আরো ৩১ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি

আগের সংবাদ

জলে ভাসা সিলেট এক বিচ্ছিন্ন জনপদ : ১২২ বছরের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যা > আশ্রয়ের খোঁজে অসহায় মানুষ > বন্যার্তদের উদ্ধারে নৌবাহিনী, যুক্ত হচ্ছে হেলিকপ্টার-ক্রুজ

পরের সংবাদ

ধর্মান্ধ রাজনীতি ও ক্ষমতার মাশুল

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আমাদের কাছে প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতে পরপর দুবার লোকসভা নির্বাচনে হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি জনগণের ভোটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে ক্ষমতায় রয়েছে। বিজেপির ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশটির বহুত্ববাদ পাল্টে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার নানা আয়োজন অব্যাহত গতিতে চলছে। অহিন্দু সম্প্রদায় ক্রমেই সেখানে ব্রাত্যে পরিগণিত। বিশেষ করে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায় তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। মুসলমান সম্প্রদায়ের নাগরিকদের ভারতছাড়া করতে এনআরসি, সিএএ নামক নাগরিক সনদের আইন সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংসদে পাস করিয়ে নিয়েছে। বিজেপির ইসলামবিদ্বেষ নীতির দৃষ্টান্তে রাষ্ট্রে ও সমাজে মুসলিমবিরোধী মনোভাব ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের অতীত এবং সমকালে সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মীয় গোঁড়ামির অভিযোগ তুলেছেন মুসলিম-সম্প্রদায়ের ওপর। উত্তর প্রদেশে পরপর দুবারের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও বিগত রাজ্যসভা নির্বাচনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়ে সহিংস ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। উত্তর প্রদেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ হিন্দু এবং ২০ শতাংশ মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও মুসলিম সম্প্রদায়কে ঘৃণিত প্রতিপক্ষ বিবেচনা করে সাম্প্রদায়িকতা উসকে দিচ্ছেন। আসাম রাজ্যের বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মার নির্দেশে গত বছর আসাম থেকে জোরপূর্বক মুসলিমদের বিতাড়িত করার অভিযান পরিচালিত করে দুজন মুসলিম যুবককে পুলিশ লেলিয়ে হত্যা করে বীরদর্পে অতীতের হিন্দু হত্যার প্রতিশোধ বলে উল্লেখ করেছেন।
ভারতে দীর্ঘমেয়াদে মুসলিম-শাসন থাকায় সেখানে অসংখ্য মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। ওইসব মসজিদের তলদেশে শিবলিঙ্গ (পাথর খণ্ড) পাওয়ার অভিযোগে ইতোমধ্যে ক’টি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিজেপির উগ্রবাদীরা। এ প্রসঙ্গে বহুচর্চিত বাবরি মসজিদ মামলা একটি যুগান্তকারী ঘটনা। উগ্র হিন্দুদের দ্বারা মসজিদ ভাঙা নিয়ে মামলার রায় বেশ চাঞ্চল্যকর। বাবরি মসজিদ মামলার রায়দানকারী বিচারকদের নেতৃত্বে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সম্প্রতি তার আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘জাস্টিস ফর দ্য জজ’ বইতে তিনি অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ করেছেন। তার বইটি প্রকাশিত হয়েছে ৯ নভেম্বর ২০১৯ সালে। বাবরি মসজিদ মামলার রায় ঘোষণার পরে। বইতে তিনি লিখেছেন, ‘রায় ঘোষণার পর ১নং কোর্টের বাইরে অশোক চক্রের নিচে বিচারপতিদের গ্যালারিতে ফটোসেশনের আয়োজন করেছিলেন মহাসচিব। সন্ধ্যায় বিচারপতিদের নিয়ে গেলাম তাজ মানসিংহ হোটেলে ডিনারের জন্য। আমরা চায়নিজ খাবার খেয়েছিলাম। সেখানে পাওয়া সেরা ব্র্যান্ডের মদের একটি বোতলও নিয়েছিলাম।’ বিচারপতিরা মামলার রায়ের সেলিব্রেটিশন করেছিলেন মধ্যপানে। মামলার পাঁচ বিচারপতির মধ্যে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সাংবিধানিক রায় প্রদান করেছিলেন। তার বেঞ্চের অপর চার বিচারপতি ছিলেন- এস এ বোবদে, ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়, অশোক ভূষণ এবং এস আব্দুল নাজির। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ অবসর গ্রহণের পর পরই ক্ষমতাসীন বিজেপিতে যোগ দেন এবং রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। বাবরি মসজিদ মামলায় উপরোক্ত তথ্যে রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের বিষয়ে নিশ্চয় সন্দেহের আর অবকাশ থাকে না।
বিজেপির শাসনামলে গো-হত্যা বন্ধের নির্দেশ জারি করা হলে বিজেপি-শাসিত রাজ্যে গো-হত্যা বন্ধ হয়ে যায়। এমনিতেই ভারতের ক’টি রাজ্যে পূর্ব থেকেই গরু জবাই ও গো-মাংস বিক্রি বন্ধ ছিল। তবে যে সব রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় নেই তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেছে। যেমন পশ্চিমবঙ্গ। গো-হত্যার অভিযোগ তুলে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের হত্যা, নির্যাতনের অজস্র হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটছেও। মানুষের জীবনের থেকেও পশুর জীবনের মূল্য যে অধিক তার প্রমাণ দিয়ে চলেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা।
আরএসএসের (রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ) রাজনৈতিক শাখা সংগঠন বিজেপির ব্রাহ্মণ্যবাদী শাসনামলে কেবল অহিন্দু সম্প্রদায় নয়, খোদ হিন্দু ধর্মাবলম্বী নিম্নবর্গের অস্পৃশ্য দলিত হিন্দুরাও ক্রমাগত আক্রান্ত হয়ে চলেছে। দলিল শ্রেণির অগণিত নারী ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে উগ্রবাদী বিজেপি কর্মী, সংগঠক ও নেতাদের দ্বারা। করোনা মহামারিকালে উত্তর প্রদেশজুড়ে দলিত নারীরা গণহারে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে। হিন্দু ধর্মের বর্ণপ্রথা সব হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐক্যের প্রধান অন্তরায়। নিম্নবর্ণের হিন্দুদের স্পর্শ বা ছোঁয়া ব্রাহ্মণ্যবাদীরা বরদাশত করে না। বর্ণবৈষম্যের কারণে সব হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এককাতারে দাঁড়ানো, পাশাপাশি বসা এবং একত্রিত হওয়ার কোনো অবকাশ বাস্তবে নেই। অথচ উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার দিবাস্বপ্ন নিজেরা যেমন দেখছে, তেমনি হিন্দু-সম্প্রদায়কে দেখিয়ে, জনমত পক্ষে নেয়ার কৌশল এঁটে চলেছে।
দলিত বা নিম্নবর্গের হিন্দুদের সম্পর্কে ব্রাহ্মণ্যবাদী আরএসএস, বিজেপি নেতাদের কিছু ঘৃণিত বক্তব্য উপস্থাপন করছি। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, ‘দলিত নারী ধর্ষণ করা পাপ নয়। কারণ তার শরীর অপবিত্র, অস্পৃশ্য হলেও যোনি অপবিত্র নয়। দলিতরা দাস হয়ে জন্মেছে, তাই দাসত্ব করাই তাদের পবিত্র কর্তব্য। আমাদের শাস্ত্রে নারী স্বাধীনতার কথা বলা হয়নি। নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। মেয়েদের সত্যি সত্যি স্বাধীনতার প্রয়োজন নেই। এতে ওরা স্বেচ্ছাচারী হয়ে সমাজ ধ্বংস করবে।’
আরএসএসের প্রধান শ্রী মোহন ভগবত বলেছেন, ‘বিবাহ হলো চুক্তি। ছেলেরা বিয়ে করে সুখ পাওয়ার জন্য, আর মেয়েরা বিয়ে করে ছেলেদের সুখ দেয়ার বিনিময়ে নিজেদের পেট চালানোর জন্য। শিক্ষা ঔদ্ধত্য আনে। তাই শিক্ষিত স্বামী-স্ত্রীদের মধ্যে ডিভোর্সের প্রবণতা দেখি। মহিলাদের ঘরেই থাকা উচিত এবং তারা যদি ঘরের কাজকর্ম পটুভাবে না করতে পারে তাহলে তাদের পরিত্যাগ করা যেতেই পারে।’
আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা গুরু-গোলওয়ালকার বলেছিলেন, ‘শূদ্র মহিলাদের প্রথম সন্তান ব্রাহ্মণ ঔরসজাত হওয়া বাঞ্ছনীয়, তার বিবাহ যার সঙ্গেই হোক না কেন। এতে ব্রাহ্মণ জাতের গুণ নিচু জাতের মধ্যে সম্প্রসারিত হয়।’ [অর্গানাইজ পত্রিকা, ১৯৬১]
আরএসএসের রাজনৈতিক শাখা সংগঠন বিজেপির শাসনামলে ভারতে জাত বা বর্ণবৈষম্য তীব্রতর হয়ে পড়েছে। ব্রাহ্মণ্যবাদী শোষণের জাঁতাকালে পিষ্ট নিম্নবর্গের হিন্দুরা। একই হিন্দু ধর্মের দলিতদের সম্পর্কে ব্রাহ্মণ্যবাদীদের নিকৃষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি কিরূপ? উপরোক্ত বক্তব্যগুলোই প্রমাণ করে। বিশ্বে একমাত্র হিন্দু ধর্মমতই হিন্দু সম্প্রদায়ের জীবিকা নির্ধারণ করে শ্রেণি বিভাজন গড়ে তুলেছে; ধর্মের বাতাবরণে শ্রেণি-শোষণের অভিপ্রায়ে। মনুসংহিতার জাতপ্রথা যার ভিত্তি।
ভারত সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। কিন্তু বিজেপির শাসনামলে সেটা কাগুজে পরিণত এবং দেশব্যাপী চলছে হিন্দুত্ববাদীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার নৃশংস ফ্যাসিবাদী শাসন। বিজেপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত, কোনো সন্দেহ নেই। ভারতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সাম্প্রদায়িক না-হলে সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে একচেটিয়া ভোট দেয় কী করে? দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রেও মুসলিম জঙ্গিদের, মৌলবাদীদের সে-দেশের জনগণ কখনো ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসায়নি। বাংলাদেশের মৌলবাদীদেরও এদেশের মানুষ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে সেটা কল্পনারও অতীত। কিন্তু ভারতীয়রা হিন্দু মৌলবাদীদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে চলেছে। তাই অনায়াসে বলা যায় ভারতীয় জনগণ অনিবার্যরূপে সাম্প্রদায়িক। আমাদের নিকটবর্তী এবং অখণ্ড বাংলার পশ্চিমাংশ পশ্চিম বাংলায় গত বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ২ কোটি ৮৭ লাখ। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ২ কোটি ২৮ লাখ। এছাড়া বিজেপির ৯২ জন প্রার্থী নির্বাচনে হেরেছে ৬০০-৮০০ ভোটের ব্যবধানে। পশ্চিম বাংলার ৩০ শতাংশ মুসলমান বিজেপি ঠেকাতে তৃণমূল কংগ্রেসকে একচেটিয়া ভোট দিয়েছিল, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে। তৃণমূলকে ভালোবেসে নয়। তাই মুসলিম অধ্যুষিত নির্বাচনী অঞ্চলে বিজেপি প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পশ্চিম বাংলায় তৃণমূলের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিজেপি। অথচ তৃণমূল নেতা যশবন্ত সিনহা বলেছেন, ‘ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করে অন্য সব ধর্ম নিষিদ্ধ করা হোক।’ তৃণমূলের হাত ধরে পশ্চিম বাংলায় বিজেপির আগমন ও বিকাশ। তাই সেখানে দুই দলকে একত্রে উপহাস করে বলা হয় ‘বিজেমূল’।
সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি দলীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মা এবং বিজেপি নেতা নবীন কুমার জিন্দাল ইসলামের নবী সম্পর্কে কটূক্তি করার ফলে দেশে-বিদেশে প্রবল প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ইরানসহ আরব রাষ্ট্রগুলো একযোগে ভারতীয় পণ্য বর্জন এবং আরব দেশগুলোতে কর্মরত এক কোটি ভারতীয় নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আশঙ্কা দেখা দেয়। ভারতের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা দাবি করা হয়। এমতাবস্থায় নূপুর শর্মাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং নবীন কুমার জিন্দালের প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হতে পারে ইরানসহ আরব দেশগুলোর ভারতীয় পণ্যবর্জন ও ভারতীয় নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর চাপে বিজেপি সরকার নতজানু নীতি গ্রহণে বাধ্য হয়েছে। বাস্তবে সেটা সত্য নয়। প্রবচন আছে, দশ মণ ঘি-ও পুড়বে না, রাধাও নাচবে না। বিষয়টি তেমনই। অর্থাৎ আরব দেশগুলো নবীর অবমাননার বিরুদ্ধে না-দাঁড়ালে বিশ্বের মুসলমানদের কাছে তাদের মান রাখা দায় হবে। মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর মোড়লত্ব বজায় রাখার তাগিদেই তারা ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করার হুমকি দিয়েছে। ভারতের মুসলমানদের বিষয়ে তাদের কী আসে-যায়! কাশ্মির ইস্যুতে, ভারতে গো-হত্যার অভিযোগে এবং বিনা কারণে সংখ্যালঘু মুসলিম নিধনে এ যাবৎ কোনো আরব দেশ টুঁ শব্দটি করেনি। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে এড়িয়ে গেছে। ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের প্রতি নির্মম বর্বরতার বিরুদ্ধে পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটেছে। অপরদিকে ইরান, সিরিয়া বাদে প্রায় সব আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে গোপনে মিত্রতা সৃষ্টি করে ফিলিস্তিনিদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাহলে কিসের মোহে পড়ে তারা ভারতীয় মুসলমানদের ত্রাণকর্তা হবেন? পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক একাত্তরের গণহত্যা, নারীনিগ্রহের সময়ে আরব দেশগুলোর ঘৃণ্য নির্লিপ্ততার কথা নিশ্চয় আমাদের স্মরণে আছে। স্বাধীন বাংলাদেশকে একমাত্র স্বীকৃতি প্রদানকারী আরব রাষ্ট্রটি ছিল ইরাক। এছাড়া সব আরব রাষ্ট্র গণহত্যাকারী পাকিস্তানিদের পক্ষ নিয়েছিল।
সাম্প্রতিক একটি খবর আমাদের জন্য হতাশাজনক। নবীর অবমাননায় কুয়েতসহ আরব দেশগুলোর দৃঢ় অবস্থানের প্রেক্ষিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অতি-উৎসাহে ও উত্তেজনায় ১০ জুন জুমার নামাজের পর কুয়েতে নবীর অবমাননার বিরুদ্ধে মিছিল করায় কুয়েত সরকার সব মিছিলকারীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে। কুয়েতে সর্বপ্রকার মিছিল, সমাবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ওই নিষিদ্ধ কর্ম করার অপরাধে মিছিলকারী বাংলাদেশিদের সহসা কুয়েত ত্যাগ করতে হবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। আমাদের সরকার এ-বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

মযহারুল ইসলাম বাবলা : নির্বাহী সম্পাদক, নতুন দিগন্ত।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়