উদ্ধার করা হয়েছে সুনামগঞ্জে আটকা পড়া ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীকে

আগের সংবাদ

আশ্রয়-খাবার নেই, ত্রাণ নামমাত্র : সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার ভয়ংকর নির্মমতা > দুই জেলায় তিনজনের মৃত্যু > সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ চালু

পরের সংবাদ

সিলেটে বন্যা : বন্যার্তদের সতর্ক করে মারা গেলেন টিটু চৌধুরী

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত দুই দিন বন্যার্তদের সতর্ক করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা টিটু চৌধুরী। বলেছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে। বন্যায় ডুবে যাওয়া শহরে বিদ্যুতের সংযোগ সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন। অথচ পানিতে ডুবে যাওয়া ঘরের টিভির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে নিজের প্রাণ হারালেন তিনি। গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেট শহরের শাপলাবাগ এলাকায় টিটু চৌধুরী (৩৫) নিজ বাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। মৃত্যুর আগে গতকাল সকালেও টিটু তার ফেসবুক আইডি থেকে বন্যার বিভিন্ন তথ্য ও সংবাদ শেয়ার করেছিলেন। তার আকস্মিক মৃত্যুতে সিলেট নগরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। টিটু চৌধুরী সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হরিপুর গ্রামের ধীরেন্দ্র চৌধুরীর ছেলে। খবর বিবিসি বাংলা।
নিহত টিটু চৌধুরীর স্বজনরা জানান, গতকাল সকালে বন্যার পানি নগরে ঢোকার পর টিটু চৌধুরীর বাসায় কোমর সমান পানি দেখা দেয়। তাই টিটু ঘরের জিনিসপত্র সরিয়ে ওই বাসারই দোতলায় নিয়ে রাখছিলেন। এ সময় পানির নিচে তলিয়ে থাকা টিভির বিদ্যুৎ সংযোগের কেব?ল বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এরপর দ্রুত টিটুকে সিলেট উইমেনস মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
টিটু চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ও রাজনৈতিক সহকর্মী আলম খান মুক্তি জানান, টিটু চৌধুরীর বাসার ভেতরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ার পর তিনি বাসা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি পানিতে দাঁড়িয়েই টিভির বৈদ্যুতিক সুইচ খোলার চেষ্টা করেছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।

তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে বন্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। এই দুই জেলায় প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সিলেট থেকে সাংবাদিক আহমেদ নূর বলেছেন, সিলেট শহরের প্রায় সব জায়গায় পানি উঠেছে। সিলেটে ওসমানী বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে রেল যোগাযোগও। একই সঙ্গে বন্যার পানিতে তলিয়ে সুনামগঞ্জ শহর পুরো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সিলেট অঞ্চলের প্রত্যন্ত উপজেলাগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ও দুর্গতদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী।
সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে গত দুদিনে বহুবার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সবার সহযোগিতা চাচ্ছিলেন টিটু চৌধুরী। গতকাল শনিবার বেলা ১১টা ১৪ মিনিটে সিলেট ছাড়তে রেলস্টেশনে মানুষের হিড়িক- এমন একটি সংবাদ শেয়ার করেছিলেন তিনি। এর মধ্যে সিলেট শহরের বিভিন্ন জায়গায় পানি বেড়ে যায় এবং এসব এলাকার মধ্যে শাপলাবাগও রয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বাসা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। তার বাসার সামনেই বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছিল। বাসা ছাড়ার আগ-মুহূর্তে বাসার ভেতরে পানিতে দাঁড়িয়ে টিভির সুইচ খুলে রাখার সময়ই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শেষ পর্যন্ত মারা যান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়