উদ্ধার করা হয়েছে সুনামগঞ্জে আটকা পড়া ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীকে

আগের সংবাদ

আশ্রয়-খাবার নেই, ত্রাণ নামমাত্র : সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার ভয়ংকর নির্মমতা > দুই জেলায় তিনজনের মৃত্যু > সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ চালু

পরের সংবাদ

গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত শাহজাদপুরের খামারিরা

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আব্দুল কুদ্দুস, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে : শাহজাদপুরে আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরু মোটা তাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। এরই মধ্যে শাহজাদপুরের কুরবানির পশুর হাটগুলোতে পর্যাপ্তসংখ্যক ষাঁড় গরু ক্রয় বিক্রি হচ্ছে। দুগ্ধ শিল্পের জন্য বিখ্যাত শাহজাদপুর উপজেলার এ বছর প্রায় ৭ হাজার খামারে প্রায় ৭০ হাজার কুরবানির পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে। খামারগুলোতে চলছে পশু হৃষ্টপুষ্টকরণের কাজ। দেশি ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন তারা। বেশ কয়েকজন খামারি কুরবানি ঈদে গরু বিক্রি করে কোটি টাকা লাভ করার আশা করছেন। খামারিরা বলছেন, যদি ভারত থেকে গরু না আসে তাহলে লাভের মুখ দেখবেন তারা।
শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের রেশমবাড়ী, পোতাজিয়া, নুকালী, বায়ড়া, রাউতারা, কাকিলাবাড়ী, চরা চিথুলিয়া, হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়নের বাজিয়ারপাড়া, রতনকান্দি, ফরিদপাঙ্গাসী, ডায়া, কায়েমপুর ইউনিয়নের বৃ আঙ্গারু, চুলধরি, চর অঙ্গারু, চিথুলিয়া, হরিরামপুর, ব্রজবালা, গাড়াদহ ইউনিয়নের মশিপুর, সরিষাকোল, নবীপুর, টেপড়ি, তালগাছী, পোরজনা ইউনিয়নের নন্দলালপুর, বড় বাচড়া, পুঠিয়া, বড় মহারাজপুর, ছোট মহারাজপুর , উল্টাডাব, চরকাদাই, জামিরতা কৈজুরী ইউনিয়নের গোপালপুর, হাট পাঁচিল, পাথালিয়াপাড়া, রূপবাটি ইউনিয়নের বাঘাবাড়ী মোল্লাপাড়া, খামারশানিলা, চয়ড়া, আহম্মদপুর, করশালিকা, দুগালী মোয়াকোলা, শেলাচাপড়ি, নরিনা ইউনিয়নের জয়রামপুর, যুগ্নীদহ, নাববলিা, বাঁচামরা, বেলতৈল ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া, বেতকান্দি, ঘোরশাল, খুকনী ইউনিয়নের কালীপুর, কামালপুর, শিবপুর, সোনাতলা, জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর, রূপসী, মুলকান্দি এবং যমুনা চরের সোনাতনী ইউনিয়নের বানতিয়ার, বড় চাঁনতারা, ছোট চাঁনতারা, শ্রীপুর গ্রামের কয়েক হাজার গরুর খামারে গরু মোটাতাজাকরণ চলছে। একেকটি বড় খামারে ৫০ থেকে ১০০টি গরু এবং ছোট খামারে ৫ থেকে ২০টি গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এসব খামার থেকে গরু বিক্রি শুরু হয়েছে। শাহজাদপুরের খামারগুলোতে স্থানীয় জাতের পাশাপাশি মোটাতাজা করা হচ্ছে নেপালি, হরিয়ানা, সিন্ধি, শাহীওয়াল জাতের গরু। রূপপুর নতুনপাড়া বিসমিল্লাহ ডেইরি ফার্মের হাজি আবু তালেব জানান, এ বছর তার ফার্মে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে কাঁচা ঘাস ও ছোলা খাওয়ায়েও ৪০টি ষাঁড় গরু লালন-পালন করছেন। তার ফার্মে সর্বনিম্ন দুই লাখ টাকা থেকে চার লাখ টাকা মূল্যের ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বেপারিরা তার খামারে গরু ক্রয় করতে ছুটে আসছেন। আইগবেড়া গ্রামের খামারি ঠাণ্ডুু প্রামাণিক জানান, তিনি এ বছর তার খামারে ৬০টি কুরবানির গরু তৈরি করেছেন, একেকটি গরু বিক্রি হবে ২ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা। এসব গরু মোটাতাজা করতে কোনো ওষুধ বা ইঞ্জেকশন দেয়া হয় না। সম্পূর্ণ কাঁচা ঘাস আর পুষ্টিকর দানাদার খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।

উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের সোহেল রানা জানান, তিনি প্রতি বছর কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে ষাঁড় গরু পালন করেন। এ বছরও তার খামারে ৩০টি গরু লালন-পালন করেছেন। প্রতিটির বর্তমান মূল্য ২ লাখ থেকে ৫ লাখ পর্যন্ত দাম হবে। আমি প্রায় ৮ মাস ধরে গরুগুলো লালন-পালন করে আসছি। যদি কেনাবেচা হয় ও বাজার ভালো থাকে তাহলে লাভের মুখ দেখব।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান জানান, এ বছর এ উপজেলায় প্রায় ৭০ হাজার গরু হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। এলাকার চাহিদা মিটিয়েও দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হবে। খামারগুলোতে নজরদারি রাখা হচ্ছে যাতে করে কেমিক্যালের মাধ্যমে কুরবানির পশু মোটাতাজা করা না হয়। এসব কুরবানির পশুকে প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজাকরণের জন্য খামারিরা প্রশিক্ষণ নিয়ে দিন-রাত কাজ করছেন। কুরবানির জন্য প্রস্তুত করা গবাদিপশুগুলোকে ঘাস, খড়, খৈল, ভুষিসহ দেশীয় খাবারের মাধ্যমে হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়