নাটোরে বন্ধুকে খুন : ১৪ মামলার আসামি রাসেল ঢাকায় গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

সাক্কুর পরাজয় পাঁচ কারণে

পরের সংবাদ

অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী পালন : জাতির শিক্ষক হয়ে বিরাজ করছেন সরদার ফজলুল করিম

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে নিজেকে উৎসর্গ করার প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলেছিলেন সরদার ফজলুল করিম। সেটা নিজের জীবন দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি কাঠামোগত শিক্ষক হতে পারেননি, কিন্তু‘ তিনি জাতির শিক্ষক হয়ে বিরাজ করছেন। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সরদার ফজলুল করিম স্মৃতি পরিষদ তার অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভায় তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা বলেন, তার কাজকে আমরা জীবনে চলার পথ হিসেবে দেখব। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, যে অসাধারণ প্রজ্ঞায় তিনি আমাদের সংগ্রাম, সাধনা ও জীবনকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছেন। তার দেখানো পথ আমার অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি যা বলতেন তা স্পষ্ট, নির্ভিকভাবে বলতেন। সংস্কৃতিতে রাজনৈতিক অভাব দূর করতে তিনি যে ভূমিকা রেখেছেন তা আমাদের চলার পথের পাথেয় হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, তিনি একজন কমিউনিস্ট ছিলেন বলেই একজন সার্থক জ্ঞানতাপস ছিলেন।
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আমাদের সময়ের অন্যতম বাতিঘর ছিলেন সরদার ফজলুল করিম। আমাদের সামনে সহজ জীবন আর উন্নত চিন্তার মানুষ হওয়ার উদাহরণ ছিলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, সরদার ফজলুল করিম অন্যম বাতিঘর ছিলেন। তার চিন্তাচেতনা নিঃশেষ হওয়ার নয়। তার কাজগুলো সংরক্ষণ ও ছড়িয়ে দেয়ায় ফাউন্ডেশনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা তার পথ ধরে আলোর পথে যাত্রা করতে চাই, হাঁটতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাবেরী গায়েন বলেন, তিনি এই জনপদের দার্শনিক। তিনি জ্ঞানের সঙ্গে মায়া জড়িয়ে দিতেন তার বক্তব্যে। আমি কোনো দার্শনিক চোখে দেখিনি। আমার দেখা একমাত্র দার্শনিক সরদার ফজলুল করিম। স্যার এর মৃত্যু নেই। কারণ তিনি জীবনের কথা বলে গেছেন।
নায়েম-এর উপপরিচালক স্বপন নাথ বলেন, তিনি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন জীবনকে। তার মতো নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল মানুষ খুব কম দেখেছি। তিনি কমিউনিস্ট, তবে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন মানুষকে। ১১ বছর কারাবাসে ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে তিনি নেপথ্যে চলে গিয়েছিলেন রাজনীতির জন্য। তিনি জাতির এবং আমাদের শিক্ষক। নাট্য ব্যক্তিত্ব ড. কাজী তামান্না বলেন, তিনি ছিলেন আমাদের কালের ত্রিকালদর্শী। জীবনের অভিজ্ঞতা তাকে সাম্যবাদী মানুষে পরিণত করেছিল। এখন চেষ্টা করলেও তার মতো একজন মানুষ আমরা পাব না।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান বলেন, তিনি আসলেই সরদার। ব্যক্তিত্ব ও আত্মবিশ্বাসের সরদার। তার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আত্মার। তার রচনাবলি রেখে গেছেন। তার লেখা যত পড়া হবে, বেঁচে থাকার আশা বাড়বে। মানুষের মুক্তি হবে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ডা. শাকিল আখতার, প্রথমা প্রকাশনির পক্ষে আনিসুর রহমান প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন সরদার ফজলুল করিম স্মৃতি পরিষদের শাকিল আকবর। অনুষ্ঠানে তার লেখা নিয়ে আলোচনা করেন তরুণ শিক্ষার্থীরাও। এরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্থিব মাহমুদ, ঋতু চক্রবর্তী ও তাহমিদ উল ইসলাম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সালিমা জান্নাত লিরা। এছাড়া প্রথমা প্রকাশনের আনিসুর রহমান। শুরুতে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের মাধ্যমে এই মনীষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এরপরে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবৃত্তি সংসদের শিল্পী নাহিয়ান নাহী আবৃত্তি করেন সরদার ফজলুল করিমকে নিয়ে লেখা শামসুর রাহমানের লেখা কবিতা – অসামান্য সরদার ফজলুল করিম। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা থেকে দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তি শিল্পীরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়