছেন, এই মেশিন নির্ভরযোগ্য।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় আকারে ইভিএম ব্যবহার করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে তার আগে সবার মতামত নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ইসির হাতে বর্তমানে ১ লাখ ৫৪ হাজার ইভিএম রয়েছে, যা দিয়ে সর্বোচ্চ ১০০ আসনে ভোট করা যাবে। ৩০০ আসনে এই ভোটযন্ত্র ব্যবহার করতে হলে আরো তিন লাখের মতো মেশিনের প্রয়োজন। আর মেশিন চালাতে অনেক কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যা ইসির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।
ইভিএম যাচাই করার জন্য ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল রবিবার ১৩টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তারা। সভায় সব নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অংশ নেন।
গতকাল ১৯ জুন ইসিতে আসার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি-জেপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।
২১ জুনের আমন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল। আগামী ২৮ জুন আমন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল-এমএল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়