আরো ৩১ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি

আগের সংবাদ

জলে ভাসা সিলেট এক বিচ্ছিন্ন জনপদ : ১২২ বছরের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যা > আশ্রয়ের খোঁজে অসহায় মানুষ > বন্যার্তদের উদ্ধারে নৌবাহিনী, যুক্ত হচ্ছে হেলিকপ্টার-ক্রুজ

পরের সংবাদ

ঢাবি সিনেট সভা : চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহার বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগান

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের দেয়া বক্তব্যের শেষাংশে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় সিনেট অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে সিনেটের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভার পক্ষ থেকে এই বক্তব্য চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহার করেন।
এর আগে সিনেট অধিবেশন চলাকালে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল থেকে নির্বাচিত সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে তার বক্তব্য শেষ করেন। অধিবেশনের শেষের দিকে পয়েন্ট অব অর্ডারে নীল দল প্যানেল থেকে নির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধি ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া প্রতিবাদ জানান। এতে তাৎক্ষণিকভাবে নীল দলের বাকি সদস্যরাও সম্মতি দেন। এসময় অধ্যাপক শফিউল আলম বলেন, একজন সিনেট সদস্য (অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম) তার বক্তব্যের শেষে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে তার বক্তব্য শেষ করেছেন। জয় বাংলা বলেননি। অথচ জয় বাংলা একটা জাতীয় স্লোগান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বক্তব্য প্রদানকালে আমাদের একজন সহকর্মী ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিয়েছেন এটা একটা দুঃখের বিষয়। আমরা কোন দেশে বসবাস করছি? বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগানই হলো ‘জয় বাংলা’। তিনি আরো বলেন, যেই সিনেটে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদ হয়েছিল সেই সিনেটে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেয়া হয় তবে এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক নয় বরং ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
এই বক্তব্য শুধু এক্সপাঞ্জ করলেই হবে না, স্বাধীন বাংলাদেশে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগান কোনোভাবেই মানা হবে না।

উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড এ এস এম মাকসুদ কামালের বক্তব্য দেয়া হলে তাকে উপাচার্যের মাধ্যমে অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম পাল্টা প্রশ্ন করেন, এই স্লোগান বাংলাদেশে কবে নিষিদ্ধ হলো? আমরা প্রতিনিয়তই এটি ব্যবহার করছি। এসময় তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক ড এ এস এম মাকসুদ কামালের বক্তব্যটি পুরোপুরি রাজনৈতিক একটি বক্তব্য।

এসময় আওয়ামীপন্থি শিক্ষক প্রতিনিধিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় তারা বলেন, এটা (বাংলাদেশ জিন্দাবাদ) পাকিস্তানের স্লোগান, স্বাধীনতাবিরোধী কোনো স্লোগান আমরা শুনতে চাই না। এই স্লোগান বলা মানে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করা। এখানে স্লোগান দিলে জয় বাংলাই বলতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো পাকিস্তান ভাবধারার প্রতিষ্ঠান নয়।
পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ তার বক্তব্যে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, পাকিস্তান জিন্দাবাদ থেকেই মূলত ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ শব্দটি এসেছে। এখন শব্দটি কেউ ওভাবে আর কেউ বলে না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মানে এই নয় মহান স্বাধীনতার সঙ্গে কোনো কিছু সাংঘর্ষিক হলে সেটা মেনে নিতে হবে। এটি একটি নিছক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলার ঘটনাটি পাকিস্তানি ভাবধারা অনুকরণের চেষ্টা কিংবা মহান সিনেটকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি অপচেষ্টা বলেও উল্লেখ করেন উপাচার্য।
তিনি আরো বলেন, সভা বক্তব্যটি প্রত্যাহার ও নিন্দা জ্ঞাপন করছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়