আরো ৩১ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি

আগের সংবাদ

জলে ভাসা সিলেট এক বিচ্ছিন্ন জনপদ : ১২২ বছরের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যা > আশ্রয়ের খোঁজে অসহায় মানুষ > বন্যার্তদের উদ্ধারে নৌবাহিনী, যুক্ত হচ্ছে হেলিকপ্টার-ক্রুজ

পরের সংবাদ

চাকরিচ্যুত করা হবে হিজাব ছাড়া নারীর পুরুষ আত্মীয়কে!

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : মুসলিম নারীদের মধ্যে যারা সারা শরীর ঢেকে রাখা ইসলামিক পোশাক পরে না তারা ‘পশুর মতো সাজার চেষ্টা করে’ বলে প্রচার করছে তালেবানরা। আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরজুড়ে সাঁটানো তালেবানের ধর্মীয় পুলিশের পোস্টারে এমনটি দেখা গেছে। গত বৃহস্পতিবার তালেবানের এক কর্মকর্তা ওই পোস্টারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে জারিকৃত আখুন্দজাদার ডিক্রিতে হিজাব না পরা নারীদের সতর্ক করতে এবং প্রয়োজনে তাদের পুরুষ আত্মীয়দের সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশনা দেয়া হয়। খবর ডয়েচে ভেলে।
গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে তালেবানরা নারীদের ওপর একের পর এক কঠোর বিধিনিষেধ চাপিয়ে যাচ্ছে। তালেবানের প্রথম শাসন উচ্ছেদের পর মার্কিন নিয়ন্ত্রণের দুই দশকে আফগান নারীদের অর্জিত যৎসামান্য অগ্রগতিও বিলুপ্ত হচ্ছে একে একে। চলতি বছর মে মাসে আফগানিস্তানের এখনকার সর্বোচ্চ নেতা ও তালেবানপ্রধান হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদার অনুমোদিত এক ডিক্রিতে বলা হয়, নারীদের ‘সচরাচর বাড়িতেই থাকা উচিত’। বাড়ির বাইরে যেতে মুখমণ্ডলসহ সারা শরীর ঢেকে বের হওয়ারও নির্দেশ দেয় তারা। কয়েকদিন আগে তালেবানের ‘পুণ্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ’ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কান্দাহারজুড়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখার পোশাক বোরকার ছবি দেয়া পোস্টার লাগায়। এসব পোস্টারে বলা হয়, যে মুসলিম নারীরা হিজাব পরে না, তারা পশুর মতো সাজার চেষ্টা করে। তালেবানের ‘ডি-ফ্যাক্টো’ ক্ষমতাকেন্দ্র কান্দাহারের অসংখ্য ক্যাফে, দোকান ও বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের হোর্ডিংগুলোতে এই পোস্টারগুলো লাগানো হয়েছে।
সেসব পোস্টারে আরো বলা হয়, ছোট, টাইট ও স্বচ্ছ পোশাক আখুন্দজাদার ডিক্রিবিরোধী। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তালেবানের ‘পুণ্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ’ মন্ত্রণালয়ের কাবুলের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি, তবে মন্ত্রণালয়টির স্থানীয় এক কর্মকর্তা পোস্টার লাগানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্যারিসভিত্তিক এক বার্তা সংস্থাকে মন্ত্রণালয়ের কান্দাহারপ্রধান আবদুল রহমান তায়েবি বলেন, আমরা পোস্টার লাগিয়েছি। আর যে নারীদের জনসমক্ষে মুখ ঢাকা থাকবে না, আমরা তাদের পরিবারকে বিষয়টি জানাব এবং ডিক্রি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব। আফগানিস্তানে কাবুলের বাইরে বেশির ভাগ নারীকেই বোরকা পরতে দেখা যায়। তালেবানের আগের আমলেও নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক ছিল। গত বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকারপ্রধান মিশেল ব্যাশেলেট আফগানিস্তানে নারীদের ওপর ‘প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিগত নিপীড়ন’ চালানোয় তালেবান সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সেখানকার পরিস্থিতি সংকটজনক।
গত বছর ক্ষমতায় ফেরার পর তালেবান তাদের নতুন শাসন ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত চলা আগের শাসনামলের তুলনায় কম কঠোর হবে বলে প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে তারা নারীদের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েই যাচ্ছে। বিধিনিষেধের কারণে দেশটির লাখ লাখ মেয়ে মাধ্যমিক স্কুলে যেতে পারছে না, অসংখ্য নারী তাদের সরকারি চাকরিতে ফিরতে পারছেন না। নারীদের একা ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে; রাজধানীর পার্কগুলোতে দিনের বেলায় তখনই নারীরা যেতে পারবেন, যখন পুরুষদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি থাকবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়