নাটোরে বন্ধুকে খুন : ১৪ মামলার আসামি রাসেল ঢাকায় গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

সাক্কুর পরাজয় পাঁচ কারণে

পরের সংবাদ

সৈয়দপুরে মহাসড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : সৈয়দপুরে জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আরসিসি ঢালাইয়ে সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো নিয়মই আমলে নিচ্ছে না। মানছে না সিডিউলের নির্দেশনা। সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে ওই সড়কটি। নীলফামারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন এ সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
কাজটি বাস্তবায়ন করছে মেসার্স ইসমাইল হোসেন কনস্ট্রাকশন। পিচঢালা সড়কের পাশে যেখানে বাজার বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে মহাসড়কের এমন অংশে আরসিসি ঢালাই দিয়ে টেকসই সড়ক নির্মাণ করা হয়। পিচঢালা সড়কে পানি জমলে বা পানি ফেললে সড়কের আয়ুষ্কাল কমে যায়। এজন্য সরকার ওইসব এলাকায় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোর অংশে আরসিসি ঢালাই দিয়ে সড়ক তৈরি করতে শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে সৈয়দপুর বাইপাস সড়কের কেন্দ্রীয় টার্মিনাল অংশে আরসিসি ঢালাই দিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ৬০০ মিটার সড়ক নির্মাণে সরকারের ব্যয় হচ্ছে চার কোটি টাকার কাছাকাছি।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, রডের খাঁচা নির্মাণে সিডিউলে উল্লেখ করা রডের চেয়ে অর্ধেক রড ব্যবহার করা হচ্ছে। খাঁচা নির্মাণে একটি রড থেকে আর একটি রডের দূরত্ব হবে ৬ ইঞ্চি। কিন্তু এক্ষেত্রে ১০ ইঞ্চি দূরত্বে রড বেঁধে খাঁচা তৈরি করা হচ্ছে। খাঁচা নির্মাণে চেয়ার স্টাইল মানার বিধান থাকলেও তা করা হচ্ছে না।
খাঁচার রড বাঁধতে জিআই তারের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের তার। সড়কে ঢালাইয়ের পুরুত্ব ১২ ইঞ্চির জায়গায় ৮ থেকে ৯ ইঞ্চি করতে দেখা গেছে। সিমেন্ট, পাথর ও বালু মিশ্রণে নিয়মের কোনো বালাই নেই। দুই দশমিক পাঁচ মিলিমিটার আয়তনের বালু ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকলেও লোকাল বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। নেটিং ছাড়াই দেয়া হচ্ছে বালু। পানি দিয়ে পাথরও পরিষ্কার করা হচ্ছে না। ওসিসি সিমেন্টের পরিবর্তে সস্তা দামের পিসিসি সিমেন্ট করা হচ্ছে ব্যবহার ঢালাইয়ে। বালু, পাথর ও সিমেন্টের অনুপাতও মানা হচ্ছে না। নিয়মমতে এক বস্তা সিমেন্টের সঙ্গে দেড় সিএফটি বালু ও তিন সিএফটি পাথর মিশিয়ে সড়ক ঢালাই করতে হবে। এক্ষেত্রে এক বস্তা সিমেন্টের সঙ্গে তিন সিএফটি বালু ও পাঁচ সিএফটি পাথর মেশানো হচ্ছে।
এ অনিয়মের বিষয়ে মন্তব্য জানতে বিভিন্ন বিভাগের একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যেহেতু ওই সড়কটি দিয়ে উত্তরা ইপিজেড এবং বাংলাবান্ধা থেকে ৪০ টন মালবোঝাই ট্রাক দিন রাত চলাচল করে, সে কারণে সড়কটি নির্মাণে যে ধরনের অনিয়ম করা হচ্ছে, এতে এর আয়ু এক-চতুর্থাংশে চলে আসবে।
সরকারের অর্থ চলে যাবে জলে। তাদের মতে, রডের খাঁচা নির্মাণ করতে হলে ৬ ইঞ্চি করে ফাঁকা রেখে রড বাঁধতে হবে। রড বাঁধার কাজে ব্যবহার করতে হবে জিআই তার। চেয়ার স্টাইলে খাঁচা তৈরি করতে হবে। খাঁচা বানাতে ১২ মি.মি. থেকে ২০ মি.লি. মিটারের রড ব্যবহার করা প্রয়োজন। আর ঢালাইয়ের মিশ্রণে এক বস্তা সিমেন্টের সঙ্গে দেড় সিএফটি মোটা বালু ও তিন সিএফটি পাথর দিতে হবে। সিমেন্ট ব্যবহার করতে হবে ওসিসি। তাহলে সড়কটি হবে দীর্ঘস্থায়ী।
অনিয়মের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হয় বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসমাইল হোসেন কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারি নিয়ম মেনেই কাজ করা হচ্ছে।
নীলফামারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুরুল করিমের মুঠোফোনে বারবার ফোন করা হলেও মোবাইল রিসিভ না করায় তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়