নাটোরে বন্ধুকে খুন : ১৪ মামলার আসামি রাসেল ঢাকায় গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

সাক্কুর পরাজয় পাঁচ কারণে

পরের সংবাদ

এসএসএফের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী > পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন নাশকতার চেষ্টা চলছে > গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাশকতা হতে পারে। এমন তথ্য আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদিন পদ্মা সেতু যেন উদ্বোধন করতে না পারি, সেজন্য একটা নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা চলছে। আমরা তথ্য পেয়েছি, যারা পদ্মা সেতু নির্মাণের বিরোধিতা করেছিল, তারাই এ ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানোর চেষ্টা করছে। তারা কী করবে, তা জানি না। তবে এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নজর রাখতে হবে।
গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে

এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মো. মজিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যখনই আমরা এগিয়ে যাই, তখনই কোনো কোনো মহল নানা ধরনের অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র করে থাকে। রেলে আগুন, লঞ্চে আগুন, ফেরিতে আগুন। এমনকি সীতাকুণ্ডে একটা জায়গায় আগুন ধরেছে। দেখা গেল, সেটা বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল। রেলের আগুনের ভিডিওতে দেখলাম রেলের চাকার কাছে নিচে আগুন জ্বলছে। সেটা কীভাবে ছড়িয়ে পড়ল ট্রেনে। এগুলো কীভাবে হয়? কাজেই প্রত্যেকটা দুর্ঘটনা রহস্যজনক। এজন্যই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, চলাচলের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল দৃশ্যমান, এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল- এসব স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।
এসএসএফের সদস্যদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতায় আসিনি। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতায় এসেছি। কাজেই এসএসএফ সদস্যদের অনুরোধ করব, অতিরিক্ত নিরাপত্তার নামে যেন মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন না হই। মানুষ যেন আমার কাছে আসতে পারে। তারা যেন আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, কষ্ট না পায়। সেটাই আমি চাই।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কাজে যারা নিয়োজিত, তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নিজে তো গুলি ও বোমার মুখে পড়েছি। হয়তো আল্লাহ আমাকে দিয়ে কোনো কাজ করাবেন, এজন্য বাঁচিয়ে রেখেছেন। বাংলাদেশ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
এসএসএফের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যারা বিদেশি অতিথি এসেছেন, তারা প্রত্যেকে এসএসএফের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এটা ধরে রাখতে হবে। আমার পরিবারের মতো যারা আমার সঙ্গে কাজ করেন, তাদের জন্য দোয়া করি। বিশেষ করে এসএসএফের জন্য দোয়া করি। আমি জানি, তারা জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন।
করোনা ভাইরাস মহামারির সময় নিজের বন্দিত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের সময় অনেকটা কারাগারে বন্দির মতোই রাখা হয়েছিল আমাকে। আগে তো ছোট জেলে ছিলাম। ১১ মাস লম্বা সময় জেলে ছিলাম। তিনজন কারারক্ষী ছিলেন। ছোট একটা হটকেজে খাবার আসত, তবে এখন বড় বড় মোটা মোটা দুটি হটকেজ আর অনেক খাবার। এটুকু তফাৎ। আমি ধন্যবাদ জানাই এসএসএফকে। এটুকু নিরাপত্তা দিয়ে রাখা হয়েছিল বলেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হইনি। হয়তো আক্রান্ত হলে কাজ করতে পারতাম না। এজন্য এসএসএফসহ সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। কারণ এই নিরাপত্তাটুকু দেয়া হয়েছিল বলেই সুস্থভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
সরকারি অফিসের ছাদে বাগান করুন : এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় গণভবন চত্বরে ছাতিম, সফেদা ও হরিতকির চারা রোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মাধ্যমে কৃষক লীগের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় সবাইকে অন্তত একটি করে ফলদ, বনজ ও ভেষজ গাছ লাগাতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ, সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটুসহ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষক লীগসহ আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনকেও বৃক্ষরোপণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাসাবাড়িসহ সরকারি অফিসগুলোতেও ছাদবাগান করতে হবে। যারা শহরে থাকেন তারা ছোট ব্যালকনিতে একটা হলেও গাছ লাগাতে পারেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের কথা চিন্তা করে, মানুষের কথা চিন্তা করে। পরিবেশের কথা ভেবে পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ বিশ্বে একমাত্র দেশ যারা নিজস্ব ফান্ডে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড করেছে এবং কাজ করছে।
জাতির পিতা নিজে, দলীয় ও সরকারি উদ্যোগে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের ঝাউগাছ স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতার উদ্যোগে রোপণ করা হয়। আমি ১৯৮৩ সালে কৃষক লীগের তৎকালীন নেতাদের বৃক্ষরোপণের জন্য অনুপ্রাণিত করি। ১৯৮৫ সাল থেকে আজ অবধি আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র এই তিন মাস সারাদেশে ফলজ, বনজ ও ভেষজ এই তিন প্রজাতির গাছ লাগানোর কর্মসূচি সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করে আসছি। কৃষক লীগসহ আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠন সারাদেশে এই কর্মসূচি পালন করে। সুন্দরবন রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ায় ১৯৯৮ সালে তা বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পায়।
সপ্তাহব্যাপী জনশুমারি ও গৃহগণনার উদ্বোধন : সকাল ১০টায় সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব মো. আশরাফ সিদ্দিকী বিটু জানান, প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকাল ১০টায় গণভবনে এক অনুষ্ঠানে বহুল প্রতীক্ষিত জনশুমারির উদ্বোধন করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়