উদ্ধার করা হয়েছে সুনামগঞ্জে আটকা পড়া ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীকে

আগের সংবাদ

আশ্রয়-খাবার নেই, ত্রাণ নামমাত্র : সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার ভয়ংকর নির্মমতা > দুই জেলায় তিনজনের মৃত্যু > সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ চালু

পরের সংবাদ

সৈয়দপুরের ৫৬ শতাংশ সরকারি জমি বেদখল

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : সঠিক তদারকির অভাবে সৈয়দপুরে কমপক্ষে ২৮ কোটি টাকা মূল্যের ভূ-সম্পদ বেদখল হয়ে গেছে। এটি ঘটেছে শহরের নতুন বাবুপাড়া এলাকার সিটি সেন্টারসংলগ্ন কুলি মহল্লায়। বেদখল হয়ে যাওয়া ভূমির পরিমাণ ৫৬ শতাংশ। ভূমির অবস্থান বিবেচনায় বর্তমান বাজারমূল্যে ওই ভূমির দাম ২৮ কোটি টাকার মতো। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সৈয়দপুর সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
সৈয়দপুর পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমিন হোসেন জানান, অধুনালুপ্ত বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের পাট ক্রয় কেন্দ্র ছিল, যা টাটিয়া প্রেস নামে এক সময় খ্যাত ছিল। বর্তমানে সৈয়দপুর প্লাজা নামে যে সুপার মার্কেট গড়ে উঠেছে এটিই ছিল টাটিয়া প্রেস। সরকারের পক্ষে কাঁচা পাট কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করে টাটিয়া প্রেসে বেল বাঁধা হতো। আর টাটিয়া প্রেসে পাটের বেল বাঁধাই কাজে যেসব শ্রমিক কাজ করতেন তাদের রাতযাপনের জন্য কয়া মৌজার ১/১ নম্বর খতিয়ানের এসএ ৭৪৮৪ ও বিএস ৩২৭১৫ নম্বর দাগে ৫৬ শতক জমিতে কাঁচা ঘর তৈরি করে বসবাস করার জন্য সাময়িকভাবে দেয়া হয়েছিল। ওই স্থানে ২০ জন শ্রমিককে থাকার মৌখিক অনুমতি দেয় সেই সময়ের কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে তাদের শর্ত দেয়া হয়েছিল কোনোভাবেই যেন সেখানে পাকা বা চিরস্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করা না হয়। বর্তমানে ২০ পরিবারের বংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৬টি পরিবারে পরিণত হয়েছে। এসব পরিবারের সদস্যরাই দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে কোনো ধরনের কর না দিয়ে বসবাস করে আসছে।
এদিকে সরকারি পাট ক্রয় কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। টাটিয়া প্রেস ঘোষণা করা হয় পরিত্যক্ত। পরে সরকার টাটিয়া প্রেসের ভূ-সম্পদসহ সব কাঠামো নগদ টাকায় বিক্রি করে দেয়। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের অফিস সৈয়দপুর থেকে উঠে যায়। এমন পরিস্থিতিতে পাট বেলিং শ্রমিকদের বসবাসের জায়গাটি অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। ফলে স্বাভাবিকভাবে কুলি মহল্লার ৫৬ শতক ভূমি টেককেয়ার করার দায়িত্ব বর্তায় সরকারের ভূমি বিভাগের। অথচ ভূমি দপ্তর দীর্ঘদিনেও সুনজর না দেয়ায় ধীরে ধীরে তা বেদখল হয়ে যায়। সুযোগ সন্ধানীরা এমন সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাধারণের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সেখানে পাকা অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করে। সম্প্রতি কুলি মহল্লায় সরকারি ভূমিতে মজিদ নামের এক ব্যক্তি পাঁচতলা ভবনের ভিত্তি দিয়ে বাড়ি নির্মাণ শুরু করে। এমনকি এই ভবন নির্মাণে পৌরসভা থেকে পাস করা হয়নি কোনো নকশাও। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে নির্মাণকাজ চলছিল। লোকমুখে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমিন হোসেন। কিন্তু অবৈধ দখলদার ধনকুবের মজিদ ওই কর্মকর্তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তার কাজ চলমান রাখে। অবশেষে বাধ্য হয়ে পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বিষয়টি সৈয়দপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসানকে জানান। পরে ভূমি দপ্তরের এই কর্মকর্তা সরজমিন এসে ঘটনার সত্যতা পান এবং অবৈধ দখলদারকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার মৌখিক আদেশ দেন। কিন্তু কোনো আদেশ-নিষেধ কোনো কিছুই আমলে নিতে চাইছে না দখলবাজরা। তারা রাতের আঁধারে ভবন নির্মাণের কাজ অব্যাহত রেখে গেছে বলে নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে জানান।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান মুঠোফোনে জানান, অবৈধ দখলদারদের সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়