উদ্ধার করা হয়েছে সুনামগঞ্জে আটকা পড়া ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীকে

আগের সংবাদ

আশ্রয়-খাবার নেই, ত্রাণ নামমাত্র : সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার ভয়ংকর নির্মমতা > দুই জেলায় তিনজনের মৃত্যু > সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ চালু

পরের সংবাদ

জাতীয় সেমিনারে স্পিকার : পদ্মা সেতু হবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের হাব

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, পদ্মা সেতু আমাদের দেশে বহুমাত্রিক অর্থনীতির দ্বার উন্মুক্ত করেছে। এই সেতু বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য অনন্য অবদান। পদ্মা সেতু দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে অভূতপূর্ব যোগাযোগ স্থাপন করবে। এই এলাকায় শিল্প বিপ্লব ঘটবে। প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিয়ে থাকব। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। অবদান রাখবে আর্থসামাজিক উন্নয়নে।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ সেমিনারের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটি। প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ। আলোচনায় অংশ নেন- পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. সামসুল আলম, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, পানিসম্পদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, অর্থনীতিবিদ ড. এম খলীকুজ্জমান। সেমিনার সঞ্চালনা করেন শবনম আজিম।
স্পিকার বলেন, নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের নতুন করে ভাবতে হবে। তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের ভালোবাসা, আবেগ এবং আত্মমর্যাদা। এই সেতু আমাদের বিজয়ের প্রতীক, ঘুরে দাঁড়ানোর এবং হার না মানার প্রতীক। আমাদের তরুণ প্রজন্ম প্রস্তুত। পদ্মা সেতুর স্পিড (গতি) ধারণ করেই তারা এগিয়ে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মসিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য কখনো ঝুঁকি নিতে পিছপা হন না। মানুষের আত্মবিশ্বাস আর চেতনার যে উন্নয়ন সেটা দেশের

মানুষের কাছে একটা বড় অবদান। বিশ্বব্যাংক এই সেতুর বিনিয়োগ থেকে সরে যাওয়ায় বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হয়নি। বরং এতে ক্ষতি হয়েছে বিশ্বব্যাংকের।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. সামসুল আলম বলেন, অনেকে বলছেন, অনেক টাকা লেগে গেল। মূল্যস্ফীতি ১০ হাজার ১০০ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি ধরলে ২৪ হাজার কোটি টাকা হয়ে যায়। নদীর শাসন ১৪ কিলোমিটার হলো। সেখানে টাকা গেল। পিয়ার গভীরে গেল। অতিরিক্ত কোনো ব্যয় হয়নি। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু থেকে প্রতি বছর টোল আদায় হবে ১ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। ৩৫ বছরে সুদসহ টোল আদায় হবে ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এই সেতু আর্থসামাজিক উন্নয়নে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সেতুতে অতিরিক্ত কোনো ব্যয় হয়নি। শত বছরের সাহসিকতার প্রতীক এই পদ্মা সেতু। আমরা ১০টি মেগা প্রকল্প নিয়েছি। কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি।
ড. আইনুন নিশাত বলেন, পদ্মা সেতুর পরিকল্পনা ও ডিজাইন কাজে আমি যুক্ত ছিলাম। প্রথমদিকে মনে হচ্ছিল প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। এই সেতু থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। যখন কোনো প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা অর্থায়ন করে তখন কিছু প্রক্রিয়া আছে। পরে তারা ফিরতে চেয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী তাদের নেননি। তিনি বলেন, প্রি-ফিজিবিলিটি, ফিজিবিলিটি, ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং এসব আমরা শিখেছি। পত্রিকায় খরচ নিয়ে অনেক উল্টোপাল্টা কথা বলা হয়। সেগুলো অনেক আগের কথা। আপনারা ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে তথ্য নেবেন। একটু দুঃখ হচ্ছে, এ উপকার বাড়ানোর জন্য যা করা দরকার আমরা করিনি। মোংলাকে এখন ভালো বন্দর হিসেবে উন্নয়ন করা যেতে পারে। মোংলা বন্দর ভুল জায়গায় বসানো হয়েছে। অবিলম্বে এটা সরাতে হবে। তাহলেই পদ্মা সেতুর সফলতাটা পুরোপুরি আসবে।
তিনি বলেন, গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র মিলে পদ্মা। বর্ষার সময় এটা যে কত শক্তিশালী সেটা বুঝতে পারবেন। বার্জ ছিঁড়ে চলে গেছে। সেতুর কাজ শেষ হয়েছে, নদী শাসনের শেষ করতে ২০২৩-এর শেষ নাগাদ লাগবে। মাওয়া অংশের নদী ভরাট হয়ে গেছে। নদী সুয়িং করে। গত ১০০ বছর ধরে দেখেছি। পদ্মা যখন নির্মাণ শুরু করি তখন মাওয়া ঘেঁষে ছিল। এখন কিছুটা সরে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল কোনোভাবেই নদী সংকুচিত করা যাবে না। নদীভাঙন রোধে তীর রক্ষায় কাজ করতে হয়। খুব কঠিন কাজ।
অর্থনীতিবিদ ড. এম খলীকুজ্জমান বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পদ্মা সেতুর জন্য আমাদের মর্যাদা বেড়েছে। নিজের টাকায় করলাম। এর আগে প্রধানমন্ত্রী যখন ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন এই বার্তা পৌঁছে গিয়েছিল। এ মর্যাদা আমাদের সবার, সারা বাঙালি জাতির গৌরব। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে হবেই। সারাদেশে যোগাযোগ বিস্তৃত হলো। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। মোংলা-বেনাপোল বেশি ব্যবহার হবে। সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে। এই সেতু নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন। দূরদর্শিতার প্রমাণ দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়