আরো ৩১ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি

আগের সংবাদ

জলে ভাসা সিলেট এক বিচ্ছিন্ন জনপদ : ১২২ বছরের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যা > আশ্রয়ের খোঁজে অসহায় মানুষ > বন্যার্তদের উদ্ধারে নৌবাহিনী, যুক্ত হচ্ছে হেলিকপ্টার-ক্রুজ

পরের সংবাদ

জলাবদ্ধতা থেকে চট্টগ্রামবাসী কবে মুক্তি পাবে?

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

একবেলার বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতায় নাকাল হচ্ছেন চট্টগ্রাম নগরবাসী। সেবাদানকারী সংস্থা কেউ এর দায় নিচ্ছে না। অন্তত খালগুলো নিয়মিত সংস্কার হলে এমন অবস্থা থেকে নগরবাসী রক্ষা পেতেন। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুদিনের বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী, স্কুল-কলেজ ও অফিসগামী মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন। নগরীর ছোট-বড় নালাগুলোর আবর্জনা অপসারণ না করায় সামান্য বৃষ্টিতে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ নগরবাসীর। নালা পরিষ্কার না করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) দায়ী করছেন তারা। তবে চসিক এ দায় নিতে নারাজ। সামনে বর্ষার ভরা মৌসুম। তখন টানা বৃষ্টিতে কী ধরনের দুর্ভোগে পড়তে হবে- তা আতঙ্ক বাড়িয়ে দিচ্ছে বৈকি। জানা গেছে, ২০১৭ সালে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ বছর মেয়াদে চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। ২০২০ সালের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ বাকি রয়েছে অর্ধেক। পরে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বাড়ানো হয় প্রকল্পের মেয়াদ। সঙ্গে বাড়ানো হয় ব্যয়। এ অবস্থায় মে মাসে এসেও জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ৬৭ শতাংশ। বাকি কাজও যে শিগগির শেষ হবে তার কোনো আলামত নেই। অভিযোগ উঠেছে, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পটি একটি অসম্পূর্ণ প্রকল্প। বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা ছাড়াই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। কারো মতামতের তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী প্রকল্পগুলো নিয়েছে সিডিএ। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিলেও তাতে কর্ণপাত করেনি। তাড়াহুড়ো করে করা সম্ভাব্যতা যাচাই, নিরীক্ষণ ও দুর্বল কর্মপরিকল্পনাই এর জন্য দায়ী। প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৩৬টি খাল খনন ও সংস্কার করে সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এই খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করতে কী ধরনের জনবল কাঠামো লাগবে, কী ধরনের ইক্যুইপমেন্ট লাগবে প্রকল্পে- এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা নেই। প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১০টির কাজ শেষ হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পানি নিষ্কাশনের কোনো জায়গা না থাকার কারণেই সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। চট্টগ্রামে যে খালগুলো ছিল সেগুলো ভরাট ও দখল হয়ে গেছে। তাহলে এ পানি যাবে কোথায়? ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রাকৃতিকভাবে এ সমস্যা কমার সম্ভাবনা নেই। তবে কৃত্রিমভাবে যে ড্রেনগুলো আছে সেগুলো সঠিকভাবে মেরামত করতে পারলে কিছুটা স্বস্তি পাবেন নগরবাসী। এই ড্রেনেজ সিস্টেম মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ একক কর্তৃত্বে আনতে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ গুরুত্বসহ বিবেচনা করা প্রয়োজন। চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখি কম হয়নি। সরকারের নানামুখী উদ্যোগ, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পরামর্শ কোনোটাই যেন কাজে আসছে না। আমরা মনে করি, জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রামের খালগুলো ভূমিকা রাখতে সক্ষম। নগরীর খালগুলো উদ্ধারে কর্তৃপক্ষকে আরো সোচ্চার হতে হবে। মেগা প্রকল্পে জলাবদ্ধতা নিরসনে সুপরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়