উদ্ধার করা হয়েছে সুনামগঞ্জে আটকা পড়া ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীকে

আগের সংবাদ

আশ্রয়-খাবার নেই, ত্রাণ নামমাত্র : সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার ভয়ংকর নির্মমতা > দুই জেলায় তিনজনের মৃত্যু > সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ চালু

পরের সংবাদ

ঝুঁকিতে আরো ১৭ জেলা : শঙ্কামুক্ত নয় রাজধানী ঢাকাও

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আয়েন উদ্দিন : দেশের ১০৯টি নদীর মধ্যে ৯১টির পানি বেড়ে যাওয়ায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে। গতকাল শনিবার এমন তথ্য দিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ, ভারতের আসাম, মেঘালয়ে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পানি বাংলাদেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম এলাকা হয়ে বঙ্গোপসাগরে যাবে। বৃষ্টির পানির একটি অংশ ব্রহ্মপুত্র নদী দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকবে এবং ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী দিয়ে এসে নতুন এলাকায় বড় ধরনের বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি পদ্মায় পানি বাড়ছে। এর ফলে দেশের মধ্যাঞ্চলে পানি বেড়ে ঢাকার দিকে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ঢাকাও বন্যায় প্লাবিত হতে পারে। আবহাওয়াবিদ ও পানি বিশেষজ্ঞরা এমন আশঙ্কা করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ভারতের মেঘালয়, আসামসহ ৭টি রাজ্যে ‘মেঘভাঙ্গা বৃষ্টি’ হচ্ছে। বিশেষ করে চেরাপুঞ্জিতে ১২২ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে চলমান বৃষ্টি। ওখানকার বৃষ্টির পানি হাওর পেরিয়ে মেঘনা অববাহিকা দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হয়। কিন্তু নাব্যতা সংকট, হাওরের মধ্যদিয়ে ছোট ছোট সড়ক নির্মাণের কারণে সেই পানির প্রবাহে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। এতে সেখানকার পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টির পানির আরেকটি অংশ ব্রহ্মপুত্র নদী দিয়ে আজকের মধ্যে বাংলাদেশে ঢুকবে এবং ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী দিয়ে এসে নতুন এলাকায় বড় ধরনের বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আবহাওয়াবিদরা। এর ফলে দেশের উত্তর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে। পাশাপাশি পদ্মায় পানি বাড়ছে। এতে দেশের মধ্যাঞ্চলও ডুবে যেতে পারে। দেশের মধ্যাঞ্চলে যদি পানি বাড়ে তাহলে সেই পানি ঢাকার দিকে আসতে পারে। এর

ফলে ঢাকাও বন্যার পানিতে প্লাবিত হতে পারে। এক্ষেত্রে আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এবং আশ্রয় কেন্দ্র চালুর আগাম প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশের ১০৯টি নদীর মধ্যে ৯১টিতে পানি বেড়েছে। এতে আগামী দুই দিনের মধ্যে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের আরো ১৭টি জেলা বন্যাক্রান্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।
জানতে চাইলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, সিলেট ও সুনাগমঞ্জ এলাকায় আজ রবিবারও বৃষ্টি হতে পারে। ফলে সেসব এলাকার বন্যার পানি আরো বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে যমুনার পানিও বাড়তে শুরু করেছে। ফলে উত্তরাঞ্চলের আরো কিছু জেলা প্লাবিত হতে পারে। বন্যার এই পানি আবার নিচের দিকে নেমে এলে মধ্যাঞ্চলের কিছু জেলাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় তা দেশের কুড়িগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা থেকে প্রবেশ করে আরো এগিয়ে আসছে। ফলে জামালপুর, বগুড়া, শেরপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও পাবনায় বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। বন্যার পানি আরো নিচের দিকে নেমে এলে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর তথ্যমতে, গত তিন দিনে এখানে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে আরো ৫৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। আসামে বৃষ্টি হতে পারে অন্তত ৩০০ মিলিমিটার। ফলে এসব এলাকার বৃষ্টির পানি বাংলাদেশের সিলেট ও কুড়িগ্রাম দিয়ে নেমে আসবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়