নাটোরে বন্ধুকে খুন : ১৪ মামলার আসামি রাসেল ঢাকায় গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

সাক্কুর পরাজয় পাঁচ কারণে

পরের সংবাদ

অর্থমন্ত্রী : ঢাকায় ফ্ল্যাট-জমি থাকলেই কালো টাকার মালিক

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ঢাকা শহরে যাদের জমি বা ফ্ল্যাট আছে, তারা সবাই এক অর্থে ‘কালোটাকার মালিক’। আর এ পরিস্থিতির জন্য সরকার ও বিদ্যমান ‘সিস্টেম’ বা ব্যবস্থাই দায়ী। গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়ালি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে অনুমোদনকৃত প্রস্তাবগুলোর তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জিল্লুর রহমান চৌধুরী। অর্থমন্ত্রী বলেন, যে দামে বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন হয়, বাস্তবে তার চেয়ে দাম অনেক বেশি থাকে। কোনো জমির দাম বাস্তবে ১০ কোটি টাকা। কিন্তু দেখা গেছে, নিবন্ধন হয়েছে মাত্র এক কোটি টাকায়। এই যে বিপুল পরিমাণ টাকা গোপন করা হলো, তাতে কালো টাকার উৎস তৈরি হয়, যাকে আমরা বলি অপ্রদর্শিত আয়। এটা হয়েছে সিস্টেমের কারণে। আমরা যদি অটোমেশন করতে পারতাম, তাহলে এ খাতে কালো টাকার উৎস বন্ধ করা যেত।
সিস্টেমের অভাবে সরকার যথাযথভাবে ফি ও কর পায় না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের এ অবস্থা থেকে বের হতে হবে। বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করতে হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যখন বিদেশে পাচার হওয়া কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি, তখন বলা হচ্ছে, সরকার নাকি কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে প্রশ্রয় দিচ্ছে। আমি বারবার বলি, এটা অপ্রদর্শিত টাকা, এখানে লাজলজ্জার কিছু নেই; সরকার এ জন্য দায়ী। ঢাকা শহরে জমির দাম বাড়ানো যায় কিনা, সেটা নিয়ে চিন্তা করলেও শেষ পর্যন্ত দাম বাড়াতে পারিনি।
পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপের বিষয়ে চাপে আছেন কিনা, তা জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, আমি কোনো রকম চাপে নেই। আমি যা বলেছি, তা করব। আমি অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে আসি না। আমি যখন রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা দিয়েছি, তখন অনেক সমালোচনা ছিল; বলা হয়েছিল, টাকা আসবে না, কিছু হবে না, টাকা পাচার হবে। কিন্তু এসেছে।
শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, শেয়ারবাজার নিয়ে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। বাজেটে যা ঘোষণা করা হলো, তা বাস্তবায়ন এখনো শুরু হয়নি। আমি মনে করি, আমাদের অর্থনীতি অনেক ভালোভাবে চলছে। প্রতিটি সূচকে আমরা বিশ্বের মধ্যে অনেক ভালো অবস্থানে আছি। পুঁজিবাজার ওঠানামা স্বাভাবিক নিয়ম।
পোশাক খাতে বিদেশি পরামর্শকরা উচ্চ বেতন পাচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বের হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, দেশের তৈরি পোশাক খাতে একসময় বিদেশি কনসালটেন্টের প্রয়োজন হতো। কিন্তু এখন আমাদের দেশে অনেক বিশেষজ্ঞ তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি, বিদেশি কনসালটেন্ট আর দরকার নেই। কিন্তু যারা ফ্যাক্টরি চালায়, তারা আমাকে বলেছে, বিদেশি এক্সপার্ট এখনো লাগবে। তা না হলে তাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে।
ক্রয় কমিটিতে ১৩ প্রস্তাব অনুমোদন : সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৯তম বৈঠকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১টি এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ১৭টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ৪টি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৩টি, স্থানীয় সরকার বিভাগের ২টি, জননিরাপত্তা বিভাগের ২টি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ২টি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ১টি, সেতু বিভাগের ১টি, বিদ্যুৎ বিভাগের ১টি এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রস্তাবনা ছিল।
সরকারি ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ১৩টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ১৯৪ কোটি ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮৩০ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ৬৭৩ কোটি ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৬৮২ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক ও বৈদেশিক অর্থায়ন ১ হাজার ৫২১ কোটি ৩০ লাখ ৭৬ হাজার ১৪৮ টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়